মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: রাইস মিলের বয়লার ফেটে জখম ৮ শ্রমিক। ঘটনাটি ঘটে বাগনান থানার বরুণদা এলাকায়। বিকট আওয়াজ করে বয়লার ফেটে যায়। সেই সময় সেখানে কর্মরত ছিলেন আট শ্রমিক। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বাগনান থানার পুলিশ ও দমকল। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দমকলের প্রাথমিক অনুমান, অত্যধিক তাপ তৈরির ফলে বিস্ফোরণ হয়েছে। পরীক্ষার জন্য ডাকা হতে পারে ফরেনসিক বিভাগকে। এদিকে, স্থানীয়রা জানিয়েছেন আওয়াজের অভিঘাতে আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ির জানালার কাচ এবং দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আওয়াজ যায় ও কম্পন অনুভূত হয়। আওয়াজের ফলে কারখানার শ্রমিকরা ও আশপাশের লোকেরা অনেকে ভয়ে পড়ে যান।
পুলিশ ও কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় প্রায় জনাদশেক শ্রমিক কাজ করছিলেন। হঠাৎই বয়লার বিস্ফোরণ ঘটে। বয়লার বিস্ফোরণের ফলে তাঁরাও ছিটকে পড়েন। ছুটে আসেন কারখানায় কাজ করা অন্যান্য শ্রমিকরা। বিস্ফোরণের ফলে বয়লার-সহ পাশের গোটা কাঠামো ভেঙে পড়ে। কারখানার অন্যান্য শ্রমিকরা গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাওড়া জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, তাঁদের মধ্যে একজন বাগনান হাসপাতাল এবং আরেকজনকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজে। পুরো ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। যদিও কর্তৃপক্ষের তরফে সুচন্দন বসু বলেন, “আমরা রক্ষণাবেক্ষণ করি ঠিকই। তবে এটি একটি দুর্ঘটনা। আহতদের আমরা দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।”
এদিকে, বিস্ফোরণের আওয়াজের অভিঘাতে এবং কারখানা জিনিসপত্র উড়ে এসে ভয়ংকর অবস্থা হয় আশপাশের বাড়িগুলোতে। মদন পাল, টুম্পা পাল বলেন, “ইট, টিন, রড উড়ে আসে বয়লার থেকে। টালিতে পড়ে বাড়ির মধ্যে ভেঙে পড়তে থাকে টালি। গোটা বাড়ি কাঁপতে থাকে। দেওয়ালে ফাটল ধরে গিয়েছে। ভেঙে পড়ে জানালার কাচ। ভয়ে কাঁপতে থাকেন পরিবারের লোকেরা।” আরেক বাসিন্দা মিঠু পাল বলেন, “রান্না করছিলাম। আওয়াজ পেয়ে বাইরে আসতেই টিন এসে পায়ে লাগে। পা কেটে যায়। মাথায় পড়লে বিপদ বাড়ত।” মনোজ ঘোষের বাড়ির এসি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গোটা জানালার কাচ ভেঙে বাড়িতে ছিটকে পড়ে। বিছানা, মেঝেয় কাচে ভর্তি হয়ে যায়। দেওয়াল ফেটে গিয়েছে। ওরফুলির গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য লাল্টু পাল বলেন, “কয়েকশো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওদের কারখানায় কোনও দেখভাল ছিল না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.