বাবুল হক, মালদহ: আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে…! বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে কিংবা কোচবিহারের শিল্পী আব্বাস উদ্দিন আহমেদের ‘আল্লাহ মেঘ দে’ গান নয়, এবার বৃষ্টি চেয়ে ফাঁকা মাঠে রোদে দাঁড়িয়ে নমাজ পাঠ করলেন মালদহের চাঁচোল মহকুমার হাজার খানেক ধর্মপ্রাণ মানুষ।
মঙ্গলবার দুপুরে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ও চাঁচোলের সংযোগস্থল কনুয়ার বিএড কলেজ মাঠে জমায়েত করেন বহু মানুষ। তাঁরা বৃষ্টির জন্য বিশেষ নমাজ পড়েন। সেই নমাজ পাঠে অংশ নেন কনুয়া, রহমতপুর, ভবানীপুর, কাবিলখানি ও দেবীগঞ্জ-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। নমাজে ইমামতি করেন মৌলানা সিকান্দার আলি। তিনি কনুয়ার একটি বেসরকারি মাদ্রাসার শিক্ষক। মৌলানা সিকান্দার সাহেব বলেন, “আমাদের পাপ হয়তো বেশি হয়ে গিয়েছে। তাই আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা নমাজের মাধ্যমে দোয়া করলাম, আল্লাহ’র কাছে ক্ষমা চাইলাম। আমরা একত্রিত হয়ে নমাজ আদায় করে আল্লাহ’র কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করলাম।”
[আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ভিজল কলকাতা-সহ একাধিক জেলা, কমবে তাপমাত্রা? কী জানাল হাওয়া অফিস?]
নমাজ পাঠ শেষে মুসল্লিদের একটু তৃষ্ণা মেটানোর জন্য ওআরএস জল বিতরণ করেন কনুয়া-ভবানীপুর কেবি কেয়ার হাজি নবাব মাদ্রাসার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। উল্লেখ্য, বৃষ্টির জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা বিশেষ নমাজ পাঠ করতে পারেন। যার উল্লেখ রয়েছে শরিয়তে। এক পশলা বৃষ্টির জন্য দেশের মানুষ যখন সংকটময় অবস্থায় থাকবেন, তখন বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। এমনটাই দাবি মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের। তাঁরা জানান, ইসলামের পরিভাষায় বৃষ্টির এই বিশেষ নমাজকে ‘সালাতুল ইসতিসকা’ বা বৃষ্টিপ্রার্থনার নামাজ বলা হয়। খোলা ময়দানে আজান-ইকামত ছাড়া উঁচু স্বরে কেরাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। নমাজের পর ইমাম খোতবা দেবেন। তারপর দু’হাত তুলে মিনতির সঙ্গে দোয়া করবেন।
এদিন চাঁচোলে এক মৌলানা বলেন, “আল্লাহ’র ইচ্ছার বাইরে কিছুই হয় না। রোদ-বৃষ্টিও তাঁরই রহমত। তিনিই আল্লাহ, যিনি বাতাস পাঠান, তা মেঘমালাতে সঞ্চালিত করেন।” রাজ্যজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। মালদহের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টির দেখা নেই। তাপপ্রবাহে কাহিল মানুষজন। বৃষ্টির অভাবে নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল। চাঁচোলের এই নমাজের ইমাম মৌলানা সিকান্দার আলি বলেন, “হয়তো আমরা বেশি পাপ করে ফেলেছি! তাই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমরা নমাজ আদায়ের মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা করলাম। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমা করবেন। তাঁর ইচ্ছায় বৃষ্টি হবে।”