বিক্রম রায়, কোচবিহার: প্রিয় শিক্ষকের অন্যত্র বদলি আটকাতে দ্বিতীয় দিনেও পড়ুয়াদের বিক্ষোভে অচল কোচবিহারের জেনকিন্স স্কুল৷ মঙ্গলবারও স্কুলের গেট বন্ধ করে, তার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে ছাত্ররা৷ ফলে সোমবারের পর মঙ্গলবারও বন্ধ স্কুলের পঠনপাঠন৷ এদিন দুপুরে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনেও বিক্ষোভে শামিল হন বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্ররা৷ ঐতিহ্যবাহী জেনকিন্স স্কুলে শিক্ষক বদলি রুখতে এখনই কোনও ব্যবস্থা না নিলে, এই ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল বন্ধ থাকবে বলে আশঙ্কা অভিভাবকদের৷
গ্রীষ্মের ছুটির পর সোমবার স্কুল খুললেও সকাল থেকে বিক্ষোভের জেরে প্রধান শিক্ষক-সহ অন্যান্য শিক্ষকরা স্কুলে ঢুকতে পারলেন না। জেনকিন্স স্কুলের মতো একটি নামী স্কুলে এই ধরনের ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়েছে। ইতিমধ্যেই স্কুল কর্তৃপক্ষ গোটা বিষয়টি শিক্ষা দপ্তরে জানিয়েছে। জেনকিন্স স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এসএম রিয়াজ আহমেদ জানান, স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক শংকর দত্তর পুরুলিয়ায় বদলির নির্দেশ এসেছে। ভোটের আগেই এই নির্দেশ এসেছিল। নির্বাচনী বিধির জন্য তাঁকে রিলিজ অর্ডার দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিন স্কুল খোলার পর তাঁকে রিলিজ অর্ডার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্কুলের ছাত্ররা কাউকে ঢুকতে দেয়নি। ফলে পঠনপাঠন বন্ধ ছিল। গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিক্ষোভকারী ছাত্রদের পক্ষ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সঞ্জয় রাউত জানায়, ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলে অন্যায়ভাবে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শংকরবাবুকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশিকা বাতিল করার দাবি নিয়ে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে নেমেছে। সদুত্তর না মেলা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। অভিযোগ, স্কুলে ভর্তি সংক্রান্ত অনিয়মের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন শংকরবাবু। তাই তাঁকে পুরুলিয়ায় বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদেই ছাত্ররা সরব হয়েছে। শিক্ষকের বদলির প্রতিবাদ জানিয়ে ডিএসও-র পক্ষ থেকে জেলাশাসকের দপ্তরে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জহিদুল হক জানান, রাজ্যের পাশাপাশি জাতীয় স্তরে সুনাম রয়েছে জেনকিন্স স্কুলের। এবছরই উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম দশের মধ্যে ৬ জনই এই স্কুলের৷ অথচ সেখানে প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষক সংখ্যা অনেকটাই কম। তা সত্ত্বেও শংকরবাবুর পরিবর্তে কোনও শিক্ষককে না দিয়ে সেখান থেকে তাঁকে
ট্রান্সফার করে দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনারই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। জেনকিন্স স্কুল সূত্রে খবর, সম্প্রতি ইংরেজি মাধ্যম চালু হয়েছে এই স্কুলে। তবে সরকারি এই স্কুলে নতুন ভাবে কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। স্কুলের বাংলা মাধ্যমেই ইংরেজি বিভাগের জন্য ছ’জন শিক্ষক থাকার কথা। সেখানে মাত্র তিনজন রয়েছেন। সেখান থেকেও একজনকে বদলি করে দেওয়া হচ্ছিল৷তাতেই প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্ররা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.