Advertisement
Advertisement
চিংড়ি

জলের দরে বিকোচ্ছে চিংড়ি-কাঁকড়া, লকডাউন উপেক্ষা করে বাজারে ভিড় মৎস্যপ্রেমী বাঙালির

তবে কম দামে মাছ বিক্রি হওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে মাছ চাষিদের।

Prawn sells in low price in South 24 Pargana's Canning market
Published by: Sayani Sen
  • Posted:April 19, 2020 6:36 pm
  • Updated:April 19, 2020 6:36 pm

দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ১২০০ টাকার ‘টাইগার প্রন’ বাগদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। ১০০০ টাকার কাঁকড়া বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। ৯০০ টাকার গলদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। লকডাউনের বাজারে দামি মাছ, কাঁকড়া জলের দরে বিক্রি হওয়ায় ভিড় বেড়েছে ক্যানিং বাজারে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার তথা রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ মাছ বাজার হল ক্যানিং মাছ বাজার। মাতলা নদীর পাড়ে অবস্থিত এই মাছ বাজারটি। মাতলা নদী যখন নাব্যতায় পরিপূর্ণ ছিল তখন এই মাছ বাজারে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা হত। সারা রাত ধরে চলত এই মাছ বাজার। বর্তমানে সেই মাছ বাজারে অনেকটাই ভাঁটা পড়েছে। কিন্তু এই লকডাউনের  সময় সেই মাছ বাজারে ভিড় জমিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। কলকাতা বা শহরতলির বিভিন্ন এলাকা থেকে সস্তায় মাছ কিনতে তাই ভিড় জমাচ্ছেন বহিরাগতরা। আর তার ফলে করোনার মত মহামারি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। প্রশাসন শত চেষ্টা করেও ভিড় কমাতে পারছে না কোনভাবেই।

ক্যানিং নদীর আশেপাশে প্রচুর মাছের ভেড়ি আছে। ক্যানিং, গোসাবা, বাসন্তী, মালঞ্চ, মিনাখা, জীবনতলা ও কুলতলি-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ফিশারির বাগদা ও গলদা আসে এইসব এলাকায়। লকডাউনের বাজারে সেই সব মাছের জোগান বাড়ায় ভিড় বেড়েছে বহিরাগত ক্রেতাদের। সুন্দরবনের কাঁকড়ার চাহিদা সারা বিশ্বজুড়ে। একই রকমভাবে সমান কদর আছে এখানকার বাগদা চিংড়িরও। করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার আগে চিন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর-সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হত সুন্দরবনের কাঁকড়া। তাছাড়া বিভিন্ন দেশে যেত এখানকার ফিশারির বাগদা ও চিংড়ি। যথেষ্ট ভাল দামে সেগুলি বিক্রিও হত। আর সেই কারণে বাগদা, গলদা ও কাঁকড়ার দাম এত বেশি ছিল যে সেগুলি মধ্যবিত্তের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকত। শুধু তাই নয় সঠিক মাপের বাগদা, গলদা ও কাঁকড়া এলাকায় পাওয়া যেত না। কারণ, স্থানীয় বাজারে আসার আগেই তা আড়তদারের হাত ঘুরে চলে যেত বিদেশের বাজারে। এবার এসেছে সেই সুযোগ। বলা যেতে পারে করোনা সেই সুযোগ করে দিয়েছে। তাই এলাকার মাছ আর বাইরে যেতে পারছে না। ফলে স্থানীয় বাজারগুলিতে যথেষ্ট সস্তা হয়েছে এসব মাছের দাম।

Advertisement

[আরও পড়ুন: লকডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড পিয়ালি স্টেশনে, ভস্মীভূত ১৫টি দোকান]

এই দুর্মূল্যের বাজারে মাছ এত সস্তা হওয়ায় ক্রেতারাও কিনছেন হু হু করে। তবে মাথায় হাত পড়েছে মাছ চাষিদের। মাছ চাষি আক্রম লস্কর বলেন, “আগে যেসব চিংড়ি ১০০০-১২০০ টাকায় বিক্রি করতাম সেগুলো এখন ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। মাছ বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা, চাষের খরচও উঠছে না। ফলে যথেষ্ট আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে আমাদের মত মৎস্যজীবীদেরকে। যাঁরা মূলত ফিশারির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন তাঁদের অবস্থাও সঙ্গীন। সরকার যদি এই সমস্ত মৎস্যজীবীদেরকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করত তাহলে উপকৃত হতাম।” এদিকে, বহিরাগতরা এলাকায় ঢোকায় করোনা আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। ক্যানিংয়ের মহকুমা শাসক ও পুলিশ আধিকারিকরা মাছ বাজারের ভিড় কমাতে বাজারের বাইরে অস্থায়ী বাজারের ব্যবস্থা করেছেন। তবে তাতেও কোনভাবে ভিড় কাটছে না এই মাছ বাজারের। তাই লকডাউনের ফলে কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: কার শরীরে লুকিয়ে করোনা, হদিশ পেতে নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ বাংলার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ