রঞ্জন মহাপাত্র, দিঘা: রাতের অন্ধকারে যৌনকর্মীর বেশে বৃহন্নলাদের দাপাদাপিতে আতঙ্কিত সৈকত শহর দিঘার পর্যটকরা।
সন্ধে গড়িয়ে রাত নামার সঙ্গে মায়াবি রাতের অন্ধকারে পুরনো থেকে নতুন দিঘার মোড়ে মোড়ে ছোট্ট পোশাক পরে দাঁড়িয়ে থাকছে বৃহন্নলাদের দল। দলের দুই থেকে পাঁচজন বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। অন্ধকার রাস্তায় পর্যটক যুবক দেখলেই মুখে নানান শব্দ করে যৌন ইঙ্গিত দেওয়া শুরু। তারপরেই কাছে এসে নিয়ে যাওয়ার অবেদনে চলে রেট কাটিং। এমনকী গভীর রাতে দিঘা স্টেশনের সামনে কিংবা অমরাবতি পার্কের সামনে ছোট্ট পোষাকে সুসজ্জিত বৃহন্নলারা দাঁড়িয়ে চলন্ত গাড়িকে থামিয়ে অন্যত্র পৌঁছে দেওয়ার নাম করে গাড়িতে ওঠার আবেদন জানায়। আর গাড়িতে তুলে নিলেই পর্যটকদের যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য অঙ্গভঙ্গি করতে শুরু করে বলে অভিযোগ তুলেছেন পর্যটকরা। ফলে বৃহন্নলাদের দাপটে রাত্রি ১০টার পরে পরিবার নিয়ে পর্যটন শহরের রাস্তায় বেরতে চাইছেন না পর্যটকেরা।
[ টার্গেট লালকেল্লা, বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল্লি দখলের ডাক মমতার ]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘায় বেশ কয়েকজন বৃহন্নলাদের দল এসেছে। তারা সকাল হলে পর্যটকদের থেকে টাকা তোলে এবং রাত নামলে স্বল্প পোশাকে যৌনকর্মীর ভূমিকা পালন করে। যার ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে পর্যটক মহলে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সপ্তাহান্তের ছুটির সঙ্গে এবারে দোলের ছুটি যোগ হওয়ায় টানা চারদিনের ছুটিতে লক্ষ পর্যটকের ভিড় জমে দিঘার সৈকতে। ভিড় বাড়ার কারণে বৃহন্নলাদের দাপাদাপিও বেড়ে যায়। রোজগারের জন্যে অন্ধকার নামলেই রাস্তায় নেমে পর্যটকদের যৌন ইঙ্গিত দিয়ে হেনস্তা করা হয় বলে উঠেছে অভিযোগ। এমনকী কিছু সময়ের জন্যে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকায় নামিয়ে আনা হয়। রাস্তা দিয়ে গাড়ি কিংবা বাইক যাতায়াত করলেও চলন্ত গাড়িকে থামিয়ে তাতে উঠে পড়ে চাওয়া হয় ২০০ টাকা। না দিলে করা হয় হেনস্তা। একাধিক এমন অভিযোগে নাজেহাল পর্যটক। এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
[ বয়সের গেরো, সিপিএম রাজ্য কমিটি থেকে নির্বাসনের পথে বুদ্ধ-বিমান ]
প্রশাসনিকভাবে এর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন পর্যটক থেকে এলাকার মানুষ। বারাসত থেকে দুই দিনের জন্যে অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় স্বপরিবারে বেড়াতে এসে ছিলেন দিঘা। রাতের বাসে বাড়ি ফিরবেন তাই দিঘা স্টেশনের সামনে পরিবার নিয়ে বাসের অপেক্ষা করছিলেন। সেইসময় দুই বৃহন্নলা দূর থেকে মুখে বিভিন্ন শব্দ তুলে দৃষ্টি আকর্ষণ করে যৌন ভঙ্গি দেখাতে শুরু করে। স্ত্রী, কন্যা নিয়ে লজ্জিত হয়ে শেষমেশ বাসে উঠে বাড়ি ফিরে যান। একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন দমদমের বাসিন্দা সুমন রায়চৌধুরী। পর্যটকদের অভিযোগ, অল্পদিনে ছুটি কাটানোর বাংলার মানুষের সেরা ডেস্টিনেশান এখন দিঘা। তার উপর যেভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে তা আরেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে রাতে দিঘার রাস্তায় পরিবার নিয়ে তো দূরের কথা নিজেদেরই বেরতে ভয় হচ্ছে। এই বিষয়টাও দেখা দরকার প্রশাসনের। তাহলে পর্যটকদের এভাবে প্রতিরাতে হেনস্তার স্বীকার হতে হয় না।
[ পারিবারিক অশান্তির জেরে মদ্যপ বাবাকে কুপিয়ে খুন করল ছেলে ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.