স্টাফ রিপোর্টার: মৃত রোগীর পরিজনের হাতে জুনিয়র ডাক্তারদের নিগ্রহ এবং তার প্রতিবাদের জেরে সারা রাজ্যে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে যখন ‘শাটডাউন’ চলছে, তখনই কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে এক শিশুর মৃত্যু ঘিরে দানা বাঁধে বিতর্ক।
পক্ষে-বিপক্ষে হরেক মতের সমাবেশ। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনার এয়ারপোর্ট থানার গঙ্গানগরের বাসিন্দা অভিজিৎ মল্লিক ও তাঁর স্ত্রী এদিন যে মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার সাক্ষী রইলেন, তাতে হাসপাতালে ‘শাটডাউন’-এর অন্ধকার দিকটা বেরিয়ে এসেছে বলে অনেকের অভিমত। ঠিক কী হয়েছিল?
অভিজিৎবাবুর স্ত্রী ঝুমাদেবী গত মঙ্গলবার সাগর দত্ত হাসপাতালে একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন। সিজারিয়ান ডেলিভারি। পরিবার সূত্রের খবর, জন্ম ইস্তক বাচ্চাটি শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। বুধবার অবস্থার অবনতি হয়। অভিজিৎবাবুর বক্তব্য, সাগর দত্তের ডাক্তারবাবুরা জানান, বাচ্চাকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হবে, কিন্তু এখানে সে ব্যবস্থা নেই।
[আরও পড়ুন: আরও তীব্র চিকিৎসকদের আন্দোলন, পুলিশকেও ফেরাল মেডিক্যাল]
তাই ডাক্তারের পরামর্শ মতো বুধবার ছেলেকে নিয়ে কলকাতা রওনা দিয়েছিলেন অভিজিৎবাবু। তাঁর অভিযোগ, বি সি রায় শিশু হাসপাতাল থেকে শুরু করে এনআরএস, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর, কোথাও তাঁর সন্তানের ঠাঁই হয়নি। কর্মবিরতির অজুহাত দেখিয়ে সব জায়গা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। শেষমেশ এদিন সকালে বাচ্চাকে ফের সাগর দত্তে নিয়ে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ন’টা নাগাদ শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সাদা কাপড়ে মোড়া সন্তানের নিথর দেহ কোলে নিয়ে হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন অভিজিৎবাবু। বিড়বিড় করে বলছিলেন, “ডাক্তারবাবুদের এ কী আন্দোলন! যার জন্য আমার বাচ্চাটাই চলে গেল! কর্মবিরতিই ওকে মেরে ফেলল।” সন্তানহারা পিতার আরও অভিযোগ, হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে তিনি প্রতিকারের আশায় স্বাস্থ্যভবনে ফোন করেন। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি।
[আরও পড়ুন: এনআরএস হামলার নেপথ্যে কারা? ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.