শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি : চিতার হাত থেকে মালকিনের প্রাণ বাঁচাতে ময়দানে ‘টাইগার’। শেষপর্যন্ত ভয়ে পালাল চিতাবাঘটি। শক্তি বলুন কিংবা ক্ষমতা, চিতাবাঘের থেকে অনেক এগিয়ে বাঘ বা টাইগার। তবে এ ক্ষেত্রে ‘টাইগার’ কিন্তু বাঘ নয়, পোষ্য কুকুর। যে কিনা নিজের মালকিনের প্রাণ বাঁচাতে চিতাবাঘের সঙ্গে পর্যন্ত লড়াই করল! সারময়ে যে কতটা প্রভুভক্ত, ফের তার প্রমাণ মিলল।
দার্জিলিং পাহাড় থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে সোনাদা ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম নয়াগাঁও। চা বাগান অধ্যুষিত ওই এলাকায় মাঝেমধ্যেই দেখা মেলে চিতার। নয়াগাঁওতে মেয়ে ও স্বামীর সঙ্গে থাকেন অরুণা লামা। তাঁদের সঙ্গী একটি কুকুরও। বাড়ির পাশেই মুরগির খামার। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে আচমকা খামার থেকে মুরগির চিৎকার শুনতে পান অরুণা লামা। খামারে গিয়ে প্রথমে কিছু দেখতে পাননি। বেরোনোর সময় অন্ধকারের মধ্যে জ্বলজ্বল করা দুটি চোখ দেখতে পান। কিন্তু অরুণা যখন পালাতে যান, তখন দেখেন, খামারের দরজাটি বন্ধ৷ ততক্ষণে ওই মহিলার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘটি। এদিকে মালকিনের চিৎকার শুনে ছুটে আসে চার বছরের পোষ্য মনগ্রেল প্রজাতির কুকুর ‘টাইগার’। চিতাবাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সারমেয়টি। শুরু হয়ে যায় লেপার্ড আর ‘টাইগার’-এর লড়াই। সেই সুযোগে কোনওমতে ঘটনাস্থলে থেকে পালান অরুণা। এদিকে শেষপর্যন্ত সারমেয়ের সঙ্গে লড়াইয়ের হেরে পালিয়ে যায় চিতাবাঘটি।
চিতাবাঘের আক্রমণে গুরুতর জখম অরুণা লামাকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় সোনাদা ব্লক হাসপাতালে। পরে স্থানান্তরিত করা হয় দার্জিলিং সদর হাসপাতালে। চোখ-সহ ওই মহিলার শরীরে একাধিক জায়গায় গুরুতর গভীর ক্ষত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অরুণাদেবীর মেয়ে স্মৃতি লামা বলেন, “টাইগার না থাকলে হয়তো মাকে আর ফিরে পেতাম না।” ঘটনার পরই চিতাটিকে ধরতে এলাকায় খাঁচা পেতেছে বনদপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.