ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: করোনা রুখতে নবগ্রহ পুজো। তার সঙ্গে যজ্ঞ। সব শেষে করোনা রাক্ষসের চিতা জ্বালিয়ে উল্লাস। শনিবার বিকেলে বারাসতে সেই যজ্ঞ আর পুজোকে ঘিরে একেবারে উৎসবের মেজাজ। এলাকার লোকে ভিড় করে করোনা বধের যজ্ঞে মেতে ওঠেন। কৃতিত্ব জাহির করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি এবং ভিডিও আপলোডও করে যজ্ঞের আয়োজকরা। ভিডিও দেখে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অল্পের জন্য পালিয়ে বাঁচে পুরোহিত।
বারাসতের নদীভাগ ডাকাত কালীবাড়ির কাছে, দিলীপ পাল নামে এক মৃৎশিল্পী সচেতনতা প্রচারের জন্য করোনা ভাইরাসের মডেল বানিয়েছিলেন। সেই মডেলের আশেপাশে সামাজিক সচেতনতার বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি। শনিবার সেই মডেল নিয়েই করোনা বধ উৎসব পালন করে এলাকার কিছু যুবক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীভাগ অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে করোনা ভাইরাসের চিতা সাজায় তারা। সেই মাঠেই নবগ্রহ পুজোর আয়োজন করে তারা। যজ্ঞেরও আয়োজন করা হয়। এলাকা থেকে এক পুরোহিতও ধরে নিয়ে আসে তারা।
দুপুর থেকে ধুমধাম করে পুজো শুরু হয়। এই অদ্ভুত কাণ্ড দেখতে একে একে ভিড় জমাতে থাকেন এলাকার মানুষ। নবগ্রহ পুজোর পর শুরু হয় যজ্ঞ। বিশ্ব থেকে করোনার অস্তিত্ব মেটাতে তারস্বরে মন্ত্র পড়েন পুরোহিতমশাই। এরপর সেই মৃৎশিল্পীর বানানো মডেল নিয়ে চিতায় ওঠায় পুজোর আয়োজকরা। করোনার চিতা জ্বালিয়ে, বলো হরি হরি বল ধ্বনি তোলে তারা। ততক্ষণে ওই মাঠে প্রায় ১৫০-২০০ লোকের ভিড় জমে গিয়েছে। গোটা ঘটনাটি ফেসবুক লাইভও করে আয়োজকদের একজন।
[আরও পড়ুন: কম যাত্রীতে হবে না লাভ, গ্রিন জোনে বাস চালাতে নারাজ মালিকরা]
বিষয়টি নজরে আসে জেলা পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং সেলের। বারাসত থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ দেখেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় ভিড়। ইতিউতি দৌড়তে শুরু করে পুজোর আয়োজকরা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। যজ্ঞের পুরোহিতকে পাকড়াও করার আগেই সে স্কুল মাঠের পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়। বারাসত জেলা পলিশের কর্তাদের দাবি, লকডাউন চলাকালীন এ ধরনের জনসমাগম হলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।