ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাকপুর: মাঝরাতে শ্মশানে দেহ দাহ করতে গিয়ে ফের তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়ল মৃতের পরিবার। বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ার এক শ্মশান চত্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে অশান্তিতে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত লাঠিচার্জ করে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভ দমন করতে হয়। এ নিয়ে রাতভর অশান্ত ছিল ভাটপাড়ার মুক্তারপুর শ্মশান এলাকা।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার প্রায় মধ্যরাতে। এক মৃতদেহ দাহ করার জন্য শ্মশানে পৌঁছন বেশ কয়েকজন। তা নজরে পড়তে এলাকাবাসীর মনে সন্দেহ জাগে যে এই মৃতদেহ নিশ্চয়ই করোনা আক্রান্ত কোনও রোগীর। স্রেফ সন্দেহের বশেই এলাকাবাসী জড়ো হয়ে শ্মশানে যান। পরিবারের লোকজনকে দেহ দাহ করতে বাধা দেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, করোনায় মৃত্যু হয়নি। এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। এলাকাবাসী পালটা প্রশ্ন তুলতে থাকেন, তাহলে কেন মাঝরাতে সকলের নজর এড়িয়ে দাহকাজ করতে আসা হয়েছে? এ নিয়ে দু’ পক্ষের মধ্যে তুমুল বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
[আরও পড়ুন: ঘরে ফিরলেন কফিনবন্দি রাজেশ ওরাং, শোকে ভেঙে পড়ল মহম্মদবাজারের গ্রাম]
খবর পেয়ে ভাটপাড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশকে দেখে আরও মারমুখী হয়ে ওঠে জনতা। ওই দেহ যে করোনা রোগীর নয়, তা এলাকাবাসীকে বোঝানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু কোনওভাবেই তাঁরা বিশ্বাস করতে চান না। মাঝরাতে আরও চরমে ওঠে অশান্তি। এরপর কার্যত বাধ্য হয়েই পুলিশ লাঠিচার্জ করে। তাতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় জমায়েত। অশান্তি থেমে যায়। এরপর পুলিশের হস্তক্ষেপে মুক্তারপুর শ্মশানে দেহটি দাহ করা হয়।
[আরও পড়ুন: শত্রু চিনতে ভুল! জিনপিংয়ের বদলে কিম জং উনের কুশপুতুল পোড়াল বিজেপি]
করোনা আবহে এর আগেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মৃতদেহের শেষকৃত্য সম্পন্নের সময় বাধার মুখে পড়তে হয়েছে পরিবারকে। সন্দেহ একটাই, করোনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। করোনায় মৃতদের দাহকাজে আলাদা পদ্ধতি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। তা কোথাও লঙ্ঘন করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে দাহকাজে বাধা দিয়েছেন আশেপাশের মানুষজন। ভাটপাড়ার ঘটনাও তাতেই একটি সংযোজনমাত্র। তবে বাধার মুখে পড়া মৃতের পরিবারের দাবি, সঠিক তথ্য না জেনে শুধু সন্দেহের বশে দাহকাজ নিয়ে এমন অসংবেদনশীল আচরণ মোটেই কাম্য নয়।