BREAKING NEWS

১৭ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  বৃহস্পতিবার ১ জুন ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

প্রেমিকের সঙ্গে ছক কষে স্বামীকে খুন, স্ত্রীর পর গ্রেপ্তার মেয়েও

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: July 13, 2017 1:21 pm|    Updated: July 13, 2017 1:21 pm

Jalpaiguri Insurance employee Uttam Mohanta's daughter sweta mohanta arrested

শান্তনু কর: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে বিমাকর্মী উত্তম মোহন্তকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর স্ত্রী লিপিকা মোহন্তকে৷ জলপাইগুড়ির বাসিন্দা উত্তম মোহন্তর হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার নিহতের মেয়ে শ্বেতা মোহন্তকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ৷ তার বিরুদ্ধে পুলিশকে যথাযথ তথ্য না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, শ্বেতা জানত তাঁর মায়ের সঙ্গে অনির্বাণ রায় নামে এক যুবকের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে৷ ওই অনির্বাণকে পালাতে নাকি শ্বেতাই সাহায্য করে, জানতে পেরেছে পুলিশ৷ ওই অভিযোগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৯ জুন উত্তম মোহন্ত মারা যাওয়ার পর এক যুবককে নিয়ে সদর হাসপাতালে যায় তাঁর স্ত্রী লিপিকা৷ সেখান থেকে এক আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের কাছে গিয়ে স্বামীর ডেথ সার্টিফিকেট নেয় সে৷ স্বামীর মৃত্যুর কথা চাউর হওয়ার আগেই দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করে লিপিকা৷ এতেই সন্দেহ হয়ে প্রতিবেশীদের৷ খবর যায় পুলিশে৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উত্তমবাবুর মৃতদেহ উদ্ধার করে৷ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রাথমিকভাবে লিপিকাকে আটক করা হলেও পরে অসহযোগিতার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ পুলিশি জেরায় লিপিকা জানায়, প্রেমিক অনির্বাণই আমের রসের মধ্যে বিষ মিশিয়ে তার স্বামীকে খুন করেছে।

[ফের মনুয়া কাণ্ডের ছায়া, আমের রসে বিষ মিশিয়ে খুন স্বামীকে]

এই ঘটনায় লিপিকা মোহন্তর পাশাপাশি আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ধনঞ্জয় চতুর্বেদীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার জানান, ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত লিপিকা মোহন্তর প্রেমিক অনির্বাণ রায়ের খোঁজ চলছে। ঘটনায় মদত করার অভিযোগে এক অ্যাম্বুল্যান্স চালককেও খোঁজা হচ্ছে বলে জানায় সে।

mohanta

উত্তম মোহন্ত হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে পরতে পরতে রহস্যের গন্ধ পান তদন্তকারীরা৷ তদন্তেই উঠে আসে লিপিকার অবৈধ প্রেমিক অনির্বাণ রায়ের নাম৷ জানা যায়, স্বামীর উপস্থিতিতেই রাতের পর রাত অনির্বাণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হত লিপিকা৷ বেশ কয়েকবার ভিনরাজ্যেও গিয়েছিল তারা দু’জন৷ উত্তমবাবুর মৃত্যুর পর থেকেই পলাতক অনির্বাণ৷ তাকে খুঁজছে পুলিশ৷ লিপিকা আরও জানায়, তার স্বামীর সম্পত্তির দিকে নজর ছিল অনির্বাণের। একাধিকবার তাদের দু’জনের সম্পর্কের মধ্যে থেকে স্বামী উত্তম মোহন্তকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা অনির্বাণের মুখ থেকেই শুনেছে সে। পুলিশ সূত্রে খবর, লিপিকা মোহন্তর দাবি, সে উত্তম মোহন্তকে খুন করেনি। আমের রসের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে অনির্বাণই খুন করেছে বলে দাবি করেছে সে। এমনকী, ঘটনা আড়াল করতে অনির্বাণই আয়ুর্বেদ চিকিৎসককে ডেকে ডেথ সার্টিফিকেট লিখিয়ে দেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা চালিয়েছিল বলেও জানিয়েছে লিপিকা। সেই অনির্বাণকে পালাতে সাহায্য করে লিপিকার মেয়ে শ্বেতা, জানতে পেরেই এদিন তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ বর্তমানে পুলিশি রিমান্ডে রয়েছে লিপিকা৷ তবে লিপিকার বক্তব্য, প্রেমিক অনির্বাণই বিষ খাইয়ে খুন করে স্বামীকে৷

বিমাকর্মী খুনের ঘটনায় বারাসতের মনুয়া কাণ্ডের ছায়া দেখছেন অনেকেই৷ ছক সেই একই৷ প্রেমিকের সঙ্গে প্রণয়ঘটিত কারণে ছক কষে স্বামীকে খুন৷ উত্তম মোহন্তর অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য তাঁর স্ত্রী লিপিকার বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন স্থানীয়দের একাংশ৷ তাঁদের বক্তব্য, প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্কের মাঝে স্বামী যাতে বাধা হয়ে না দাঁড়ান, তাই পৃথিবী থেকে তাঁকে সরিয়ে দিয়েছে লিপিকা৷ লিপিকা নিজেও পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, উত্তমবাবুকে পাশের ঘরে খাটের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে একাধিকবার অনির্বাণের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েছে সে৷ প্রায় প্রতিদিনই স্বামীকে খাটের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখায় উত্তমবাবুর হাতে ও পায়ে স্থায়ী ক্ষতচিহ্ন তৈরি হয়ে যায়৷ অনির্বাণকে গ্রেপ্তার করতে পারলে এই হত্যাকাণ্ডের জট অনেকটাই খুলে যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা৷

[মন্দারমণি-উদয়পুরের বিচে দেদার বিকোচ্ছে নকল মদ, জোড়া বিপদে পর্যটকরা]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে