Advertisement
Advertisement

হোয়াটসঅ্যাপের সূত্রে পুলিশের ফাঁদে বন্দি দুর্ধর্ষ ৬ জঙ্গি

খাগড়াগড়-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মৌলানা ইউসুফ ও অন্যান্য জঙ্গিদের ধরার এই কাহিনি হার মানাবে ছায়াছবিকেও!

Six Top Jamaat-ul-Mujahideen Terrorists Arrested From West Bengal
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 27, 2016 10:55 am
  • Updated:September 27, 2016 10:55 am

অর্ণব আইচ: এক জাল নোট পাচারকারীকে গ্রেফতার করেই প্রথম সূত্রটি পেয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকরা৷ পরের সূত্রটি দিয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপ৷ জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর জঙ্গিরা যে মোবাইলে কথা বদলে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ রাখছে, তা জানতে পারে এনআইএ ও এসটিএফ৷ হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজের মাধ্যমেই জাল পাতা হয়৷ সেই সূত্র ধরেই কোচবিহার ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ ও বসিরহাট থেকে ধরা পড়ে খাগড়াগড়-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মৌলানা ইউসুফ ও অন্যান্য জঙ্গিরাও৷
এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুলাই মাসে এসটিএফ-এর হাতে ধৃত এক জাল নোট পাচারকারীকে জেরা করেই আসলে বাংলাদেশ কিন্তু এখন অসমের কাছাড়ের বাসিন্দা জাহিদুল শেখ ওরফে জাফর ওরফে জাবিরুলের সন্ধান মেলে৷ জানা যায়, অসমে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনের জন্য তহবিল জোগাড় করতেই জাবিরুলের মাধ্যমে জাল নোট ‘বিক্রি’ করছে জেএমবি৷ জাল নোট ক্রেতা সেজে গোয়েন্দারা শিলচরের শিলংপল্লিতে হানা দেন৷ সেখান থেকেই জাল নোট-সহ গোয়েন্দা টিম ধরে ফেলেন খাগড়াগড় মামলার অভিযুক্ত জাবিরুলকে৷ গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, আইএস-এর সাহায্য নিয়ে অসমে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনও তৈরি করছে তারা৷ পুজোর আগেই তারা নাশকতার ছক কষছে৷ এর মূল দায়িত্বে রয়েছে খাগড়াগড়-কাণ্ডে আরও এক পলাতক সাহিদুল ওরফে সূর্য ওরফে শামিম৷ এই নাশকতার পিছনে আরও দু’জন মাথা হচ্ছে বর্ধমানের আবদুল কালাম ও বাংলাদেশের জামালপুরের রুবেল৷ এরা দু’জনই বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ৷ জাবিরুলের মোবাইল ঘেঁটে জানা যায়, নিজেদের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে জঙ্গিরা যোগাযোগ রাখে৷ যদিও কোনও গ্রুপ বানায়নি এরা৷ এদের একটি বিশেষ জায়গা থেকে নির্দেশ আসে৷ হোয়াটসঅ্যাপ ‘ক্র্যাক’ করেই দুই ব্যক্তির মোবাইল নম্বর ও তা থেকে আসা প্রচুর মেসেজ উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা৷ সেই সূত্রে খাগড়াগড়ের মূল অভিযুক্ত ও দু’বছর ধরে পলাতক ইউসুফ ও এই রাজ্যে জেএমবি-র নতুন প্রধান আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে এনামের সন্ধান মেলে৷
এসটিএফ-এর এক কর্তা জানিয়েছেন, পুজোর আগেই একটি নাশকতার ভুয়া ছক কষা হয় হোয়াটসঅ্যাপে৷ জেএমবি ও আইএস-এর ক্ষমতা এখনই জাহির করতে হবে বলে টোপ দেওয়া হয় জঙ্গি নেতাদের৷ ওই টোপে পা দেয় ইউসুফরা৷ ইউসুফের ডান হাত আবদুল কালামকে দুই কিলোগ্রাম বিস্ফোরক, ডিটোনেটর দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়৷ কোচবিহার স্টেশনের কাছে জাবিরুলের সঙ্গে দেখা করতে এসেই গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে যায় সে৷ এবার কামালের হোয়াটসঅ্যাপ ‘ক্র্যাক’ করে তার মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয় জঙ্গি নেতা ইউসুফের সঙ্গে৷ নাশকতা নিয়ে বৈঠক করতে ইউসুফ ও শহিদুল বাংলাদেশ থেকে বসিরহাটে আসে৷ এই রাজ্যের জেএমবি প্রধান এনাম নাশকতার উদ্দেশ্যেই তার সঙ্গে বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ রফিক ওরফে রুবেলকে নিয়ে বনগাঁয় আসে৷ জাবিরুল ও কামালকে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা৷ বসিরহাটের নতুনবাজার থেকে গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেফতার হয় ইউসুফ ও শহিদুল৷ বাগদা রোড ধরে ইউসুফদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েই গ্রেফতার হয় এনাম ও রফিক৷ ধৃত ৬ জনের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে আরও কিছু মেসেজ উদ্ধার করা হয়েছে৷ সেই সূত্র ধরে পলাতকদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷

Advertisement

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ