Advertisement
Advertisement
Bibhum

আদালতের রায়ে বাতিল চাকরি, শিক্ষক সংকটে ভর্তি বন্ধ বীরভূমের স্কুলে

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২০০০ জন। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পাঠদানের জন্য কোনও শিক্ষক নেই মুরারইয়ের এই স্কুলে।

Birbhum school stops admission of Class XI after many teachers lost job by Calcutta HC
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 6, 2024 5:26 pm
  • Updated:May 6, 2024 5:34 pm

দেব গোস্বামী, বোলপুর: নিয়োগ দুর্নীতিতে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল হয়েছে। চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। আর তার জেরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলপড়ুয়ারা। এবার শিক্ষক সংকটের জেরে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বন্ধ করে দিল বীরভূমের জাজিগ্রাম সর্বদোয় আশ্রম হাইস্কুল। প্যানেল বাতিলের পর সেখানে শিক্ষক সংখ্যা মাত্র ৭। এই পরিস্থিতিতে একাদশ শ্রেণিতে নতুন করে ছাত্রীদের ভর্তি নিলে পড়াশোনা ঠিকমতো করানো সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষকের অভাবে জাজিগ্রাম সর্বোদয় আশ্রম হাইস্কুলে বন্ধ হল একাদশ শ্রেণির ভর্তি।

বীরভূমের (Birbhum) মুরারইয়ের জাজিগ্রাম সর্বোদয় আশ্রম হাইস্কুল। ছাত্রীদের পড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। একাধিক শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) রায়ে। শিক্ষকের অভাবে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২০০০ জন। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ানোর জন্য তিনজন শিক্ষক ছিলেন। তবে তাঁরা বছর দুয়েক আগে বিভিন্ন জায়গায় বদলি হয়ে গিয়েছেন। তার পর থেকেই একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পাঠদানের জন্য কোনও শিক্ষক (Teachers) নেই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে পিছল চাকরি বাতিল মামলা, উৎকণ্ঠার প্রহর গুনছেন প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারা]

পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির পর্যন্ত পড়ানোর জন্য এতদিন ছিলেন ১০ জন শিক্ষক। এই দশজনের মধ্যে থেকে দু’জন একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস নিতেন। কিন্তু এই ১০ জন শিক্ষকের মধ্যে তিনজন শিক্ষকের নাম ছিল ২০১৬ এর প্যানেলে (Panel)। আর স্বাভাবিকভাবেই এই প্যানেল বাতিল হওয়ার কারণে এখন স্কুলে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ৭ জন। যার মধ্যে একজন রয়েছেন খেলার শিক্ষক ও একজন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক। এই অবস্থায় ওই স্কুলের একাদশ শ্রেণিতে যারা পড়তে পারত, সেই শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে বাড়ি থেকে ৮-১০ কিলোমিটার দুরে পড়তে যেতে হবে। এমনকী, কাউকে কাউকে উচ্চ মাধ্যমিক (Higher Secondary) পড়তে পাশের জেলা মুর্শিদাবাদেও যেতে হবে। স্কুলের এই সিদ্ধান্তের জেরে চরম দুশ্চিন্তায় অবিভাবকরা। ফলে বহু ছাত্রীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আশুতোষ কলেজের পড়ুয়ার বাড়িতে অস্ত্রভাণ্ডার! ভোট আবহে আচমকা পুলিশি হানায় পর্দাফাঁস]

একদিকে ঝাড়খণ্ড, অন্য দিকে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার গা ঘেঁষে থাকা জাজিগ্রাম সর্বোদয় আশ্রম হাইস্কুল। পার্শ্ববর্তী কামারপুর, কুলোর, পঞ্চহর, বদনপাড়া, বসন্তপুর-সহ ৮টি গ্রাম থেকে হেঁটে কিংবা সাইকেল চালিয়ে তারা স্কুলে আসে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপেন্দু রেজা বলেন, “আমরা বাধ্য হয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বন্ধ করেছি। শিক্ষক না থাকলে, ক্লাস হবে কীভাবে?” স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি হেমেন্দু শেখর দাসের কথায়, ”বহু চেষ্টা করেও কোনও ফল না পেয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।” যদিও শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, “বহু স্কুলেই একাদশ ও দ্বাদশে শিক্ষক সংকট রয়েছে। আমরা তাঁদের বলছি, যেখানে যে বিষয়ের পড়াশোনা চলছে, সেখানে স্কুল চালাতে অবসরপ্রাপ্ত ও পার্টটাইম শিক্ষক এবং ভিজিটিং ফ্যাকাল্টিদের নিযুক্ত করে পড়াশোনা চালু রাখতে হবে।” তবে অভিভাবকদের একাংশের মত, “শুধু আমাদের ছেলে-মেয়েরা নয়,এলাকার বহু মেয়ের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারে। অনেক গরিব বাড়ির মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে। তাদের পক্ষে দূরের স্কুলে যাওয়া সম্ভব নয়।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ