সন্দীপ মজুমদার ও অর্ণব আইচ: কলকাতা থেকে ধৃত ৪ জামাত জঙ্গিকে জেরায় তাদের ডেরার হদিশ পেল পুলিশ। জানা গিয়েছে, হাওড়ার রাজাপুরের তেহট্টের একটি বাড়ি থেকেই অপারেশন চালাতো অভিযুক্তরা। জানা গিয়েছে, হাওড়া ও কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জামাত জঙ্গির মধ্যে ২ জন রাজাপুরের ওই বাড়িতে থাকতেন। যদিও ভাড়াটেদের সঙ্গে জঙ্গিযোগ সম্পর্কে কিছুই জানা নেই বলে দাবি বাড়ির মালিক।
[আরও পড়ুন: গুড়াপে বিজেপির প্রতিনিধিদল, পুলিশকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের]
গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোররাতে কলকাতা ও হাওড়া স্টেশনে হানা দিয়েছিল পুলিশ আধিকারিকরা। সেখান থেকেই ওইদিন ২ যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছিল, ধৃতরা আইএস গোষ্ঠীর মদতপুষ্ট৷ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও দু’জনের সন্ধান পেয়েছিল পুলিশ। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় তাদেরও। তদন্তে জানা গিয়েছিল, ধৃতদের মধ্যে ৩ জন বাংলাদেশ ও ১ জন বীরভূমের বাসিন্দা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই উলুবেড়িয়ায় জঙ্গিঘাঁটির সন্ধান পায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার সেখানেই তল্লাশি চালিয়ে ল্যাপটপ, সিডি-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী পেয়েছে পুলিশ। আরও বেশ কিছু তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে৷ মুর্শিদাবাদে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছিল বাংলাদেশের কারাগারে বন্দি থাকা মহসিন৷ ২০১১ সালে বোমারু মিজান, হাতকাটা নাসিরুল্লাদের সঙ্গী হিসেবেই জেএমবি-তে যোগ দিয়েছিল ধৃত মহসিন৷ বছর দুই আগে জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য কারারুদ্ধ হয়েছিল৷ জামিন পেয়েই এরাজ্যে চলে আসে৷ আর মাত্র ৬ মাস আগেই এরাজ্যে এসেছিল মামুনুর৷ বীরভূমের রবিউলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল ‘ইমো’র মাধ্যমে৷
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে এ দেশে এসে উলুবেড়িয়ার বাসুদেবপুরে এক ব্যক্তির বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন রিয়াজুল কাজি নামে এক ব্যক্তি। আরও কয়েকজন যুবক থাকতেন তার সঙ্গে। নিজেদের মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বলেই পরিচয় দিয়েছিল তারা। এরপর ইদের সময় ঘর ছেড়ে দিয়ে বাড়ি চলে যায়।
পরে যখন তারা ফিরে আসে, ততদিনে ওই ঘরে অন্যরা থাকতে শুরু করে দিয়েছেন। এরপর উলুবেড়িয়ার রাজাপুর এলাকায় আরেকটি ঘর ভাড়া নেয় তাদেরই ২ জন। প্রয়োজনীয় পরিচয় পত্র দেখেই ঘর ভাড়া দিয়েছিলেন মালিক সিরাজুল মল্লিক। জানা গিয়েছে, নিজেদের ফেরিওয়ালা পরিচয় দিয়েই ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন তারা।তবে মাঝেমধ্যে অপর এক যুবকও যেত ওই বাড়িতে। এখানেই প্রশ্ন, কে সেই ব্যক্তি? তার খোঁজেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, যে আধার কার্ড দেখিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল ওই যুবকরা, পরবর্তী সময়ে দেখা গিয়েছে, তা ভুয়ো। এ বিষয়ে কিছু জানতেন না বলেই জানিয়েছেন এই বাড়ির মালিকও। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের হদিশ পেতে তদন্ত আরও জোরদার করেছে পুলিশ৷