সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মরা মুরগির মাংস কাণ্ডে অবশেষে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত কওসর আলি ঢালি। বুধবার গভীর রাতে হাসনাবাদ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়েই অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। পচা মাংসকাণ্ডে যখন উত্তাল গোটা রাজ্য তখনই গা-ঢাকা দেয় কওসর। হাসনাবাদ থেকে বাংলাদেশের পালিয়ে যাওয়ার ছক কষেছিল সে। তবে শেষপর্যন্ত সেই অঙ্ক সফল হয়নি। তার আগেই পুলিশের জালে ধরা পড়ল ঢালি চিকেন সেন্টারের মালিক। তাকে রাতেই হাসনাবাদ থেকে রিমান্ডে এয়ারপোর্ট থানায় নিয়ে আসা হয়। এদিন ধৃতকে বারাকপুর আদালতে তোলা হবে।
[কেরলের আতঙ্ক বাংলায়, বারুইপুরের লিচুবাগানে খোঁজ নিপা ভাইরাসের]
ইতিমধ্যেই ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। জেরায় কওসর স্বীকার করেছে, এক বছর ধরে সে পচা মাংসের কারবার চালাচ্ছিল রমরমিয়ে। কোনওরকম লাইসেন্স ছিল না। উত্তর থেকে দক্ষিণ, শহরের সব দিকেই এই মাংস সাপ্লাই দিত তার লোকজন। ইতিউতি ছড়িয়েছিল ঢালি চিকেন সেন্টার। সেখানে মাংস আসত নিউটাউনের ওই চিকেন ফার্ম থেকে। যেখানে ফ্রিজার ভরতি বহুদিনের মরা মুরগির মাংস উদ্ধার করেছে পুলিশ। একে একে দমদম এলাকার বহু জায়গা থেকে উদ্ধার হয়েছে পচা মাংস। হোটেল, রেস্তরাঁ থেকে শুরু করে পথচলিত দোকান কোথাও বাদ না দিয়েই অভিযানে নামে কলকাতা পুরসভা। পচা মাংসের অনুসন্ধানের খবরে ভোজনপ্রিয় বাঙালি মাছেতেই ভরসা করেছিল। একটু হলেও এড়িয়ে চলছিল রেস্তারাঁর সুস্বাদু মাংসের ডিশ। জেলার বিভিন্ন শহরের হোটলেও শুরু হয় তল্লাশি। পাল্লা দিয়ে উদ্ধার হয় পচা মাংস। পুরসভার লাগাতার অভিযানে পচা মাংস ও তার কারবারিরা নাগালে এলেও ধরাছোঁয়ার বাইরেই ছিল কওসর। তবে পুলিশও ছিল তক্কে তক্কে। মাস খানেক কেটে যাওয়ায় দেশ ছেড়ে পালানো একপ্রকার নিশ্চিত করে ফেলে কওসর আলি ঢালি। তবে শেষরক্ষা হল না। এদিন আদালতে তোলার পর ধৃতকে হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানাবে পুলিশ।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবারই পচা মাছের হদিশ পেল বজবজে। মাস খানেক আগে এই বজবজের ভাগাড় থেকেই মিলেছিল পচা মাংস সরবরাহের সূত্র। তারপর কী কী হয়েছে তা রাজ্যবাসীর ভালরকম স্মরণে আছে। এদিন বজবজের এক স্থায়ী বাজারে পচা মাংসের অনুসন্ধানে নেমেছিলেন পুর কর্তারা। অভিযানের সময়ই পচা মাছের হদিশ মেলে এক ব্যবসায়ীর কাছে। ব্যবসায়ীর নাম আকবর। তিনি আশপাশের বাজারেও মাছ সরবরাহ করতেন। তাঁর দোকানে ফ্রিজার দেখেই তা খুলতে বলেন অনুসন্ধানে আসা পুর কর্তারা। ফ্রিজার খুলতেই দেখা যায় থরে থরে মাছ সাজানো রয়েছে। একটু নাড়াচাড়া করতেই নিচের দিক থেকে উপরে উঠে আসে পচা মাছের সারি। ভাল মাছের সঙ্গে এই পচা মাছ মিলিয়ে মিশিয়ে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করতেন আকবর। ক্রেতাদেরও এভাবেই মাছ বিক্রি করা হত। দোকানটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।