শাহাজাদ হোসেন, ফরাক্কা: সোমবার সাগরদিঘির (Sagardighi) উপনির্বাচন। ৩ বারের তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত সাহার প্রয়াণে এই কেন্দ্রটিতে উপনির্বাচনের প্রয়োজন পড়েছে। উপনির্বাচনে এই কেন্দ্রে মূল লড়াই তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে।
সাগরদিঘিতে মোট বুথের সংখ্যা ২৪৬টি। কেন্দ্রের প্রায় ৫০ শতাংশ বুথ স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রস্তুতির কোনও খামতি রাখেনি নির্বাচন কমিশন। ভোটের নজরদারিতে থাকছে মোট ৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ১০০ শতাংশ বুথে থাকছে সিসি ক্যামেরা। ভোটগ্রহণ চলাকালীন করা হবে ওয়েব কাস্টিং। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় থাকছে ২২টি কুইক রেসপন্স টিম। সার্বিকভাবে কমিশন নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও খামতি রাখেনি।
এই সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্র তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। এই কেন্দ্রের টানা তিন বারের বিধায়ক ছিলেন সুব্রত সাহা। ২০১১ সালে তিনি ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার একমাত্র তৃণমূল (TMC) বিধায়ক। এরপর ২০১৬ এবং ২০২১ বিধানসভাতেও অনায়াসে সাগরদিঘি থেকে জিতে আসেন সুব্রত। ২০২১ বিধানসভাতেও বিজেপি (BJP) প্রার্থী মাফুজা খাতুনকে ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাস্ত করেন তিনি। কিন্তু সুব্রতর মৃত্যুর পর শাসকদলের জন্য লড়াইটা কঠিন মনে হচ্ছে। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয় দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মূল চ্যালেঞ্জার কংগ্রেসের (Congress) বায়রন বিশ্বাস। ২০২১ বিধানসভায় এই কেন্দ্রে তৃতীয় স্থানে শেষ করলেও গত কয়েক মাসে সাগরদিঘিতে কংগ্রেস সংগঠন বেশ খানিকটা গুছিয়ে নিয়েছে। তাছাড়া কংগ্রেস প্রার্থীর ভাবমূর্তি উজ্বল। বহিরাগত হলেও সমাজসেবী হিসাবে পরিচিত বায়রন। স্থানীয়রা বলছেন, তৃণমূলের লড়াইটা সহজ হবে না। তৃণমূল এবং কংগ্রেসের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে বিজেপি।
আসলে সাগরদিঘি বিধানসভায় ৬৫ শতাংশ ভোটার সংখ্যালঘু। হিন্দু ভোটার ৩২ শতাংশ। বিজেপির জন্য তাই লড়াইটা স্বভাবতই কঠিন। তৃণমূল আবার বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের আঁতাঁতের অভিযোগ তুলেছে। সেই অভিযোগও নেহাত ফেলনা নয় বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনীতির কারবারিরা। শাসকদলের চিন্তার আরও একটি কারণ হচ্ছে বিরাট সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিকের অনুপস্থিতি। এই কেন্দ্রের আড়াই লক্ষ ভোটারের ৩০ হাজারই পরিযায়ী শ্রমিক। যার আবার ৮০ শতাংশই সংখ্যালঘু। এরা ভিনরাজ্যে কাজ করেন। সাধারণত ইদ বা কোনও অনুষ্ঠানে বাড়ি ফেরেন। সামান্য উপভোটের জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করে অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিকই ঘরে ফেরেননি। যা চিন্তায় রাখছে শাসকদলকে। তৃণমূলের বক্তব্য, প্রায় ২৫ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক সংখ্যালঘু। বেশিরভাগই তৃণমূলের ভোটার। কিন্তু এদের বেশিরভাগটাই ফেরেননি। সেটা নিয়ে খানিকটা চিন্তা আছে। তবে জেতা নিয়ে খুব একটা সংশয় নেই তৃণমূলের অন্দরে। কংগ্রেস এবার সাগরদিঘিতে ভাল লড়াইয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। তবে আগেরবারের হারের বিশাল ব্যবধানটা চিন্তায় রাখছে হাত শিবিরকেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.