৪ আশ্বিন  ১৪৩০  শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

ওপার বাংলা থেকে শান্তিনিকেতনে এল রবি ঠাকুরের ব্যবহৃত কেরোসিন বাতি

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: May 24, 2018 1:27 pm|    Updated: May 24, 2018 1:27 pm

Heritage Lamp of Rabindranath Tagore is brought to Shanitiniketa

কৃষ্ণকুমার দাস, শান্তিনিকেতনকুষ্টিয়ার শাহাজাদপুর কাছারিবাড়িতে কেরোসিন বাতির আলোয় কবিগুরু গীতাঞ্জলির অসংখ্য কবিতা লিখেছিলেন। এবার সেই বাতি দেখতে পাবেন এপার বাংলার রবীন্দ্রঅনুরাগীরা। বাতিটির বয়স প্রায় একশো বছর। দেখা যাবে শিলাইদহে পদ্মাবোটে বসে গুরুদেবের আঁকা নানা ছবির রঙ-তুলিতে ব্যবহার করা ঢাকনাযুক্ত বাটি। এতদিন রবি ঠাকুরের এমন মহার্ঘ্য স্মৃতি নিদর্শনগুলি ছিল বাংলাদেশের শাহজাদপুরের রবীন্দ্রকাছারি বাড়িতে। সংরক্ষণের দায়িত্বে ছিল সেখানকার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। এবার সেই বাতি  আসছে শান্তিনিকেতনের নব নির্মিত বাংলাদেশ ভবনে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার উদ্যোগেই তা সম্ভবপর হচ্ছে।  কবিগুরুর কর্মতীর্থ শান্তিনিকেতনে তৈরি বাংলাদেশ ভবনের জাদুঘরের প্রদর্শনীতে থাকছে কবির ব্যবহার্য বাতি, বাটি ছাড়াও নানা সৃষ্টিসম্ভার। সেই শতাব্দীপ্রাচীন বাতি এপার বাংলার রবীন্দ্র অনুরাগীদের কাছে পৌঁছে দিতে পারে আবেগাপ্লুত ওপারের শেখ হাসিনা সরকার। তবে কলকাতা আসা নিয়ে বুধবারই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশেষ শুভেচ্ছাপত্র পাঠিয়েছেন শেখ হাসিনা। কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের শীর্ষ আধিকারিকরা প্রধানমন্ত্রীর সেই বিশেষ চিঠি এদিনই মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে পৌঁছে দিয়েছেন।

[মোদি-হাসিনা-মমতার আগমন ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে বিশ্বভারতীতে]

তবে শান্তিনিকেতনের আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছাড়াও আলাদা করে কলকাতায় বসে মমতার সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। দুই নেত্রীর সেই ‘ব্যক্তিগত বৈঠক’-এর কথা স্বয়ং হাসিনা নিজেই মমতাকে ফোন করে আমন্ত্রণ জানাতে চাইছেন। এমনটাই জানিয়েছেন, ঢাকার বিদেশমন্ত্রকের কর্তারা। উল্লেখ্য, একদিন আগে বৃহস্পতিবার বিকেলেই শান্তিনিকেতনে পৌঁছে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরদিন সকালে দুই প্রধানমন্ত্রীকে পৌষমেলার মাঠে অস্থায়ী হেলিপ্যাডে অভ্যর্থনাও জানাবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে নবনির্মিত বাংলাদেশ ভবনে থাকছে বঙ্গবন্ধুর জীবন,  স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রদর্শনীর ডিজিটাল উপস্থাপনা। রবীন্দ্রনাথের উপরে কী জাতীয় ঘৃণা ও বিদ্বেষ পোষণ করত পাকিস্তান সরকার, তার দুর্মূল্য চিত্র, নথিও থাকছে সংগ্রহশালায়। ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্রনাথের জন্মজয়ন্তী পালন করতে গিয়েই বাধা আসে। বাধা পান  ওপার বাংলার রবীন্দ্র অনুরাগী ও শিক্ষাবিদরা। এইসময় পাকিস্তানী সেনা ও উর্দুভাষী পুলিশের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন তাঁরা। সেই ছবিও রয়েছে প্রদর্শনীতে। বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যে ঢাকা থেকে দিল্লি লং-মার্চ হয়েছিল তাও ছবি দিয়ে হাজির করা হয়েছে বাংলাদেশ ভবনের রবীন্দ্রশ্রদ্ধা শীর্ষক অংশে। থাকছে ওপার বাংলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কবিগুরুকে নিয়ে নানা অজানা চিত্র ও বিরল নথি। আম্রকুঞ্জে বিশ্বভারতীর সমাবর্তন শেষে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ভবনকে সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

[প্রধানমন্ত্রীর সময় নেই, বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যমণ্ডিত সমাবর্তন থেকে বাদ গেল দেশিকোত্তম]

রবীন্দ্র-তীর্থ শান্তিনিকেতনে নিজের দেশের একটা ভবন তৈরি করে সেখানে বাংলাদেশের তরফে গুরুদেবের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর প্রয়াস নিয়েছিলেন হাসিনা। নিজের সরকারের তরফে ২৫কোটি টাকা দিয়ে সেটি নির্মাণ সম্পূর্ণ করেন। সেই সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনার ব্যবস্থাও করেছেন তিনি। উদ্বোধনের পর নরেন্দ্র মোদি চলে গেলে তাই আলাদা করে বিশ্বভারতী কতৃর্পক্ষের সঙ্গে বৈঠকেও বসবেন। বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত থাকবেন। রবিঠাকুরের কর্মক্ষেত্রে তৈরি দেশের ওই স্থাপত্যের জন্য হাসিনা বরাদ্দ করবেন আরও ১৫ কোটি টাকা। ওই টাকার সুদেই প্রতিবছর বাংলাদেশ ভবন রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা করতে পারবে বিশ্বভারতী। বুধবার শান্তিনিকেতনে এসে দেশের তরফে কীভাবে ওই ভবন পরিচালনায় সাহায্য করা হবে তা নিয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন বাংলাদেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ভবনে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু নিয়ে দুই প্রদর্শনীর খুঁটিনাটি ঘুরে দেখেন। প্রদর্শনীর দায়িত্বে থাকা ঢাকা থেকে আসা প্রখ্যাত গ্রাফিক ডিজাইনার তারিক সুজাতকে বেশ কিছু ছবি ও সামগ্রী আরও আকর্ষণীয়ভাবে রাখার নির্দেশ দেন অভিনেতা-মন্ত্রী নুর।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে