চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: তীব্র গরম। পাখা ছাড়া এক মুহূর্ত টেকা দায়। কিন্তু বাড়িতে নয় সুইচ টিপে পাখা চালালেন। ধরুন আনলক ওয়ানে আর পাঁচজনের মতো আপনিও অফিসে গিয়েছেন। সেখানে গিয়ে গরম লাগছে। হাত বাড়িয়ে পাখা চালাতেই পারেন। কিন্তু করোনা আবহে বহু মানুষের ব্যবহৃত পাখার সুইচে হাত দেওয়া কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে আপনি চিন্তিত। ঘেমে নেয়ে গেলেও স্রেফ করোনা আতঙ্কে সুইচে হাত দিতেই ভয় লাগছে। এরকম সমস্যায় যাতে কাউকে পড়তে না হয়, সেকথা মাথায় রেখেই আসানসোলের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়ুয়ার নয়া আবিষ্কার। তাঁর আবিষ্কারেই সুইচে ছোঁয়াচ ছাড়াই জ্বলবে আলো। চলবে পাখা।
করোনা সংক্রমণ এড়াতে ‘নন কনট্যাক্ট সুইচিং সিস্টেম’ আবিষ্কার করলেন পড়ুয়ারা। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হার্ডওয়্যার ক্লাবের সদস্যদের সহযোগিতায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র কামরান হাসান এই প্রযুক্তিটি তৈরি করেছেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন শিক্ষক সৌমেন সেন। করোনা আতঙ্কের কথা মাথায় রেখে মাত্র তিনদিনের মধ্যে এই প্রযুক্তি তৈরি করা হয়েছে। সুইচ বোর্ডের কাছে গিয়ে পছন্দের সুইচের সামনে হাত রাখলেই হবে। তারপর নিজে থেকে অন হবে বন্ধ থাকা সুইচ। আবার তেমনই অন করা সুইচ এভাবেই বন্ধ করে দেওয়াও সম্ভব। তার ফলে অনায়াসেই স্পর্শ ছাড়া চালানো সম্ভব পাখা। জ্বালানো সম্ভব আলো। অন্যান্য বৈদ্যুতিন জিনিসপত্রও চালানো সম্ভব হবে।
[আরও পড়ুন: TikTok-কে পাল্লা দেওয়া হল না, গুগল প্লে-স্টোর থেকে সরল জনপ্রিয় Mitron অ্যাপ]
‘নন কনট্যাক্ট সুইচিং সিস্টেম’-এর আবিষ্কারক কামরান হাসান বলেন, “আল্ট্রা সোনিক সেন্সর সিস্টেমের একটি ডিভাইস রয়েছে এখানে। সেই ডিভাইসের সাহায্যে যে কোনও নর্মাল সুইচ বোর্ডকে এই সিস্টেমে ব্যাবহার করা যায়। প্রকল্পটি তৈরি করতে মাত্র ৩৬০ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে এই প্রযুক্তিটি কলেজের অধ্যক্ষের অফিসে ব্যবহার করা হয়েছে।” কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম ভট্টাচার্য বলেন, “আগামী দিনে কলেজের সমস্ত জায়গায় এটি ব্যবহার করা হবে। যদি কোনও স্কুল, কলেজ বা কোনও ব্যাংক, পোস্ট অফিসের মতো জায়গায় এই ধরনের ‘নন কনট্যাক্ট সুইচিং সিস্টেম’ ব্যবহার করতে চায়, তবে আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কর্তৃপক্ষ সাহায্য করবে।”
ছবি: মৈনাক মুখোপাধ্যায়