জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: লকডাউনের মধ্যে পরিচারিকাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক পরিবারের বিরুদ্ধে। শেষে সিপিএমের এক প্রাক্তন কাউন্সিলর এর উদ্যোগে বাড়ি ফেরেন ওই পরিচারিকা।
ঘটনাটি ঘটেছে বনহুগলি এলাকায়। জানা গিয়েছে, কয়েক বছর ধরে বরানগরের বনহুগলি এলাকার অমিতাভ দত্ত ও কেয়া দত্ত নামে এক দম্পতির বাড়িতে পরিচারিকার কাজে যোগ দিয়েছিলেন ওই মহিলা। নাম শীলা দে। বয়স প্রায় ৫০ বছর। তাঁর বাড়ি বনগাঁ থানার রেলবাজার আর এস মাঠ এলাকায়। বাড়ির মালিক অমিতাভ দত্ত অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক অফিসার এবং তার স্ত্রী কেয়া দত্ত অবসরপ্রাপ্ত বিএসএনএল অফিসার। সরকারি চাকরি থেকে অসবরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ ওই দম্পতির দেখাশোনা করতেন শীলা দে। দিন কুড়ি আগে দৈনিক ২০০ টাকা পারিশ্রমিকে তিনি কাজে যোগ দেন। বনহুগলীর ওই দম্পতির বাড়িতেই থাকতেন। প্রথম থেকে সব ঠিকঠাই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ দিন দুই আগে শীলা দেবীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওই বৃদ্ধ দম্পতির বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, লকডাউনের মধ্যেই শীলাদেবীকে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার কথা বলেন অমিতাভ ও কেয়া দত্ত। এমনকী তাঁকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। চারিদিকে যখন বাস ট্রেন সব বন্ধ তখন কীভাবে বনগাঁ পৌঁছবেন তিনি, তা ভেবেই দিশেহারা হয়ে পড়েন শীলাদেবী। অবশেষে সমাধান মেলে। প্রতিবেশীর বাড়িতেই কাজ করত তাঁরই গ্রামের আর একজন। তাঁকে দিয়েই স্বামীর কাছে খবর পাঠান তিনি। শীলাদেবীর স্বামী তাপস দে পেশায় ভ্যানচালক। খবর পাওয়া মাত্রই তিনি ছুটে যান স্থানীয় প্রাক্তন কাউন্সিলর পার্থ সাহার কাছে। পার্থবাবু সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করেন বরানগর থানা ও বনগাঁ থানার সঙ্গে। তাদের কাছে মৌখিক আশ্বাস পেয়ে নিজের পয়সায় গাড়ি ভাড়া করে তাপস দে’কে নিয়ে ছুটে যান বনহুগলির ঠিকানায়।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়ির মালিকদের দুর্ব্যবহার তাঁর গোচরে আসে। ঘটনাস্থলেই তিনি প্রতিবাদ করেন এবং প্রতিবেশীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অভিযোগ তোলেন, বাড়ির মালিক অমিতাভ ও কেয়া দত্ত অসহায় পরিচারিকার বাড়ি ফেরার বন্দোবস্ত তো করেনিই, উলটে বাড়ি ফেরার জন্য যে গাড়ি ভাড়াটুকুও অস্বীকার করেন। এমনকী এক মাসের বেতন দিতেও অস্বীকার করেন দত্ত দম্পতি। অনেক বাকবিতণ্ডার পর শীলাদেবীর কুড়ি দিনের টাকা আদায় করেন পার্থ সাহা। তাপস দে ও তার স্ত্রী শিলা দে’কে নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বনগায় ফিরে আসেন তিনি। পার্থ সাহা বলেন “ওই দম্পতির বাড়িতে ওই মহিলা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন। বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সেবা করেছেন। লকডাউনের মধ্যে ওনারা তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন৷ এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আর কি হতে পারে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.