সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ব্রিটিশরা বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার পর, রাখির সুতোতেই দেশবাসীকে আবদ্ধ করেছিলেন রবিঠাকুর। সেই রাখির সুতোতেই যেন তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির ‘রাজনৈতিক ভেদাভেদ’ ঘুচল। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে পুরুলিয়ার পুরপ্রধান তথা পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য শামিম দাদ খান বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর হাতে রাখি পরিয়ে দিলেন। রাজ্য সরকারের সংহতি দিবসে রাজনৈতিক সৌজন্যতার মাস্টারস্ট্রোকও দিলেন তিনি। আর সৌজন্যের সেই বিরল ছবি দিনভর ঘুরল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
[আরও পড়ুন: জন্মদিনে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে রক্তদান, নজির গড়লেন আসানসোলের যুবক]
এদিন রাজ্যের যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরের উদ্যোগে ও পুরসভার ব্যবস্থাপনায় তখন সংহতি দিবসের অনুষ্ঠান চলছে। পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে আসে বিজেপির একটি মিছিল। দলের মিছিলে সামনের সারিতেই ছিলেন বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। তাঁকে সামনে পেয়ে ‘জয় হিন্দ, জয় বাংলা’ লেখা রাখি পরিয়ে দেন তৃণমূল পরিচালিত পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান শামিম দাদ খান। চলে মিষ্টি মুখ ও আলিঙ্গনও। দুই দলের কর্মীরা তো হাততালি দিচ্ছিলেনই, রাজনৈতিক সৌজন্যের বিরল ছবি মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করেন পথ চলতি মানুষও।
তৃণমূল নেতা তথা পুরপ্রধান শামিম দাদ খান বলেন, “আজকের দিনে কোন রাজনীতি নয়। আমরা সকলেই ভারতবাসী। সেটাই বড় পরিচয়। তাই রাখির সুতোতে আমরা সমস্ত ভেদাভেদ ঘুচিয়ে দিলাম।” তৃণমূল নেতার হাতে রাখি পড়লেও ঘটনাটি কিন্তু সহজভাবে নিতে পারেননি বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। তাঁর কটাক্ষ, “তৃণমূলের সুমতি হচ্ছে আর কি বলব! তাই আমিও স্বাগত জানালাম। আসলে জনভিত্তি হারিয়ে এখন আমাদের পিছনে চলা ছাড়া শাসক দলের আর কোন উপায় নেই।” তবে শুধু বিজেপি নেতাকেই নয়, বৃহস্পতিবার সকালে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা পুরুলিয়া পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান কৃষ্ণপদ বিশ্বাসকেও রাখি পরিয়েছেন বর্তমান পুরপ্রধান।
ছবি: সুনীতা সিং