Advertisement
Advertisement

Breaking News

নিশ্চয় যান

বকেয়া কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বিপুল টাকা, ‘নিশ্চয় যান’ পরিষেবা বন্ধ নদিয়ার করিমপুরে

করিমপুর হাসপাতালে পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় বিপাকে বহু প্রসূতি৷

Drivers of 'Nischoy Jaan' stop their work as huge amount is pending
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 4, 2019 9:12 am
  • Updated:June 4, 2019 1:48 pm

পলাশ পাত্রতেহট্ট: নদিয়ার সীমান্ত করিমপুর হাসপাতাল বিল না পেয়ে কয়েক মাস ধরে বন্ধ অধিকাংশ নিশ্চয় যানের পরিষেবা। লক্ষাধিক টাকা বকেয়া না পাওয়া মালিকদের সাফ কথা, বিল না মেটালে নিশ্চয় যান পথে নামাতে পারবেন না তাঁরা। আর এর জেরে চরম সমস্যায় পড়েছেন প্রসূতি মায়েরা।

[ আরও পড়ুন: চিকিৎসার গাফিলতিতে সদ্যোজাতের মৃত্যু, দুই ডাক্তারকে শাস্তি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের]

চার বছর আগে কেন্দ্রের উদ্যোগে ব্লকে ব্লকে শুরু হয় নিশ্চয় যান প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রসূতি বা এক বছরের সন্তান নিখরচায় এই পরিষেবা পায়। করিমপুর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে কেন্দ্র সরকারের জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ‘জননী ও শিশু সুরক্ষা’ প্রকল্পে নিশ্চয় যান চালু করার কথা বলা হয়। আগে গাড়ির নাম ছিল ‘মাতৃযান’। পরবর্তী সময়ে হয় ‘নিশ্চয় যান’। এই প্রকল্পটি প্রসূতি বা শিশুদের দ্রুত স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য বাস্তবায়িত হয়েছে৷ নিয়ম অনুযায়ী, এর খরচ বহন করে কেন্দ্র। বর্তমানে করিমপুর হাসপাতালে ছটি ‘নিশ্চয় যান’ শিশু ও মাকে নিয়ে হাসপাতালে যাতায়াতের কাজটা করে।

Advertisement

সীমান্তে বহু পুরনো করিমপুর হাসপাতাল। প্রতিদিন গড়ে হাজার দেড়েক রোগী আসে। কয়েক মাস আগে এখানে ফের চালু হয়েছে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে প্রসব। ফলে গড়ে সপ্তাহে ৭০ জন প্রসূতি আসে। সমস্যা কিছুটা জটিল হলে তেহট্ট বা কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। ঠিক এই অবস্থায় নিশ্চয় যানের গুরুত্ব অপরিসীম।

Advertisement

কৃষি প্রধান সীমান্তের করিমপুর এক ব্লকের গোটা এলাকা ছাড়াও আশপাশ থেকে অনেক প্রসূতি বা রোগী আসে এই হাসপাতালে। গোটা ব্লক ছাড়িয়ে তেহট্ট বা কৃষ্ণনগরের হাসপাতালে আনানেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য এই গাড়ির মালিকরা প্রতি মাসের শেষে করিমপুর হাসপাতালের সিস্টেমে বিল জমা দেন। মাসের দশ তারিখের মধ্যে পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হয়। সরকারি টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি ঢুকে যায়। একথা জানিয়েছেন, ‘নিশ্চয় যান’-এর চালক ছোটন শীল। বর্তমানে অবশ্য তিনি টাকা না পেয়ে পরিষেবা বন্ধ রেখেছেন৷ করিমপুরের ধোড়াদহের এই চালক বলেন, ‘তিন মাসের বকেয়া টাকা পাব। ষাট হাজার টাকার উপরে বাকি রয়েছে। পরিবার চালাতে গিয়ে অসুবিধায় পড়ছি। বাধ্য হয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছি।’ ১ থেকে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বের জন্য যান-মালিককে দেওয়া হয় ১৫০ টাকা, ১১-২০ কিলোমিটার পর্যন্ত ২৫০ টাকা, ২১-৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ৩৫০ টাকা ও ৩১-৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ৪৮০ টাকা। এর পরে কিলোমিটার পিছু ৮ টাকা করে দেওয়া হয়।

[ আরও পড়ুন: পুরভোট না করিয়ে প্রশাসক বসানো ‘অসাংবিধানিক’, অভিযোগে আন্দোলনে গেরুয়া শিবির]

করিমপুরের আরেক যান-মালিক সমীর বিশ্বাসের কথায়,‘ আমি শেষ চার মাসে প্রায় সত্তর হাজার টাকা পাব। হাসপাতালের সুপারের কাছে লিখিতভাবে সব জানিয়েছি। কিন্ত কাজের কাজ হয়নি। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।’ এই অবস্থায় প্রসূতি মায়েরা পড়েছেন বিপাকে। গরিব প্রসূতি মায়ের পরিবারের লোকজন বেশি টাকা দিয়ে বেসরকারি গাড়ি ভাড়া করছে। ফলে যে উদ্দেশ্যে এই সরকারি ভাবনা প্রকল্প তা ব্যাহত হচ্ছে। ঘটনা প্রসঙ্গে করিমপুর হাসপাতালের সুপার মনীষা মণ্ডল বলেন, ‘ছ’টা নিশ্চয় যানের মধ্যে চারটেই বন্ধ। কিন্তু অন্য জেলা বা ব্লকে চার মাসের বেশি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। তবু তাঁরা গাড়ি চালাচ্ছেন। কিন্তু এখানে দু মাসের টাকা না পেয়ে বন্ধ করেছে। আমি বিষয়টি জানিয়েছি৷’ আপাতত এই সংকটের মধ্যেই রয়েছেন প্রসূতি মায়েরা৷ কবে জট কেটে ফের ‘নিশ্চয় যান’ পরিষেবা চালু হয়, এখন তারই অপেক্ষা৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ