পলাশ পাত্র, তেহট্ট: বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হল সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। এখনও বাকি ছ’দফা। লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রচারও চালাচ্ছে সবদল। এসবের মাঝে কিছুটা ব্রাত্য কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচন। বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হওয়ার পর কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনের দিনই কৃষ্ণগঞ্জের উপনির্বাচনের দিন ধার্য হয়েছে। তবে এই উপনির্বাচন নিয়ে কার্যত কোনও উন্মাদনাই নেই কারও মধ্যে। ফোকাসে শুধুই লোকসভা নির্বাচন।
[আরও পড়ুন:ভোটারদের সুস্থ রাখতে তৃণমূলের প্রার্থীর ‘প্রেসক্রিপশন’ সোয়াবিনের বড়ি]
রাজ্যের রাজনৈতি প্রেক্ষাপটে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। কারণ, ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই এলাকা। তথ্য অনুযায়ী, নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের নাম দেওয়া কৃষ্ণগঞ্জই আজকের কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র। দীর্ঘদিন এই এলাকা থেকে শাসনকার্য সামলাতেন তিনি। এছাড়াও বহু বিখ্যাত মানুষের বাস ছিল এই এলাকায়। এমনকী, ১৮৬২ সালে শিয়ালদহ থেকে ভায়া রানাঘাট হয়ে গেদের ওপর দিয়ে দর্শনা পর্যন্ত প্রথম রেলপথ চালু হয়। যা বাংলার প্রথম রেলপথ।
যদিও কালের নিয়মে ঐতিহ্য ম্নান হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বাধীনতার পূর্বে যতটা ঐতিহ্যশালী ছিল ওই এলাকা, পরবর্তী সময়ে ততটাই পিছিয়ে পড়েছে কৃষ্ণগঞ্জ। অভিযোগ, দিনে দিনে দুষ্কৃতীমূলক কার্যকলাপের আখড়া হয়ে উঠেছে ওই এলাকা। তার সর্বশেষ নিদর্শন বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসকে খুনের ঘটনা। তাই, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার নির্বাচনের গুরুত্ব অনেকখানি, দাবি রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু উপনির্বাচন নিয়ে কার্যত কোনও হেলদোলই নেই সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক নেতাদের৷আলাদা করে কোনও প্রচার নেই কৃষ্ণগঞ্জের নতুন বিধায়ককে বেছে নেওয়ার জন্য৷
[আরও পড়ুন: জ্বলন্ত অবস্থায় গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপ খুলে দুর্ঘটনা, বাঁকুড়ায় অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ৭]
এই পরিস্থিতি মেনেও নিয়েছন রাজনৈতিক দলগুলি। লোকসভা ভোটের উন্মাদনার মাঝে উপনির্বাচনের ম্রিয়মাণতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী আশিস বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, ‘লোকসভায় আমাদের প্রার্থী নিয়ে সমস্যা হওয়ায় সবাই তা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল।’ এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস প্রার্থী বিজয় বিশ্বাস বলেছেন, ‘সকলে এখন লোকসভা নিয়ে চিন্তা করছে। তাই উপনির্বাচন নিয়ে আলোচনা কম।’ তৃণমূল প্রার্থী প্রমথরঞ্জন বসু হাসতে হাসতে জানান, ‘লোকসভা ভোটের জন্য আড়ালে পড়ে গিয়েছে এই উপনির্বাচন। আপনারাই দেখুন কীভাবে সকলকে জাগিয়ে তোলা যায়।’ যদিও সিপিএম প্রার্থী মৃণাল বিশ্বাস অবশ্য কিছুটা অন্যপথে হেঁটে দাবি করছেন, ‘কোনও উদাসীনতা নেই। প্রচার চলছে। মানুষ বিজেপিকে চাইছে না, সেটাও বুঝতে পারছি।’