সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফরাজুল কাণ্ডে বিজেপিকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজস্থানে যাঁকে পুড়িয়ে মারা হল, তাঁর ধর্মীয় পরিচয় আমরা জানতে চাই না। আমরা জানি, তিনি মানুষ। এসব ঘটনা কেন ঘটবে?’ মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘বাংলায় ভিনরাজ্যে বহু মানুষ করেন, তাঁদের আমি আপনজন বলে মনে করি।’ রাজস্থানের ঘটনা নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করায় নাম না করে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকেও সতর্ক করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আফরাজুলের পরিবারকে চাকরির আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর, মালদায় যাচ্ছে সংসদীয় দল]
হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করছেন মুসলিম যুবকরা। বিয়ের পর তাঁদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এরই নাম লাভ জেহাদ। সম্প্রতি বিজেপিশাসিত রাজস্থানে লাভ জেহাদের অভিযোগে তুলে এক বাঙালি প্রৌঢ়কে ধারালো অস্ত্র গিয়ে কুপিয়েছে এক যুবক। তারপর ওই প্রৌঢ়কে জ্যান্ত পুড়িয়ে খুন করা হয়। এমনকী, নৃশংস সেই ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে জড়িয়েও দিয়েছে অভিযুক্ত। নিহত ওই প্রৌঢ়ের নাম মহম্মদ আফরাজুল। তিনি মালদা জেলার বাসিন্দা। রাজস্থানে ঠিকাশ্রমিকের কাজ করতেন। নিহতের পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার মালদহে গিয়ে মহম্মদ আফরাজুলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষদস্তিদাররা। বিষয়টি সংসদেও তোলার আশ্বাস দিয়েছেন শাসকদলের দুই সাংসদ।
[রাজস্থানের ঘটনা এখানে হলে বিজেপি নেতাকে পুড়িয়ে মারতাম: অনুব্রত]
সোমবার পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায় এক জনসভায় এই ঘটনা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা ধর্মের ভিত্তি ভাগাভাগি করি না। রাজস্থানে যাঁকে পুড়িয়ে মারা হল, তাঁর ধর্মীয় পরিচয় আমরা জানতে চাই না। আমরা জানি, তিনি মানুষ। এইসব ঘটনা কেন ঘটবে?’ কর্মসূত্রে এ রাজ্যে থাকা ভিনরাজ্য মানুষদের নিরাপত্তা দিতে যে সরকার দায়বদ্ধ, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সাফ কথা, ‘এ রাজ্যেও ভিনরাজ্যের বহু মানুষ কাজ করেন, তাঁদেরকে আপনজন বলে মনে করি।’
[পুরনো আক্রোশের জের, বউমার কান কেটে নিল শাশুড়ি!]
এদিনের জনসভায় রাজস্থানের ঘটনা নিয়ে বিজেপি যেমন তুলোধনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তেমনি নিজের দলের নেতাকেও রেয়াত করেননি। রবিবারই আফরাজুল কাণ্ডের বিরুদ্ধে সরব হতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেছিলেন, ‘রাজস্থানে ঘটনা যদি আমার জেলায় হত, তাহলে যত বড় বিজেপি নেতাই হোন না কেন, তাঁকে পুড়িয়ে মারতাম।’ মঙ্গলবার কাঁকসার জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি অনুব্রতের নাম নেননি ঠিকই। তবে বলেছেন, ‘ওঁদের কথা জবাবে বাজে কথা বলবেন না। বিজেপি যে ভাষা কথা বলে, তৃণমূল সেই ভাষায় কথা বলে না। আমরা আমাদের ভাষাতেই কথা বলব।’
[ট্রেনের প্যান্টোগ্রাফে আগুন, হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত]
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার থেকে মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফর শুরু হল। প্রথম দিনে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায় জনসভা করলেন তিনি। নতুন জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর এটাই প্রথম জনসভা। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতেও যাবেন মুখ্যমন্ত্রী।
[যৌনপল্লির কচিকাঁচাদের সঙ্গে প্রথম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন এই দম্পতির]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.