সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: পুজোর আর হাতে গোনা মাত্র ক’দিন। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে আপাতত চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে। এরই মাঝে শুক্রবার পুজো কমিটিকেগুলিকে সুখবর দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়িয়ে দিলেন সরকারি অনুদানের পরিমাণ। সরকারের পক্ষ থেকে এবার দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ১০ হাজার টাকা নয়, বরং দেওয়া হবে ২৫ হাজার টাকা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে প্রশাসনিক এবং সমন্বয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন সরকারি অনুদানের পরিমাণ বাড়ানোর কথা। বিশেষ সুবিধে পাবে মহিলা পরিচালিত পুজো কমিটিগুলি। কারণ, ২৫ হাজারের পাশাপাশি পুলিশের তরফেও আরও ৫ হাজার টাকা দেবে অনুদান পাবে তারা৷ উপরন্তু ইনকাম ট্যাক্সও দিতে হবে না।
[আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে ফের নিগৃহীত চিকিৎসক, কাটোয়ায় গ্রেপ্তার ২]
সরকারি অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে শুধু পুজো কমিটিগুলিকেই সুখবর দেননি মুখ্যমন্ত্রী। বরং, সাধারণ মানুষদের জন্য রয়েছে আরও এক সুখবর। কারণ এবার আর ভিআইপি কার্ডের জন্য ছোটাছুটি করতে হবে না। হা পিত্যেশ করতে হবে না পাস জোগাড়ের জন্য। কারণ এবারের দুর্গাপুজো থেকে উঠে যাচ্ছে ভিআইপি লাইনের আলাদা ব্যবস্থা। কিন্তু ভিআইপি লাইন তুলে নেওয়া সাধারণ মানুষের জন্য কতটা ‘সুখবর’ হবে, তা বলা দায়। কারণ অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভীড়ের মধ্যে ঠাকুরদর্শন করা পছন্দ করেন না। এপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ভিআইপি আবার কি? একদিকে বড় লাইন৷ অন্যদিকে ভিআইপি লাইন! ওসব চলবে না৷ তুলে দিন৷ ভিআইপি না, আমরা সবাই এলআইপি (Less important person)৷”
এদিনের মিটিংয়েই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্যের অর্থনৈতিক হাল মোটেই ভাল নয়। কিন্তু তার মধ্যেই দুর্গাপুজো আমাদের ঐতিহ্য। তা রক্ষা করতেই সরকারের পক্ষ থেকে এই অনুদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।” অন্য পুজো কমিটিগুলিকে ভিআইপি প্রথা বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের তিন মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ববি, অরূপ, সুজিত.. কোনও ভিআইপি পাস নয়, কারণ চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম।” এছাড়াও রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন নিগম এবং সিইএসসির তরফে পুজো কমিটিগুলিকে বিদ্যুতের মাশুলে ২৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন:‘বেড বাড়ালেও ডাক্তারের অভাব থাকছেই’, চিকিৎসক সমস্যায় স্বীকারোক্তি মুখ্যমন্ত্রীর]
প্রসঙ্গত, পুজোর কার্নিভ্যাল নিয়ে প্রত্যোক বছরই কলকাতাবাসীর আলাদা একটা উৎসাহ থাকে। রেড রোডে কার্নিভ্যাল অনুষ্ঠিত হবে ১১ অক্টোবর৷ তার আগে বিসর্জনের তারিখও উল্লেখ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী- ৮,৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর৷ কার্নিভ্যাল হবে ৭৫টি পুজো নিয়ে৷ এপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “৪ ঘণ্টা ধরে কার্নিভ্যাল চলে। বাংলার জন্য গর্বের বিষয়৷ কারণ, প্রচুর বিদেশী দর্শকও ভিড় জমান কার্নিভ্যাল দেখতে।” পাশাপাশি বিজেপির উদ্দেশে সুর চড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলার পুজোকে বদনাম করতে দেব না৷ কোনওমতেই পুজো নিয়ে রাজনীতি করতে দেব না।”