BREAKING NEWS

২৪ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  বৃহস্পতিবার ৮ জুন ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

‘কমলালয়’ থেকে ‘নদিয়া হাউস’, রবীন্দ্রজয়ন্তীতে স্মৃতিচারণায় রাজপরিবারের সদস্যরা

Published by: Sucheta Sengupta |    Posted: May 9, 2019 3:01 pm|    Updated: May 9, 2019 6:56 pm

Members of Nadia Royal family remember Rabindranath Tagore's memory

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: অর্থের প্রয়োজনে ভাইঝির বিক্রি করা বাড়ির দলিলে সাক্ষী হিসেবে সই করেছিলেন রবি ঠাকুর৷ আজ থেকে ১০৭ বছর আগে ‘কমলালয়’ নামে কলকাতার ২নং ব্রাইট স্ট্রিটের সেই বাড়িই ঐতিহাসিক ‘নদিয়া হাউস’। দীর্ঘদিন ধরে সেই বাড়িতে বসবাস করছেন নদিয়ার রাজ পরিবারের সদস্যরা। রবীন্দ্র জয়ন্তীতে সেসব দিনের স্মৃতিই হাতড়ালেন গৃহকর্ত্রী অমৃতা রায়, গৃহকর্তা সৌমিশচন্দ্র এবং তাঁদের ছেলে মণীশচন্দ্র।

ঐতিহাসিক এই বাড়ি বেশ কয়েকবার মালিকানা বদলের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে৷ পুরনো কলকাতার পঞ্চান্ন গ্রামের অধীন এই অঞ্চলটির নাম ছিল ঘুঘুডাঙা। বাড়িটির আগের নাম ছিল ‘মেরি ভিল’। আর্মেনিয়ান গির্জার রেভারেন্ড টমাস ম্যালকম বাড়ির নাম বদল করে রাখেন ‘গুড হোপ ভিলা’৷ অর্থাভাবে ম্যালকম তাঁর প্রিয় বাড়ি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তাঁর ছেলে সুরেন্দ্রনাথকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। রাজবাড়ি সূত্রে জানা গেছে, তখন বাড়ির নাম পালটে রাখা হয় ‘কমলালয়’৷ সেই বছরই সত্যেন্দ্র-সুরেন্দ্র বাড়িটি উপহার দিলেন প্রমথ চৌধুরি ও ইন্দিরাদেবীকে৷ তাঁরাও এই কমলালয়ে উঠে আসেন৷ ইন্দিরাদেবী ও প্রমথ চৌধুরির সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল কবিগুরুর৷ তাই রবীন্দ্রনাথ নিজে বহুবার কমলালয়ে গিয়েছেন। প্রথমবার তিনি কৃষ্ণনগরে আসেন ১৮৮৬ সালে৷

[আরও পড়ুন : রবীন্দ্র জন্মোৎসবে নব উপস্থাপনা, ৩ নারীর সম্মিলনে ‘মানবকন্যা’ বিশ্বভারতীতে]

কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি থেকে রাজত্ব সামলানোর সময়ে নদিয়ার মহারাজা ক্ষৌণীশচন্দ্র রায় ১৯১২ সালে ‘কমলালয়’ কিনে নেন। বাড়ির নাম দেন ‘নদিয়া হাউস’৷ এই বাড়ির সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রাজবাড়ির বর্তমান প্রজন্মের প্রতিনিধি মণীশচন্দ্র রায় বলেন, ‘গুরুদেব মহারাজা ক্ষৌণীশচন্দ্রকে পটল নামে ডাকতেন। সেই সম্বোধনেই ১৯১২ সালে তিনি চিঠি লেখেন। ইন্দিরাদেবী অর্থকষ্টে কমলালয় বিক্রি করে দেবেন, সেই বাড়িটা কেনার জন্য  গুরুদেব মহারাজাকে বলেন। মহারাজা সেই সময় বাড়ি না কিনে প্রয়োজনীয় টাকা দিয়ে সাহায্যের প্রস্তাব দেন। কিন্তু গুরুদেব তাতে রাজি ছিলেন না৷ তিনি জানান, ওঁরা বাড়িটা বিক্রিই করতে চায়৷ তখন মহারাজা বাড়িটা কেনেন। দলিলে গুরুদেবের সইও ছিল৷’

tagore's signature

রবীন্দ্রনাথকে ঘিরে আরও নানা স্মৃতি রয়েছে রাজপরিবারের সদস্যদের৷ তাঁরা জানাচ্ছেন, বিষ্ণুমহলে সঙ্গীতের জলসায় তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন৷মহারাজা ক্ষিতিশচন্দ্র সামনে রবি ঠাকুর গান ধরেছিলেন, বাঁশি কেন বাজে না…। 

[আরও পড়ুন :‘আপনার থাপ্পড় আমার কাছে আশীর্বাদ’, পুরুলিয়া থেকে মমতাকে পালটা মোদির]

২৫ বৈশাখের আগে ২নং ব্রাইট স্ট্রিটের বাড়িতে কবিগুরুর ছবি এবং তাঁর স্মৃতিবিজড়িত যাবতীয় ঐতিহাসিক জিনিসপত্র সংস্কার কাজ চলে। যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করা হয়। ‘নদিয়া হাউস’ হয়ে ওঠা ‘কমলালয়’এর ছত্রে ছত্রে থাকা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে তাই প্রতিবছর স্মৃতির তরণী বেয়ে ফিরে যান অমৃতা, সৌমিশচন্দ্র, মণীশচন্দ্ররা।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে