Advertisement
Advertisement

Breaking News

Jhalda

সুপারি কিলারদের আশ্রয় দিয়েছিল আগরবাতিওয়ালা আসিক! তপন কান্দু খুনের চক্রীকে দেখে তাজ্জব গ্রাম

কুকীর্তির ডেরায় নজরদারির সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করেছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ।

Tapan Kandu Murder Case: villagers are terrified to know the killer of congress councilor of Jhalda | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 3, 2022 7:51 pm
  • Updated:April 3, 2022 7:55 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঝালদার কংগ্রেস (Congress) কাউন্সিলর তপন কান্দুর ‘ভাড়াটে খুনি’রা আশ্রয় নিয়েছিল আগরবাতিওয়ালা আসিক খানের বাড়িতে।  সে যে সুপারি নিয়ে আততায়ীদের রেখেছিল নিজের বাড়িতেই, তা সামনে আসতেই তাজ্জব কুটিডি গ্রাম। ঘটনাস্থল থেকে তিন কিমি দূরে পুরুলিয়ার (Purulia) ঝালদার কুটিডি গ্রামে আগরবাতিওয়ালা আসিক খানের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল মোটরবাইকে থাকা তিন আততায়ী! এই তথ্য সামনে আসতেই হাড় হিম হয়ে যাচ্ছে ওই গ্রামের মানুষজনের। তবে ওই বাড়ি এখন তালাবন্ধ। বাড়ির লোকজন শনিবার দুপুরে পাড়া-পড়শিদের বলে গিয়েছেন – ”থানা যাচ্ছি।” তারপর আর কেউ ফেরেননি। ওই বাড়ির পাশে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হচ্ছে ঝালদা থানার তরফে। পালা করে মোট চারজন পুলিশের স্বেচ্ছাসেবক নজরদারি চালাচ্ছেন। 

পুর শহর ঝালদার বিরসা মোড় থেকে মাত্র পাঁচ কিমি। আর সেই খুনের ঘটনাস্থল ঝালদা-বাঘমুন্ডি সড়কপথে গোকুলনগর থেকে মাত্র তিন কিমি। ওই সড়কে কুটিডি মোড় থেকে বাম দিকে। কুটিডি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গা ঘেঁষে প্রায় ধুলো মাখা পথে প্রায় ৫০০ মিটার গেলেই সেই বাড়ি। যে বাড়িতে পরপর তিনটি দরজা, জানলা। নীল রঙের মূল দরজায় ঝুলছে তালা। বাকি ছাই রঙের ও আরেকটি নীল রঙের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। এই দুই দরজার পাশে বন্ধ কালো ও ছাইরঙা জানালাটিও।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বুমেরাং সিপিএমের ‘পাহারায় পাবলিক’, তৃণমূলের দুর্নীতি খুঁড়তে গিয়ে ফাঁস কমরেডদেরই কুকীর্তি!]

জনবসতি বলতে যা বোঝায়, তা নয়। বাড়ির চারপাশে একাধিক পলাশ গাছ। এলাকায় এদিক-সেদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আরও কয়েকটা বাড়ি। প্রায় ১৭-১৮বছর ধরে এই বাড়িটি স্থায়ী ঠিকানা ছিল এলাকার আগরবাতিওয়ালা ষাটোর্ধ্ব আসিক খানের। কখনও ধুপ ব্যবসা। কখনও কাপড়ের ফেরি। হিন্দিভাষী এই মানুষটির মুখে বাংলা কথা খুব কম শোনা যেত। এলাকায় কোন ঝুটঝামেলা হলে বলতো, “আমার সঙ্গে পাঙ্গা নিস না।”

Advertisement
ছবি: অমিতলাল সিং দেও।

বিহারের গয়ার বাসিন্দা এই আসিক খান। আগে ঝালদা শহরে বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া বাড়িতে থাকার পর অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দিয়ে এই বাড়িটি তৈরি করে। পাঁচ মেয়ে, স্ত্রী নিয়ে সংসার। এই বাড়ির মালিক আগরবাতিওয়ালা আসিক খান তপন কান্দু হত্যাকাণ্ডে অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে ধরা পড়তেই এলাকার মানুষ আর সেভাবে কোন কথা বলছেন না। আশেপাশে থাকা কয়েকজন পড়শি বলেন, “ঘটনার দিন বেশ কয়েকজন অপরিচিতি জনকে বাড়ির সামনে দেখেছিলাম। একটা মোটরবাইককে ঘরে ঢোকাতে দেখি। তারা কারা এসব কিছুই বলতে পারব না। এই বাড়িতে তো অনেকেই যাওয়া-আসা করত।” পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন বলেন, ” খুন করে আততায়ীরা এই আসিক খানের বাড়িতেই ছিল কিনা তা এখনও আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আরও কিছুটা সময় লাগবে। তদন্ত চলছে।”

[আরও পড়ুন: ইউক্রেনের পথে পথে ছড়িয়ে মৃতদেহ! বহু মানুষকে দেওয়া হল গণকবর]

এই খুনের ঘটনায় মুল ষড়যন্ত্রকারী নিহতের দাদা সুদের কারবার করা নরেন কান্দুর সঙ্গী আসিক খানের দীর্ঘদিনের আলাপ। ধূপের ব্যবসার কারণে আসিক একাধিকবার সুদে নরেনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। ধৃত নরেন তার ভাই তপন কান্দুকে খুন করার জন্য এই আগরবাতিওয়ালা আসিককেই সুপারি দিয়েছিল। ঘটনার অন্যতম মূল ষড়যন্ত্রকারী ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার জরডি থানার গাইছাদ গ্রামের কলেবর সিং সাত-আট বছর আগে ঝালদায় থাকত। কলেবরের আত্মীয়রা বিহারের গয়ায় থাকার সুবাদে আসিকের সঙ্গে পরিচয় ছিল তার। আর এই বয়স্ক মানুষজনদের ব্লুপ্রিন্ট থেকেই থেকেই এই খুনের অপারেশন সাজানো হয়েছিল বলে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ জানিয়েছে।

তবে আততায়ীরা যে খুনির অপারেশনের আগে রেকি করে গিয়েছে, তা নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। সেই সময়ও ‘ভাড়াটে খুনিরা’-ই এই বাড়িতেই থাকতো কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছে এই খুনের ঘটনায় গঠিত হওয়া সিট। কুটিডি গ্রামের মানুষজনের কথায়, “আগরবাতিওয়ালা যে সুপারি নিয়ে খুন করাতে পারে তা ভাবতেই পারছি না। এই কথা কানে বাজলেই গা শিউরে উঠছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ