নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: ফের বিতর্ক দানা বাঁধল মতুয়া ঠাকুরবাড়ির আঙিনায়। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে সমর্থন দেওয়ার আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিতে চান মতুয়া মহাসংঘের প্রধান বড়মা বীণাপাণি দেবী। সোমবার শতায়ু বড়মার সই করা চিঠিটি সংবাদমাধ্যমের সামনে আনলেন ঠাকুরবাড়িরই আরেক সদস্য বিজেপি নেতা শান্তনু ঠাকুর। এই চিঠি ঘিরে ফের এ রাজ্যের মতুয়া রাজনীতিতে নতুন মোড়।
একশো ছুঁইছুঁই ঠাকুরবাড়ি তথা মতুয়া মহাসংঘের প্রধান বীণাপাণি দেবী। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বিশেষ স্নেহধন্য। এবং বীণাপাণি দেবীও বড় শ্রদ্ধার মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তাই অভিভাবকের মতোই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি আবেদন জানিয়েছেন বড়মা। ইস্যু অবশ্য বিতর্কিত। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে সমর্থন দান। সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের প্রধান উপদেষ্টা বড়মা বীণাপাণি দেবীর সই সম্বলিত একটি চিঠি সোমবার সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন ঠাকুরবাড়ির আরেক সদস্য শান্তনু ঠাকুর। তাঁর দাবি, বড়মা ওই চিঠিটি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে। চিঠিতে তাঁর আবেদন, রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬ পাশ করাতে যেন তৃণমূল সাংসদরা যেন সমর্থন দেন। পাশাপাশি তিনি এও উল্লেখ করেন, বহু বছর ধরেই মতুয়া সম্প্রদায় এই নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার নিয়ে লড়াই করে আসছে। এই অধিকার থেকে যাতে তাঁরা বঞ্চিত না হন, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই তৃণমূল নেত্রীর প্রতি এই বার্তা তাঁর। এপ্রসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁকে দেওয়া মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পূর্ব প্রতিশ্রুতির কথাও।
বিধায়ক খুনের প্রতিবাদে রেল অবরোধ মতুয়াদের, বিপাকে নিত্যযাত্রীরা
এই চিঠি তুলে ধরায় রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়বে, তা আঁচ করেই ঠাকুরবাড়ির বিজেপি নেতা শান্তনু ঠাকুরের দাবি, ঠাকুরবাড়িকে রাজনীতিমুক্ত করতে হবে। বড়মার সই করা চিঠি নিয়ে অবশ্য পালটা শান্তনু ঠাকুরকে একহাত নিয়েছেন ঠাকুরবাড়ির আরেক সদস্য তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তাঁর দাবি, বড়মা এখন ভালো করে কথাই বলতে পারেন না। তার ওপর বয়সের ভারে তাঁর স্মৃতিশক্তি একেবারে ক্ষীন হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে তিনি চিঠিতে সই করলেন, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তদন্তের দাবি তুলেছেন মমতাবালা ঠাকুর। তাঁর কথায়, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হলে বিপদে পড়বেন মতুয়া ভাইবোনেরাই। অসমের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে, যা কাম্য নয় মোটেও। মাত্র কয়েক দিন আগেই ঠাকুরনগরের প্রকাশ্য জনসভায় নাগরিকত্ব বিল ইস্যুতে তৃণমূলের সমর্থন চেয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার আরও একধাপ এগিয়ে বড়মার আরজি চিঠি নিয়ে তৃণমূলের মতুয়া ভোটব্যাংকে থাবা বসাতে চাইছে বিজেপি, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।