Advertisement
Advertisement
মৃতদেহে ঝাড়ফুঁক

হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে মৃতদেহে ঝাড়ফুঁক, পরিবারের কুসংস্কারের বলি একরত্তি শিশু

ওঝাকে খুঁজছেন আলিপুরদুয়ার বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সংস্থার সদস্যরা।

Controversy arises in Alipurduar for use unscientific process to save a child

মৃত শিশুর বাড়িতে ভিড় স্থানীয়দের

Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:September 7, 2019 6:55 pm
  • Updated:September 7, 2019 7:12 pm

রাজকুমার: সাপে কাটা শিশুর মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে এনে ঝাড়ফুঁক করল ওঝা। আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া দক্ষিণ মাঝের ডাবরি গ্রামের এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মৃতের পরিবারের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনোভাবের সমালোচনা করছে সবাই।

[আরও পড়ুন: অবৈধ নির্মাণে সায় দিয়ে কাটমানি গ্রহণ, বিধায়কের বিরুদ্ধে পোস্টার কাটোয়ায়]

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ ডাবরি গ্রামের বাসিন্দা গীতা রায়ের একমাত্র মেয়ে ১৮ মাসের শম্পাকে সাপে কামড়ায়। বাড়ির উঠোনে খেলার সময় সাপটি কামড়ে দেয় শিশুটিকে। সঙ্গে সঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শুরু হয় তার। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। হাসপাতালেই মারা যায় শিশুটি। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেহের ময়নাতদন্ত করতে চায়। কিন্তু, তাতে বাধা দেয় পরিবারের লোকজন। ময়নাতদন্ত ছাড়াই হাসপাতালের বন্ডে সই করে বাড়িতে এনে শিশুটির ঝাড়ফুঁক শুরু হয়।

Advertisement

বাড়ির ভিতরে থাকা মনসা ঠাকুরের মন্দিরের সামনে কলাপাতায় শুইয়ে চলে ঝাড়ফুঁক। সাপের কামড়ের স্থান থেকে রক্ত চুষে বিষ বের করার চেষ্টা করে ওঝা। কিন্তু, সব বিফলই হয়। শুক্রবার রাতেই শিশুটিকে বাড়ির সামনে নদীর ধারে কবর দেওয়া হয়। শনিবার ঘটনাটির কথা জানাজানি হতেই আলিপুরদুয়ারে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সাধের লুচিই কাড়ল প্রাণ, টিফিন খেতে গিয়ে বনগাঁয় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু ব্যক্তির]

মৃত শিশুর মা গীতা রায় বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। মেয়ে উঠোনে খেলছিল। আচমকা সাপ কামড়ে দেওয়ার জেরে ও চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। ক্ষত স্থানে চুন লাগানোর পরেও পা ফুলে যায়। কোনও গাড়ি পাইনি। অন্যের বাইকে করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসা শুরুর পর মেয়ের মৃত্যু হয়। আমরা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করতে দিইনি। বাড়িতে এনে ঝাড়ফুঁক করা হয়। মনসা ঠাকুরের মন্দির রয়েছে। সেখানে রেখে ঝাড়ফুঁক করে ওঝা। কিন্তু, সাপের কামড়ের ফুটো খুঁজে পায়নি। সেই কারণে বিষ বের করা যায়নি। বাঁচেনি মেয়েও। পরে রাতেই মেয়েকে কবর দেওয়া হয়।’

শনিবার খবর পেয়ে মৃতের বাড়িতে যান আলিপুরদুয়ার বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সংস্থা। পরে সংস্থার সম্পাদক কৌশিক দে বলেন, ‘প্রথমত যে সাপটিকে ধরে প্রতিষোধক নেওয়ার জন্য পিটিয়ে মারা হয়েছে সেটি বিষাক্ত নয়। কিন্তু, শিশুটিকে গোখরো জাতীয় বিষাক্ত সাপ কামড়ে ছিল। সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হত। কিন্তু, নিয়ে যেতে দেরি হয়েছিল। তার উপর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত না করে কুসংস্কারের বশে ঝাড়ফুঁক করা হয়েছে। আমরা ওই ওঝাকে খুঁজছি। ওনার সন্ধান পেলে পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে। এলাকায় আমরা সচেতনতা তৈরি করব।’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ