পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ আজ রইল সেনশর্মা বাড়ির দুর্গাপুজোর কথা।
শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: প্রথমাতেই দেবীদুর্গার বোধন হয় সুতির জমিদার ভেইজি বাড়িতে। অরাঙ্গাবাদের দহরপাড়া ‘ভেইজি’ বা সেনশর্মা বাড়ির দুর্গাপুজো এবছর ৩০৮ বছরে পা দিল। এই পরিবারের দেবী দুর্গার মূর্তির সঙ্গে দশভুজার প্রথাগত মূর্তির ফারাক রয়েছে। দেবী সিংহের ওপর দণ্ডায়মান নন। দেবী দুর্গা শ্বেতশুভ্র নরসিংহমুখী উপর অবস্থান করেন। এই পুজোর প্রচলন করেন জমিদার চমৎকার সেনশর্মা। সেই থেকে বৈষ্ণবমতেই হয়ে আসছে এই পুজো।
[অষ্টধাতুর কনক দুর্গা পূজিত হন চিল্কিগড় রাজবাড়িতে]
অরঙ্গাবাদের বিত্তশালী সেনশর্মা পরিবার নবাবের খুব ঘনিষ্ঠ ছিল। নবাবের কাছে সেনশর্মা ভাইরা ‘সেন ভাইয়া’ নামে পরিচিত ছিলেন। সেন ভাইয়া থেকে পরবর্তীতে ভাষা বিকৃত হয়ে আসে ‘ভেইজি’। মথুরাচন্দ্র সেন শর্মা ছিলেন নবাবের নায়েব৷ মথুরা চন্দ্রের ছেলে চমৎকার সেনশর্মা। চমৎকারের কোনও সন্তান না থাকায় তিনি শ্যালিকার পুত্র বগলাচরণকে দত্তক গ্রহণ করেন।
[রাত পোহালেই দেবীপক্ষের সূচনা, তর্পণে পিতৃপুরুষদের স্মরণ]
প্রাচীন বনেদি পরিবারের পুজো রক্ষার স্বার্থে তিনি এই দত্তক গ্রহণ করে ছিলেন বলে জানা যায়। বৈষ্ণব মতে এই পরিবারের পুজো পরিচালিত হয়। প্রথমায় দেবীর চক্ষুদানের পর হয় বোধন। চলে চণ্ডীপাঠ। সন্ধ্যায় চলে আরতি। বৈষ্ণব ধর্ম অনুসারে পুজোর কটা দিন এই পরিবারে নিরামিষ ভোজন চলে। গঙ্গা থেকে জল না এনে মন্দিরের চাতাল কেটে গর্তের মধ্যে থেকে জল নিয়ে ঘট ভরা হয়। এই জলকে জমিদার বাড়ির সদস্যরা খুবই পবিত্র বলে মনে করেন৷
[পুজোতেও সিক্যুয়েল, উষ্ণায়ন প্রতিকারে এ মণ্ডপে শিল্পীর ভাবনা সবুজায়ন]