Advertisement
Advertisement
পিটিয়ে খুন

অগ্রিম বেতন নিয়ে বচসা, আক্রোশে চিকিৎসকের স্ত্রীকে পিটিয়ে খুনে গ্রেপ্তার গাড়িচালক

স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম চিকিৎসকও।

Driver kills thrashed employer's wife to death at Burdwan
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 29, 2019 9:49 am
  • Updated:October 29, 2019 9:49 am  

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: অগ্রিম বেতন নিয়ে বচসা। তা এমনই চরমে পৌঁছয় যে মালিকের স্ত্রীকে পিটিয়ে খুনের মতো গুরুতর অভিযোগে গ্রেপ্তার গাড়ি চালক। বর্ধমানের খোশবাগান এলাকার ঘটনায় স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসক নিজেও। সংকটজনক অবস্থায় তিনি ভরতি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তদন্তে নেমে গাড়ি চালক তপন দাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ তাকে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

স্থানীয় সূত্রে খবর, তপন দাস ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুব্রত নাগ নামে এক চিকিৎসকের গাড়ি চালাচ্ছে। পেশায় অ্যানাস্থেসিস্ট ডাক্তার সুব্রত নাগ। দম্পতির একমাত্র ছেলে কর্মসূত্রে আমেরিকায় থাকেন। সুব্রতবাবু এবং তাঁর স্ত্রী মৌসুমী দেবীকে দেখভালের জন্য দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের বাড়িতে পরিচারিকা হিসেবে থাকেন জবা প্রামাণিক। এছাড়া মালি-সহ আরও কয়েকজন পরিচারক-পরিচারিকা রয়েছেন।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: পরিত্যক্ত ঘরে মজুত বোমায় হাত পড়তেই তীব্র বিস্ফোরণ, প্রাণ গেল ৩ জনের]

সোমবার বিকেলের দিকে গাড়ি চালক তপন গিয়ে বাড়িতে কলিং বেল বাজায়। বাড়ির সকলেই তখন দোতলায় ছিলেন। মৌসুমী দেবীই দরজা খুলে দেন। এরপর দুজনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। বাড়ির প্রধান পরিচারিকা জবা প্রামাণিকের কথায়, “তপন বেতনের টাকা অগ্রিম চায়। এমনকী তিন মাসের বেতন একসঙ্গে অগ্রিম দিতে হবে বলেও দাবি করে। তখন ম্যাডাম বলেন, মাস শেষ না হলে বেতন কেন দেবেন। আর তিনমাসের অগ্রিমও দেওয়া সম্ভব নয়। তখন তপন বলে,সে কাজ ছেড়ে দেবে। ম্যাডাম পাল্টা তাকে কাজ ছেড়ে দিতে বলেন।” আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে তপন।

BDN-doc-attacked
প্রত্যক্ষদর্শী জবা আরও জানান, এরপরই তপন গাড়ি থেকে একটা লাঠি নিয়ে এসে মারতে শুরু করে মৌসুমীদেবীকে। তাঁর কান লক্ষ্য করে চড়ও মারে। মারতে মারতে তাঁকে মাটিতে ফেলে দেয়। ব্যাপার গুরুতর বুঝতে পেরে সুব্রতবাবু স্ত্রীকে বাঁচাতে এলে তাঁকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে তপন। এরপর দোতলায় উঠে, যেখানে জবাদেবীরা থাকেন, সেখানে তালা দিয়ে দেয় গাড়ি চালক। জবাদেবী পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে চারতলার ছাদে উঠে পরিচিতদের ফোন করে চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য বলতে থাকেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। বাড়ির আরেক পরিচারিকা সাবিত্রী হালদার জানান, পুলিশ এসে দু’জনকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকেই তপনকেও আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।
বাড়ির পরিচারিকারা জানান, দুর্গাপুজোর আগেও একইভাবে দম্পতিকে মারধর করেছিল তপন। পুলিশে অভিযোগও করা হয়েছিল তখন। সেসময় তপনকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হলেও, পরে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তাঁদের অভিযোগ, বাড়ির পরিচারিকাদের, বিশেষ করে সর্বক্ষণের কর্মী জবাদেবীকে প্রায়ই হুমকি দিত তপন। জবাদেবী নিজেই বলেন, “তপন মাঝেমাঝেই হুমকি দিত, ম্যাডামের সঙ্গে আমার সম্পর্ক রয়েছে। তোদেরও দেখে নেব। তোদেরও মারব। তপনকে যদি তখন পুরোপুরি তাড়িয়ে দেওয়া হত, তাহলে আর এই দিন দেখতে হত না।”

[ আরও পড়ুন: আইএস প্রধান বাগদাদির মৃত্যুতে হাসি ফুটল নদিয়ায়]

ঘটনার পর বর্ধমান থানার আইসি পিন্টু সাহা-সহ পদস্থ পুলিশকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে তদন্তে নামেন। ডাক্তার সুব্রত নাগ সুস্থ হয়ে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা। তাহলে তাঁর বয়ান নেওয়া সম্ভব হবে এবং বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য মিলবে বলে আশা তদন্তকারীদের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement