সুব্রত বিশ্বাস: ‘শুভস্য শীঘ্রম’। একথা মেনে তৃতীয় দফার লকডাউনের শুরুতেই সরকারি নির্দেশ অমান্য করেই বিয়ের আসর বসল। তাও গ্রীন বা অরেঞ্জ নয়, একেবারে রেড জোন (Red zone) হাওড়াতে। সোমবার সকালে হাওড়া গোলাবাড়ি ঘাস বাগান পানিট্যাঙ্কি এলাকার হনুমান মন্দিরে এই বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। ঘটনাস্থলে ডজন খানেক নিকট আত্মীয় উপস্থিত থাকলেও অনুষ্ঠানে করোনার সংক্রমণ আটকানোর কোনও ব্যবস্থা ছিল না বলে জানা গিয়েছে।
উপস্থিত কেউই মাস্ক ব্যবহার করেননি। বিয়ের সময়েও ছিল না সামাজিক দূরত্ব। মন্দিরে স্যানিটাইজ না করেই হয়েছে এই বিয়ে। পরিসরে একেবারে ঘেঁষাঘেঁষি করে বর-কনে ও অন্যরা এই বিবাহ সম্পন্ন করেছেন। হাওড়ার বিদায়ী কাউন্সিলর লক্ষ্মী সাহানির স্বামী সন্তোষ সাহানি ও কনের দাদার বন্ধু জানান, দুই পরিবারের দশজন আত্মীয় উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন তিনিও। মাস্ক পরে নিয়ম মেনে এই বিয়ে হয়েছে। স্থানীয় থানায় বিয়ের কার্ড দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে অনুমতিও নেওয়া হয়ে ছিল। যদিও গোলাবাড়ি থানার আইসি বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অনুমতি তো দূরের কথা পুলিশকে জানানো পর্যন্ত হয়নি। বিষয়টি প্রচণ্ড উদ্বেগের।’
[আরও পড়ুন: বেলেঘাটা থেকে বেলুড়, অবাধে ভ্রমণ করোনা আক্রান্তের ]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন আগে ঘাসবাগান এলাকার এক ব্যবসায়ী সন্তোষ সিংয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় স্থানীয় বাসিন্দা অনিতা সিংয়ের। অনিতার দাদাও হাওড়া মাছ বাজারের ব্যবসায়ী। দুই পরিবারের পক্ষ থেকে কার্ড ছাপানো ও নিমন্ত্রণ করা হয়ে গিয়েছিল লকডাউনের আগেই। তবে লকডাউন শুরু হতে বিয়ে পিছিয়ে দেওয়া হয়। ঠিক ছিল দ্বিতীয় পর্বের লকডাউন উঠলেই চার হাত এক করা হবে। কিন্তু, লকডাউনের সময়সীমা আরও বরং বেড়ে যায়। ফলে সমস্যায় পড়ে যায় দুই পরিবার।
এপ্রসঙ্গে সন্তোষ সাহানি বলেন, ‘ক্রমাগত লকডাউন বাড়তে থাকায় ছেলে পক্ষ জানায়, শুভ কাজ কতবার পিছিয়ে দেওয়া হবে? তাই বাধ্য হয়ে তৃতীয় দফায় লকডাউন শুরুর দিনেই বিয়ের দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো সোমবার সকালেই মন্দিরে হাজির হয় উভয়পক্ষ। বিয়ের সাজে হাজির হন বর-কনেও। এরপর একেবারে অনাড়ম্বর ভাবে অগ্নিসাক্ষী করে তাঁদের বিয়ে দেন পুরোহিত।’
[আরও পড়ুন: মাস্ক না পরলে মিলবে না মদ, দোকান খুললেও রাজ্যজুড়ে কড়া নিয়ম মালিকদের]
গোলাবাড়ি থানার একেবারে কাছেই এই বিয়ে হলেও দেখা যায়নি পুলিশকে। করোনার সংক্রমণের জেরে প্রথম থেকেই হাওড়াকে রেড জোন বলে ঘোষণা করা হয়। সরকারি বিধিনিষেধও জারি হয়েছে। কিন্তু, সব নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একেবারে তৃতীয় দফার লকডাউনের শুরুতেই বসে গেল বিয়ের আসর। তবে রিসেপশন পরে হবে বলে জানিয়েছে উভয়পক্ষ। এদিকে লকডাউন যে দুই হৃদয়কে আলাদা করে রাখতে পারেন না তা ফের প্রমাণ হল সোমবার।