ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: চালকের মনে পড়ল কাজ আছে। আচমকা তিনি স্কুলবাস থেকে নেমে গেলেন। স্টিয়ারিং ধরিয়ে দিলেন ছেলের হাতে। আনাড়ি হাতে পড়তেই গাড়ি বেসামাল। দ্রুতগতিতে পড়ুয়াবোঝাই বাস নিয়ে সোজা বিদ্যুতের পোস্টে ধাক্কা। অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন বোলপুরের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ১৩ জন ছাত্রছাত্রী। চালকের ছেলে মনিমুল শেখকে আটক করেছে পুলিশ ।
[মৃত পুলিশ অফিসারই সাক্ষী! সিউড়ি আদালতে শোরগোল]
[শ্বাসনালীতে ছোলা আটকে প্রাণসংশয় শিশুর, বিপণ্মুক্ত করল এসএসকেএম]
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রান্তিকের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ছুটি হওয়ার পর একটি বেসরকারি ম্যাক্সিবাস বোলপুর থেকে নানুরের পাপুড়ি যাচ্ছিল। বাসের চালক ছিলেন শেখ আমাল। তাঁর বাড়ি নানুরের যজ্ঞনগরে। অভিযোগ বোলপুরের শেষ প্রান্তে আরতি সিনেমা হলের কাছে কাজ আছে বলে চালক নেমে যান। এরপর স্টিয়ারিং হাতে নেয় চালকের ছেলে। সে গাড়ি চালাতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে বাসটির গতি বেড়ে যায়। সে সময় বাসে থাকা ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের মধ্যে গল্পগুজবে ব্যস্ত ছিল। আচমকা স্কুলবাস মুলুকের মিরেপাড়ার কাছে নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং রাস্তার পাশে পরপর দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা দেয়। এরপর বাসটি জল প্রকল্পের একটি পাইপে ধাক্কা মেরে গাছে আটকে যায়। গাছে না আটকালে বাসটি হাইড্রেন খালে গিয়ে পড়ত। একই ভাবে বিদ্যুতের তার পড়লেও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে জানিয়েছেন স্থানীরা। প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, বাসটি দ্রুত গতিতে আসছিল। আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে রাস্তার পাশে ইলেকট্রিক পোস্টে ধাক্কা মারে এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে গাছে আটকে যায়। গ্রামবাসীরা তাদের উদ্ধার করে গাড়িতে করে হাসপাতালে পাঠায়।
[উলটপুরাণ, আইনজীবীর গাড়িতে ধাক্কা মেরে তাঁকেই খুনের হুমকি ডিএসপির]
ঘটনায় ১৩ জন ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে চার জন বালিকা এবং ন’জন বালক। একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে অন্যত্র পাঠানো হয়। আহত ছাত্রী অনিন্দিতা রায়চৌধুরী বলে, আমাল কাকু কাজ আছে বলে নেমে যায়। তাঁর ছেলে গাড়ি চালাচ্ছিল, আমরা সবাই গল্প করছিলাম। এমন সময় দুর্ঘটনা। অভিভাবক মতিউর রহমানের কথায়, চালক নেমে গিয়েছিলেন। তাঁর ছেলে প্রচণ্ড গতিতে চালাচ্ছিল। বাস খালে পড়ে গেলে বা বিদ্যুতের তারে স্পর্শ করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। জেলাশাসক পি মোহন গান্ধী, মহকুমাশাসক শম্পা হাজরা, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও চলে আসেন ঘটনাস্থলে। জেলাশাসক জানান, বাস এবং বাসের চালককে আটক করা হয়েছে। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।