সুব্রত বিশ্বাস: করোনা ভাইরাস রুখতে ঘনঘন জলপানের নিদান দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া, সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়া থেকে শুরু করে কাপড় কাচার জন্যও জলের খরচ বেড়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে অভিযোগ, চাহিদা বাড়লেও ন্যূনতম জোগানটুকু নেই বেলুড় স্ক্র্যাপ ইয়ার্ড ও এলসিডির মতো কর্মব্যস্ত রেল ডিপোগুলিতে।
অভিযোগ, ডিপোগুলিতে পানীয় জল থেকে হাত ধোয়ার জল, সব ক্ষেত্রে রয়েছে অভাব। দেড় থেকে দুশোর মতো কর্মী কাজ করেন সেখানে। ঠিকাদার, নিলামদার ও তাঁদের লোকজন মিলিয়ে দৈনিক সেই সংখ্যা পৌঁছে যায় শ’পাঁচেক লোকে। কিন্তু তা সত্বেও দীর্ঘদিন ধরেই জল সংকট চলছে। প্রয়োজনের তুলনায় জলের কল কম। সব সময় জলের জোগান থাকে না। অধিকাংশ সময় কলগুলি দিয়ে জল পরে না বলে কর্মীদের অভিযোগ। দীর্ঘদিন ধরে জলের দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করেছে মেনস ইউনিয়ন। অভিযোগ, প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বারবার অভিযোগ করেও সমস্যা মেটেনি। পরিকাঠামো বদলের আশ্বাস দিয়েও কাজ হয়নি। ফলে সমস্যা স্থায়ী ভাবে সেখানে রয়ে গিয়েছে।
কর্মীদের অভিযোগ, জলের জোগান দেওয়ার পাইপ, পাম্প, ভাল্ব সবই ব্রিটিশ আমলে। ফলে সেগুলি ব্যবহারে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পরিবর্তন না করায় সমস্যা থেকে গিয়েছে। সমাধানের আশ্বাস দিয়েও আধিকারিকদের উদাসীনতায় কোনও কাজ হয়নি। হাওড়ার সিনিয়ার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার (কো অর্ডিন্যাশন) রামেশ্বর প্রাসাদ জানান, বর্তমানে চরম অর্থ সংকট চলছে। গত নভেম্বর থেকে অর্থ অনুমোদন না হওয়ায় বিগত বছরের কাজের টাকা ঠিকাদারদের দেওয়া যায়নি। এখন করোনা পরিস্থিতিতে এই সংকট আরও তীব্র। ফলে কোনওরকম কাজ হচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জলের সমস্যা মেটাতে সব কাজ করা হবে। উল্লেখ্য, শুধু এই ডিপো নয়, লিলুয়া রেল আবাসন, ওয়ার্কশপ সবেতেই এই জল সংকট তীব্র। সমস্যার কারণও এক। তাই সমাধান হলে হাজার হাজার রেলকর্মী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন উপিকৃত হবেন বলে জানিয়েছেন।
লিলুয়া ও বেলুড় রেল চত্বরে পানীয় জল গঙ্গা থেকে তুলে নিউ ফিল্টার হাউসে এনে পরিশুদ্ধ করা হয়। এই বিস্তীর্ন কাজটি রেল ঠিকাদার দিয়ে চালায়। ইদানিং জল পরিশুদ্ধ পদ্ধতিতে নজর রাখতে প্রায় দশ জন রেলকর্মীকে লাগানো হয়েছে। যেখানে সিসিটিভি দিলেই কাজ হবে, সেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা বেতনভুক্ত কর্মীকে রাখাটা অর্থের অপচয় বলে জানিয়েছেন কর্মীরা। ভারপ্রাপ্ত সুপারভাইজারদের উদাসীনতাকে এজন্য দায়ী করেছেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.