Advertisement
Advertisement

Breaking News

স্পেশ্যাল ট্রেন

ভাড়া দিতে অক্ষমদের তুলে দিচ্ছে পুলিশ, দিল্লির অভিজ্ঞতা বর্ণনা স্পেশ্যাল ট্রেনে ফেরা যাত্রীর

শুধু জল খেয়ে কাটছিল দিন।

People returning from Delhi to Bengal narrates horror
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:May 14, 2020 1:51 pm
  • Updated:May 14, 2020 1:51 pm

সুব্রত বিশ্বাস: প্রযুক্তির জেরে অনেকটাই ছোট হয়ে গিয়েছিল দুনিয়া। চাইলেই হিল্লি-দিল্লি করে বেড়ানোটা তেমন কোনও ব্যাপারই ছিল না। তবে চেনা পৃথিবী পালটে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে গণপরিবহণ। আচমকাই যেন বাড়ি ফেরা হয়ে উঠেছে কোনও অভিযানের চাইতেও কঠিন। এহেন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে আটকে পড়া ৯৩৬ জন যাত্রী নিয়ে প্রথম স্পেশ্যাল ট্রেনটি হাওড়া পৌঁছেছে। বাড়ি ফিরতে পেরে আনন্দিত সকলেই। তবে ‘বিদেশে’ ফেলে আসা এক কষ্টকর অধ্যায় মনে করে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি অনেকেই।

[আরও পড়ুন: মিলবে ৩ বছর কাজ করার সুযোগ, আম জনতার জন্য নয়া ভাবনা ভারতীয় সেনার]

প্রায় ৫০ দিন পর হাওড়া স্টেশনে দিল্লি থেকে কোনও যাত্রীবাহী ট্রেন এসে পৌঁছায়। ট্রেনে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি গ্রাহ্য না করা হলেও, হাওড়া আসার পর নিরাপদ দূরত্ব রেখে জত্রীদের নামার ব্যবস্থা করে আরপিএফ ও জিআরপি কর্মীরা। দূরের যাত্রীদের পৌঁছাতে হাওড়ায় এসবিএসটিসি, এসটিসির বাসের ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার। এছাড়া বেশ কিছু হলুদ ট্যাক্সিও মজুত রাখা হয়েছিল। যাতে দূর জেলাগুলিতে পৌঁছাতে মানুষজনের অসুবিধা না হয়। আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে রিপোর্ট দেওয়া হয় যাতে বাড়ি ফিরতে তাঁদের অসুবিধার মধ্যে পড়তে না হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাজধানী ও তার আশপাশ ও দূরে আটকে পড়া মানুষজন এদিন বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি। দিল্লিতে আটকে থাকা মানুষজনের অনেকেই পরিযায়ী শ্রমিক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী। তাঁরা রাজধানী রক্সপ্রেসের সমান ভাড়া দিয়েই বাড়ি ফেরেন বাধ্য হয়ে। টিকিট কেটে ফিরলেও অনেকেরই হাতে বাড়ি ফেরার মতো টাকা নেই। তবুও খুশি তাঁরা। হাবড়ার এক বাসিন্দার কথায়, তিনি দিল্লির একটি বসতির ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। ভাড়া দিতে না পারায় পুলিশ দিয়ে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। রেশন পর্যন্ত দেয়নি কেউ। খাবারের অভাবে শুধু জল খেয়ে কাটাচ্ছিলেন সপরিবারে। বাড়িতে ফিরে আসা ছাড়া উপায় ছিল না বাঁচার। ঘর ফেরতাদের বেশিরভাগই বাঙালি। করোনার জেরে চরম দুর্দিন চলছে রাজধানীতে। তাই বাঙলাতেই ফিরে আসতে চলেছে কাতারে কাতারে মানুষ বলে যাত্রীরা জানান। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনে সামাজিক দূরত্ব রাখার কোনও ব্যবস্থা রাখেনি রেল। সব বার্থে যাত্রী তোলা হয়। এক কোচে চারটি শৌচালয়, ছটি বেসিন যা সবাই ব্যবহার করছেন বাধ্য হয়েই।

Advertisement

এদিকে, গতকাল বা বুধবার ৯৮৮ জন যাত্রী নিয়ে হাওড়া থেকে দিল্লি অভিমুখে যাত্রা করেছিল দ্বিতীয় স্পেশাল ট্রেনটি। তার বহু যাত্রীকে আটকে থাকতে হচ্ছে দিল্লি স্টেশনেই। যাওয়ার মতো পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় দিল্লি স্টেশনে আটক পড়েন অসংখ্য যাত্রী। শুধু তাই নয় হায়দরাবাদ, মুম্বাই, চ্চেন্নাই থেকে আসা মানুষজন একইভাবে আটক পড়েন সেখানে। স্বাস্থ্যপরীক্ষায় উতরে গেলে বেরনোর অনুমতি মিলছে। সন্দেহজনকদের পাঠানো হচ্ছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। গন্তব্যে ফিরেও শান্তি পাছে না মানুষ। শ্রমিক স্পেশ্যাল না পেয়ে, বহু ভিন রাজ্যের শ্রমিক পরিবার নিয়ে এই ট্রেনে যাত্রা করেন। শোভাবাজার এলাকের ভাড়া বাড়িতে থাকেন রামপ্রবেশ সিং। আলীগড় এলাকায় বাড়ি। প্রাইভেট সংস্থার এই কর্মী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বুধবার হাওড়া থেকে ট্রেনে চড়েন। দিল্লি ফিরে বাড়ি ফিরতে পারছেন না গাড়ি না পাওয়ায়। গয়না বন্ধক দিয়ে রাজধানীর ভাড়া দিয়েই টিকিট কেটে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার আগে এহেন বিপত্তিতে জেরবার মানুষ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: স্পেশাল ছাড়া ৩০ জুন পর্যন্ত অন্য ট্রেন না চালানোর সিদ্ধান্ত রেলের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ