দেবব্রত মণ্ডল, জয়নগর: মানসিক অবসাদে দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে নিজের পোষ্যদের গুলি করে মারলেন যুবক। তারপর সেই বন্দুক থেকে গুলি চলিয়ে আত্মঘাতীও হলেন। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে জয়নগর থানার নারায়ণীতলা অঞ্চলের চৌধুরি পাড়ায়। মৃত যুবকের নাম শুভঙ্কর রায়। পুলিশের অনুমান, বিশাল অঙ্কের দেনার দায় ছিল শুভঙ্করের কাঁধে। সেই কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।
[ আরও পড়ুন: সরকারি প্রকল্পের ঘর দখল করে তৃণমূলের পার্টি অফিস! শোরগোল বর্ধমানে ]
বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই জোরালো আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় চৌধুরিপাড়ার বাসিন্দাদের। ঘুম চোখে তড়িঘড়ি তাঁরা বাইরে এসে জানতে পারেন, প্রতিবেশী শুভঙ্কর রায়চৌধুরির বাড়ি থেকে ওই আওয়াজ পাওয়া গিয়েছে। বাড়ির মধ্যে ঢুকে তাঁরা দেখতে পান, শুভঙ্কর এবং তাঁর দুই পোষ্য সারমেয়র মৃতদেহ রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে। পাশে বসে কান্নাকাটি করছেন তাঁর স্ত্রী। আর শুভঙ্করের পাশে পড়ে তাঁদের বাড়ির বৈধ দোনলা বন্দুকটি। প্রতিবেশীদের শুভঙ্করের স্ত্রী জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠে গুলির আওয়াজ পেয়ে নিচে নেমে আসেন তিনি। দেখেন স্বামী এবং তাঁর দুই পোষ্য রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছে। দুই পোষ্যকে মেরে স্বামী আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানান তিনি।
ইতিমধ্যেই খবর চলে যায় জয়নগর থানায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জয়নগর থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে শুভঙ্কর রায়চৌধুরি পেশায় অটোচালক। তাঁর বাবার আমল থেকেই একটি বন্দুক রয়েছে বাড়িতে। সম্প্রতি শুভঙ্কর দেনার দায়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সময় মতো কিস্তি না দেওয়ায় বুধবার অর্থলগ্নি সংস্থা থেকে তাঁর অটোটিও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় শুভঙ্কর মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়েন। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই অটোচালক।
[ আরও পড়ুন: সদ্যোজাতকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ, কাঠগড়ায় মা ]
শুভঙ্করের তিন বছরের এক শিশুকন্যা রয়েছে। মা, বোন, স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে তাঁর ভরা সংসার ছিল। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। যে বন্ধুকের মাধ্যমে শুভঙ্কর রায়চৌধুরি তার দুই পোষ্যকে মেরেছে এবং নিজেও আত্মঘাতী হয়েছে সেই বন্দুকটির লাইসেন্স ও অন্যান্য কাগজপত্র খতিয়ে দেখছে জয়নগর থানার পুলিশ।
ছবি: বিশ্বজিৎ নস্কর
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.