চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: করোনার প্রভাব থেকে নিজেকে তথা নিজের পরিবারকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন সকলেই। দোকান থেকে কোনওক্রমে স্যানিটাইজার পাওয়া মানে যুদ্ধ জয়ের অনুভূতি। সেই অনুভূতি নিয়েই আসানসোল বাজার থেকে বাড়িতে ফিরেছিলেন মনোজ যাদব। শুধু বাড়ির জন্য নয়, বিক্রির জন্যও একশোর বেশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার কেনেন তিনি। দোকানে নিয়ে যেতেই বিক্রি হয়ে যায় সব। কিন্তু সুখ কপালে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ক্রেতারা এক এক করে ফেরাতে থাকেন সব। এরপর ওই বিক্রেতা টের পান স্যানিটাইজার বলে ক্রেতারা যা কিনেছেন তা আসলে আসবাব পরিস্কারের মাল্টি সারফেস স্প্রে।
ছোট্ট প্লাস্টিকের বোতলের ভিতরে নীল রঙের তরল। ওপরে স্টিকারে লেখা সেভেন এম হ্যান্ড স্যানিটাইজার। কিন্তু ব্যবহারের সময় দেখা গেল স্প্রে করা মাত্রই ফেনা হয়ে যাচ্ছে। জ্বালা করছে ত্বক। যা স্যানিটাইজারের ক্ষেত্রে হয় না। বোতল ভাল করে খুঁটিয়ে দেখতেই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। সেভেন এম হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্টিকার তুলতেই দেখা গেল ‘ডাস্টার মাল্টি সারফেস স্প্রে, মেড ইন চায়না।’ বিষয়টি জানাজানি হতেই দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যান হোলসেলার।
প্রতারিত দোকানদাররা বলেন, এই ঘটনায় শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের ত্বকে ক্ষতি হয়েছে। অনেকেরই হাত জ্বালা করছে। এই ঘটনার পর আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। পুলিশ ওই দোকানে অভিযান চালাতে গেলে দেখা যায় বেপাত্তা মালিক। বন্ধ দোকান। পুলিশ আধিকারিকদের কথায়, এই পরিস্থিতিতে অত্যাবশকীয় সামগ্রীর কালোবাজারি ও নকল জিনিষ বিক্রি করা আইনত অপরাধ। অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। জানা গিয়েছে, বাজারে ৫ হাজার বোতল নকল স্যানিটাইজার বিক্রি করেছে অভিযুক্ত। আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার ডাক্তার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও সচেতনতা অবলম্বন করা উচিৎ। কারণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মধ্যে যদি সঠিক পরিমাণে অ্যালকোহল না থাকে তাহলে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.