Advertisement
Advertisement

Breaking News

চন্দ্রবোড়ার ছোবল থেকে বাঁচতে শাঁখামুটি চাইছে মানুষ, কিন্তু কেন?

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

Ghatal mills step to control death from snake bite
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 25, 2018 2:00 pm
  • Updated:June 25, 2018 2:00 pm

গৌতম ব্রহ্ম, কলকাতা: চন্দ্রবোড়া ঠেকাতে শাঁখামুটির শরণ! পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-ঘাটাল মহকুমায় গত আড়াই মাসে ১২ জনের প্রাণ কেড়েছে চন্দ্রবোড়া। ফণাহীন এই বিষধরে ভরে গিয়েছে জঙ্গল থেকে জলাভূমি। আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রাতে টর্চ হাতেও কেউ বাড়ির বাইরে বেরনোর সাহস পাচ্ছেন না। রাতের অন্ধকারে এক বাড়ি থেকে আর এক বাড়িতে যাচ্ছিল ছয় বছরের স্নেহা কান্দার। একরত্তি মেয়েটাকে রাস্তাতেই ছোবল দেয় চন্দ্রবোড়া। স্নেহা এখন পিজি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। স্নেহার মতো অনেকেই চন্দ্রবোড়ার ছোবল খেয়েছেন ও খাচ্ছেন। কার্যত মৃত্যুমিছিল শুরু হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর ২ ও ঘাটাল ব্লকে। বিপাকে পড়ে সবাই শাঁখামুটির বাড়বাড়ন্ত চাইছে। কারণ, শাঁখামুটি সাপের প্রিয় খাবার চন্দ্রবোড়া। স্থানীয় সূত্রে এমনটাই খবর৷

২০০৪ সালে ক্যানিংয়ের যুক্তিবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা কালাচ ঠেকাতে শাঁখামুটি চাষের অনুমতি চেয়েছিল। কেন্দ্রের সবুজ সংকেত পেলেও রাজ্য সে যাত্রায় অনুমোদন দেয়নি। সংস্থার সম্পাদক বিজন ভট্টাচার্য এই খবর জানিয়ে বলেন, “২০০৪ সালে বাংলা বিজ্ঞান কংগ্রেসেও আমরা শাঁখামুটির হয়ে সওয়াল করেছিলাম। তথ্য-সহ জানিয়েছিলাম, যে অঞ্চলে শাঁখামুটি বেশি থাকে সেখানে সাপের কামড়ে মৃত্যু কম হয়। কারণ, শাঁখামুটির প্রধান খাদ্য সাপ। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, বন দপ্তর আমাদের কথায় আমল দেয়নি।”

Advertisement

[নিরাপত্তা জোরদার করতে পদক্ষেপ, ইকো পার্কের পুকুর ঘিরে দিল হিডকো কর্তৃপক্ষ]

সাপ নিয়ে এই অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন গোমকপোতা গুণধর বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক সুব্রত বুরাই। তিনি জানালেন, এখনও বর্ষা সেভাবে শুরু হয়নি। তাতেই এই অবস্থা। গত আড়াই মাসে এক ডজনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে সাপের কামড়ে। বর্ষায় কী হবে কে জানে! শাঁখামুটি বা গোসাপ বাড়লে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা কমত। যদিও আরেক সর্পবিশারদ শিবাজি মিত্রর ধারণা, বাইরে থেকে শাঁখামুটি নিয়ে এসে ছাড়লে অঞ্চলের স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। এর বহু প্রমাণ রয়েছে। জঙ্গল ও জলাজমি বেশি থাকায় পশ্চিম মেদিনীপুরের এই দুই ব্লকে চন্দ্রবোড়ার দাপট বেশি। সাপে কাটার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ ডা. দয়ালবন্ধু মজুমদারও বিষয়টি মেনে নিলেন। জানালেন, ৩০-৪০ ভায়াল এভিএস দেওয়ার পরও চন্দ্রবোড়ার ছোবল খাওয়া রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আসলে দক্ষিণ ভারতে সাপের বিষ থেকে তৈরি এভিএস বাংলায় ঠিকমতো কাজ করছে না৷

Advertisement

[নস্টেবল নিয়োগের ভুয়ো নির্দেশনামা, হাতে পড়ল খোদ পুলিশ কমিশনারেরই]

গুজরাতে-মহারাষ্ট্রে ১০ ভায়াল এভিএসে কাজ হলেও বাংলায় ৩০-৪০ ভায়ালেও কাজ হয় না। ডায়ালিসিসের সুবিধা না থাকায় মৃত্যুর হার আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ডায়ালিসিসের প্রয়োজনে রোগীকে উজিয়ে কলকাতায় নিয়ে আসতে হচ্ছে। স্নেহার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে আনা হয় স্নেহাকে৷ কিন্তু শম্ভুনাথে শিশুদের ডায়ালিসিসের সুবিধা না থাকায় পিজিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গত সাতদিনে আরও দুটি দংশনের ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে রাধেশ্যাম সিং নামে ৫৮ বছরের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে ঘাটাল হাসপাতালে৷

দয়ালবাবু জানালেন, এ বড় বিচিত্র সমস্যা। এভিএস কাজ না করলে ডাক্তারবাবুরা রোগীকে বাঁচাবেন কী করে? বিশেষজ্ঞদের মত, চন্দ্রবোড়ার বিষ রক্তের জমাট বাধার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। তাই সময়মতো এভিএস না পেলে রোগীর ডায়ালিসিসের প্রয়োজন হয়৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ