সুভাষচন্দ্র দে (ফাইল ফোটো)
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: সোমবার যেখানে দেহ উদ্ধার হয়েছিল তার কিছুটা দূর থেকে পাওয়া গেল সুভাষচন্দ্র দে-র কাটামুন্ডু ও দুটি পা। মঙ্গলবার বিকেলে দুবরাজপুর থানার খোওয়াজ মহম্মদপুর থেকে সেগুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
এপ্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানান, পুলিশ হেফাজতে থাকা শেখ মতিউর ও সোনালিকে জেরা করে ওই জায়গার সন্ধান পাওয়া যায়। তারপর দুবরাজপুর থানার খোওয়াজ মহম্মদপুরে ধড় থেকে আলাদা করা মুন্ডু ও কাটা পা দুটি উদ্ধার হয়। সেগুলিকে পরীক্ষার জন্য সিউড়ি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গত ১৮ অক্টোবর নানুরের বাসাপাড়ার বাসিন্দা সুভাষচন্দ্র দে তাঁর প্রেমিকা সোনালি বিবির বাড়িতে এসে খুন হন। রবিবার প্রেমিকের খুনের অভিযোগে সোনালি ও তার স্বামী মতিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।জেরায় প্রথমে খুনের কথা স্বীকার সোনালি বিবি। পরে ভেঙে পড়ে মতিউরও। দু’জনেই জানিয়েছিল সুভাষের দেহ লোপাটের জন্য প্রথমে দেহ থেকে মুন্ডু আলাদা করা হয়। পরে কাটা হয় পা দুটি। এরপর বাকি দেহটি বাড়ির পিছনে কিছুটা দূরে বাঁশঝাড়ের কাদা মাটিতে পুঁতে রাখে তারা। আর কাটামুন্ডু ও পা দুটি বস্তায় ভরে সুভাষের বাইক করে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেওয়া হয় অজয়ের নদে।
প্রথমে বিষয়টি স্বীকার করেনি ধৃতরা। উলটোপালটা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বোকা বানাচ্ছিল। তবে মঙ্গলবার বিকেলে শেষপর্যন্ত ভেঙে পড়ে সোনালি। জানিয়ে দেয় মুন্ডু আর পায়ের হদিশ। তার আগে সোমবারের মতন মঙ্গলবার সকালেও অজয় নদের জলে নেমে চটের বস্তার সন্ধান করেন আসানসোল থেকে আসা চার ডুবুরি। কিন্তু, তখন কোনও কিছুই খুঁজে পাননি তাঁরা। বিকেলে সুভাষবাবুর কাটামুন্ডু ও পা উদ্ধার হয় ধড় যেখানে ছিল তার থেকে দুশো মিটার দূরে আনারুল বলে এক ব্যক্তির ধানের জমিতে।
আজকের এই ঘটনার পর মতিউরকে ফের নতুন করে জেরার পরিকল্পনা করছে পুলিশ। কারণ এবার লোহার যে কুড়ুল দিয়ে দেহটিকে টুকরো করা হয়েছিল তার হদিশ করবে তারা। সাধারণ মধ্যবিত্ত চাষী মতিউর দেহের টুকরো যেভাবে ফেলেছে তাতে শুধু দুঁদে পুলিশ অফিসারদের নয় পুলিশ কুকুরকেও ঘোল খাইয়ে দিয়েছে। রবিবার মতিউরকে গ্রেপ্তারের পর তার বয়ান মতো অজয়ের যে ঘাটে সে গিয়েছিল সোমবার ঠিক সেখানেই পুলিশ কুকুর গিয়ে থামে। পুলিশের কর্তারা মনে করছেন, যেহেতু আগের রাতে মতিউর ওই ঘাটে গিয়েছিল তাই তার গন্ধে পুলিশ কুকুর সেখানে গিয়ে থমকে গিয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.