রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার: জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে হাতি দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন খোদ বনকর্মীরাই। পালাতে গিয়ে ঘটল বিপর্যয়। এক বনকর্মীর বন্দুকের ট্রিগারে চাপ পড়ে ছিটকে বেরল গুলি। প্রাণ গেল তাঁর সহকর্মীর। মৃত ব্যক্তি বনদপ্তরের অস্থায়ী কর্মী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। মৃতের পরিবারকে আর্থিক অনুদান ও একজন চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে জলদাপাড়া অভয়ারণ্য কর্তৃপক্ষ। ডিএফও কুমার বিমল বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমরা তদন্ত শুরু করেছি।‘
[গন্ডারের হামলায় ছিন্নভিন্ন বিট অফিসার, জলদাপাড়ায় ঘনাল রহস্য]
শুক্রবার সকালে ৯ টা নাগাদ চারজন বনকর্মীর একটি দল টহলদারিতে বেরিয়েছিল জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে। বনকর্মীরা যখন হল্লাপাড়া বিটের তিনি ৩ নম্বর কম্পার্টমেন্টে জঙ্গলে টহল দিচ্ছিলেন, তখনই তাঁদের তাড়া করে একটি বুনো হাতি। টহলদারি দলের নেতৃত্বে ছিলেন কবি রাভা নামে বনদপ্তরের একজন স্থায়ী কর্মী। তাঁর কাছে একটি এক দোনলা বন্দুক। হাতির তাড়া খেয়ে পালানোর সময়ে কোনওভাবে বন্দুকে ট্রিগারে চাপ পড়ে যায়। গুলিবিদ্ধ হন অস্থায়ী বনকর্মী মারকুস এক্কা। তাঁর হাতে ও পেটে গুলি লাগে। সূত্রের খবর, ঘটনার পর প্রায় এক ঘণ্টা জঙ্গলেই পড়েছিলেন তিনি। শেষপর্যন্ত ওই অস্থায়ী কর্মীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় মাদারিহাট হাসপাতালে। সেখানে মারকুসকে স্থানান্তরিত করা হয় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে। কিন্তু, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। জেলা হাসপাতালে মারা যান মারকুস এক্কা। কিন্তু, কীভাবে এই ঘটনা ঘটল? তদন্তে নেমেছে জলদাপাড়া অভয়ারণ্য কর্তৃপক্ষ। মৃত অস্থায়ী কর্মীর পরিবারকে আর্থিক অনুদান ও একজনকে বনদপ্তরে অস্থায়ী চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
[মহিষাদলে দেখা মিলল ট্যারান্টুলার, আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দারা]
এদিকে এই ঘটনার আবার বনদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বনকর্মীদের একাংশের দাবি, যাঁর বন্দুক থেকে গুলি বেরিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটল, সেই কবি রাভা বনশ্রমিক পদে কর্মরত। কিন্তু, নিয়ম অনুয়ায়ী, শুধুমাত্র বনরক্ষীদের কাছেই আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কথা। তাঁদের প্রশ্ন, ওই বনশ্রমিক কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জঙ্গলে ঢুকলেন? জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের হল্লাপাড়া বিটের বিট অফিসার এফ এ সরকারের সাফাই, ‘বনরক্ষী না থাকলে অনেক সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে জঙ্গলে টহল দেন বনশ্রমিকরা। এটা নতুন কিছু নয়।’
[কাটোয়ায় আতঙ্ক, অজানা ঘাতকের হাতে প্রাণ গেল ৬৮টি ভেড়ার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.