Advertisement
Advertisement

Breaking News

কোয়ারেন্টাইন সেন্টার

কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রগুলিতেও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হবে! আতঙ্কে রাজ্যের শিক্ষা মহল

আতঙ্কে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও।

HS Exam will be conducted on Quarantine Centre's also

প্রতীকী ছবি।

Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:June 11, 2020 7:01 pm
  • Updated:June 11, 2020 7:01 pm

দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্যের অগুনতি স্কুলে চলছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। তার একটি বড় অংশে আগামী মাসে হবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। একদিকে করোনা আতঙ্ক। অন্যদিকে, পরীক্ষা না দিলে পিছিয়ে যেতে হবে এক বছর। দুইয়ের টানাপোড়েনে আতঙ্কে অভিভাবক ও পড়ুয়ারা। শিক্ষামহলের বক্তব্য, কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র হওয়া স্কুলে পরীক্ষা নেওয়ার অর্থ ছাত্র-ছাত্রীদের বিপদে ফেলা। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ নতুন পরীক্ষাকেন্দ্রের তালিকা ঘোষণা করেনি। স্কুলশিক্ষা দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, পুরনো কেন্দ্রেই স্থগিত থাকা তিনদিনের পরীক্ষা নেওয়া হবে। রাজ্য সরকারের নির্দেশ, পরিবর্তিত পরীক্ষার দিনগুলিতে নিয়ম বিধি মেনে কাজ করতে হবে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে দূরত্ব থাকতে হবে অন্তত তিন ফুট।

শিক্ষক সংগঠন বিজিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক সৌরেন ভট্টাচার্য্যর বক্তব্য, “উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ব্যবস্থায় পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ সোনার পাথরবাটির মতো। কারণ পরীক্ষা কেন্দ্রে দুটি বেঞ্চের মধ্যে তফাৎ দুই ইঞ্চিও থাকে না। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলিকে কোনওভাবেই পরীক্ষাকেন্দ্র করা উচিত নয়। তা করলে ছাত্রছাত্রীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হবে।” নদীয়ার সাহেবনগর হাই স্কুল, জলপাইগুড়ির দেবীঝোরা হাই স্কুল, কোচবিহারের চিলাখানা হাই স্কুল, বর্ধমানের কাটোয়া ভারতী ভবন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার উত্তর কুসুম হাই স্কুল, পশ্চিম মেদিনীপুরের নছিপুর আদিবাসী হাই স্কুল প্রভৃতি অগুনতি স্কুলে চলছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। প্রতিষ্ঠানগুলিতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও হবে। করোনা সতর্কতার জেরে ২৩,২৫ ও ২৭ মার্চের পরীক্ষা স্থগিত হয়েছিল। ঘোষণা করা হয়েছিল ২৯ জুন, ২ ও ৬ জুলাই স্থগিত থাকা ১৫টি বিষয়ের পরীক্ষা হবে। সেই ঘোষণা ছিল বর্ধিত লকডাউনের আগে। পরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ২৯ জুন পরীক্ষা হবে না। উচ্চমাধ্যমিকের নতুন তিনটি দিন হল ২, ৬ ও ৮ জুলাই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘জুলাইয়ে স্কুল খুলবে না, পরীক্ষা হবে’, ফি না বাড়ানোর আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর]

শিক্ষক সংগঠন গুলির বক্তব্য, রাজ্যে এখনও স্বাভাবিক হয়নি গণপরিবহণ। চলছে না ট্রেন। বাস-অটো চললেও তা সংখ্যায় কম। এই পরিস্থিতিতে কী করে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা পরীক্ষাকেন্দ্রে যাবেন? এসটিইএ-র তরফে অনিমেষ হালদার বলেন, “আমি ডায়মন্ড হারবারের ঝাপবেড়িয়া হাই স্কুলের শিক্ষক। এখানে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার চলছে। পরীক্ষাও নেওয়া হবে। প্রশাসন বলেছে ২৮ জুনের পরে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাখা হবে না। দুদিনের মধ্যে যথোপযুক্ত স্যানিটাইজেশন হবে কি না তা অনিশ্চিত।” পরিবহন নিয়ে তাঁর পরামর্শ, স্পেশাল বাস চালু করলে সমস্যা কিছুটা কমবে। আগে একাদশ এবং দ্বাদশ এর পরীক্ষা একই দিনে হত। সকাল ১০ টায় শুরু হত পরীক্ষা। উচ্চমাধ্যমিকে এখন শুধুমাত্র একাদশের পরীক্ষা নেওয়া হয়। সকাল দশটার বদলে দুপুর বারোটায় পরীক্ষা শুরু হোক। এই প্রস্তাব দিয়ে স্কুল শিক্ষাদপ্তরকে চিঠিও পাঠিয়েছে এসটিইএ।

Advertisement

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস আগেই জানিয়েছেন, সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১.১৫ পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে। ২ জুলাই হবে এডুকেশন, ফিজিক্স, নিউট্রিশন এবং অ্যাকাউন্টেন্সি পরীক্ষা। ৬ জুলাই হবে সংস্কৃত, কেমিস্ট্রি, ইকোনমিক্স, জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন, পার্সিয়ান, অ্যারাবিক এবং ফ্রেঞ্চ বিষয়ে পরীক্ষা। ৮ জুলাই নেওয়া হবে জিওগ্রাফি, স্ট্যাটিসটিকস, কস্টিং অ্যান্ড ট্যাক্সেশন, হোম ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ফ্যামিলি রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিষয়ের পরীক্ষা। শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা, কোনও পরীক্ষা কেন্দ্রে ৮০ থেকে ১০০ জনের বেশি পরীক্ষা দিতে পারবেনা। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখেই পরীক্ষা দিতে হবে সবাইকে।

[আরও পড়ুন: ‘সোনার বাংলা কি বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা দিয়ে শুরু হবে?’, শাহকে তোপ পার্থর]

এই নির্দেশ মানা কার্যত অসম্ভব বলে মনে করেন সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু। তিনি বলেন ভেন্যু না বাড়ালে কোনওভাবেই পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয় সৌগত বাবু উত্তরপাড়া গভর্নমেন্ট হাই স্কুলের শিক্ষক। এটি পরীক্ষার ‘মেন ভেন্যু’। হুগলির জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এই স্কুলে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হতে পারে। সৌগতবাবুর বক্তব্য, “উত্তরপাড়ার এই মেন ভেন্যুর এর অধীনে আছে অন্য পাঁচটি স্কুল। কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হলে এখানে যারা পরীক্ষা দেবে শুধু তারাই নয় ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে অন্য স্কুলগুলিতেও।” শিক্ষকদের একটি অংশ মনে করছে ফের পিছিয়ে যেতে পারে উচ্চমাধ্যমিক। তবে এসবের মাঝেও বেশকিছু স্কুল স্যানিটাইজেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের হেঁড়িয়া শিবপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক নীলেন্দু বাগ জানিয়েছেন, “আমাদের স্কুলে কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র হয়েছে। তবে ১৫ জুনের মধ্যে খালি করে গোটা স্কুল স্যানিটাইজ করা হবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ