ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: রাতের অন্ধকারে বহিরাগতদের নিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে হামলা টিএমসিপির। এসএফআই-টিএমসিপি সংঘর্ষে আহত হয়ে দুই এসএফআই সদস্য ভরতি হাসপাতালে। বুধবার রাতে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের নিয়ে ঢুকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা এসএফআইয়ের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। স্বপ্ননীল মুখোপাধ্যায় এবং ফাল্গুনী পান নামে দুই ছাত্র আহত হন। তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ারসন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানেও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতাল ঘিরে থাকে তাঁরা। অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছেন সাবির আলি এবং টিএমসিপি সদস্য অচিন্ত্য বাগদির নাম।
আহত সদস্য ফাল্গুনি পান জানিয়েছেন, বুধবার রাতের দিকে উপাচার্যের গাড়ির সঙ্গে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে টিএমসিপির একদল সদস্য। রাত ১১টা নাগাদ বিদ্যাভবনের ছাত্রাবাসে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের বৈঠক চলাকালীন বাঁশ, রড নিয়ে এসএফআই সদস্য এবং অর্থনীতির ছাত্র স্বপ্ননীল মুখোপাধ্যায়ের উপর চড়াও হয়ে মারধর করতে থাকে। তাঁর হাতে, পিঠে আঘাত লাগে। তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে।
[আরও পডু়ন: টিকটকখ্যাত গৃহবধূ আদৌ নিখোঁজ? স্থানীয়দের মনে দানা বাঁধছে সন্দেহ]
এসএফআইয়ের অভিযোগ, স্বপ্ননীলকে হাসপাতালে ভরতি করা হলে সেখানেও চড়াও হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। উপাচার্যের মদতেই এবিভিপি এমন হামলা চলেছে বলে অভিযোগে সরব বাম ছাত্র সংগঠন। তাঁদের আরও অভিযোগ, গত ৮ জানুয়ারি বাম শ্রমিক সংগঠনের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে এসএফআইয়ের অংশ নেওয়াকেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে টিএমসিপি।

ওইদিনই বিশ্বভারতীয় একটি প্রেক্ষাগৃহে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে একটি আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছিলেন বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। তাঁর অংশগ্রহণ ঘিরে আগেই প্রতিবাদে শামিল হয়েছিল এসএফআই। ৮ তারিখ প্রথমে তাঁকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তারপর সাংসদ আলোচনা চক্রে যোগ দিলে প্রেক্ষাগৃহের বাইরে এসএফআই সদস্যরা কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে বামপন্থী ছাত্রদের একাংশ।এসএফআইয়ের দাবি, সেই ঘটনার পালটা দিতে টিএমসিপিকে ঢাল করে গতকাল রাতে এবিভিপি হামলা চালিয়েছে।যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের এবিভিপি সদস্য অপূর্ব শরদের বক্তব্য, এর সঙ্গে এবিভিপির কোনও যোগ নেই। তাদের বদনাম করার জন্য এমন অপপ্রচার চলছে। এসএফআইকে ক্ষমা চাইতে হবে এর জন্য। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, বিশ্বভারতীর মতো বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এত নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও, কীভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকল বহিরাগতরা।
[আরও পডু়ন: ‘রাজ্যপাল পাগল, সব পাগল পাগলাগারদে থাকে না’, ধনকড়কে তোপ অধীরের]
অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার মিল পাচ্ছেন। ঠিক এভাবেই গত ৫ তারিখ সন্ধের অন্ধকারে এবিভিপি সদস্যরা রাতের অন্ধকারে মুখ ঢেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডিজ হস্টেলে ঢুকে মারধর চালায় বলে অভিযোগ। বিশ্বভারতীর ঘটনায় এসএফআইয়ের দাবি, দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হোক। অন্যথায় তাঁরা বিক্ষোভ-মিছিল করে আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়িয়ে তুলবে।