স্টাফ রিপোর্টার, মালদহ: স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে বন্ধ করতে নদিয়া থেকে এসে শ্বশুরবাড়ির সামনে ধরনায় বসলেন এক গৃহবধূ। শুক্রবার এই ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায় মালদহের মোথাবাড়ি থানার বাঙ্গিটোলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাবলা-কমলপুর গ্রামে। তাঁকে এভাবে দেখে ভিড় করেন পাড়া-প্রতিবেশীরা। সমস্ত ঘটনার কথা শোনার পরই ওই বধূর দাবির সমর্থনে শামিল হন গ্রামবাসীরাও। এদিকে পুত্রবধূর প্রতিবাদী মনোভাব দেখে বাড়ির প্রধান গেটে তালা মেরে কার্যত ঘরবন্দি হয়ে থাকেন শ্বশুর-শাশুড়ি। যদিও ঘটনার সময় অভিযুক্ত স্বামী বাড়িতে ছিলেন না বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
[ আরও পড়ুন: ‘বোতল ধরিয়ে দিলেই বুদ্ধিজীবীরা তৃণমূলের’, বিতর্কিত মন্তব্য সায়ন্তনের ]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গৃহবধূর নাম সোনিয়া বিবি (২৮)। বাড়ি নদিয়াতে। ২০১৪-র ২৯ জুন বেঙ্গালুরুতে কর্মরত মালদহের মোথাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ওয়াসিম আখতারের সঙ্গে বিয়ে হয় বান্ধবী সোনিয়ার। তাঁরা দু’জনেই বেঙ্গালুরুতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। সোনিয়ার অভিযোগ, প্রথমদিকে সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। বিয়ের পর তিনি স্বামীর সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। চার বছর পর ২০১৮ সাল নাগাদ তাঁর স্বামী ওয়াসিম হঠাৎই কাজ ছেড়ে মালদহে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। তাঁদের মধ্যে এই নিয়ে বিবাদও হয়। তার জেরে সোনিয়া নদিয়ায় বাপেরবাড়িতে এসে থাকতে শুরু করেন।
অভিযোগ, তিনি বাবার বাড়িতে চলে আসার পরে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা, এমনকী স্বামীও তাঁর কোনও খোঁজ নেননি। তারপর তিনি শ্বশুরবাড়িতে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু সেই সময় তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই বধূর অভিযোগ, কিছুদিন আগে তিনি জানতে পারেন, স্বামী ওয়াসিম আখতার দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি নদিয়া থেকে মালদহের মোথাবাড়ি গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে ছুটে আসেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন। তাঁর মুখের উপর গেট বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর বাধ্য হয়ে তিনি মোথাবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, পুলিশকে সব কিছু জানানোর পরেও কোনও লাভ হয়নি। কোনও সাহায্য মেলেনি। তাই স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে আটকাতে এবং স্বামীকে ফিরে পেতে শ্বশুরবাড়ির সামনে ধরনায় বসেন তিনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো ক্ষুব্ধ গ্রামের মানুষ। তাঁরা জানিয়েছেন, সোনিয়া যে কাজ করছেন, তা একদম সঠিক। তাঁরাও ওই গৃহবধূর পাশে আছেন। কোনও মতেই এক স্ত্রী থাকতে তাঁরা আর কোনও বিবাহ মানবেন না।
[ আরও পড়ুন: বছর খানেক পর নতুন ঠিকানায় ছোট্ট রূপসা, চোখের জলে বিদায় নার্সদের ]
এদিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বাড়িতে গেলে ওয়াসিমের বাবা গোলাম মোস্তাফা গেট পর্যন্ত খোলেননি। গেটের ওপ্রান্ত থেকে গোলাম মোস্তাফার সাফ কথা, তাঁর পক্ষে ওই মেয়েকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া সম্ভব নয়। মোথাবাড়ি থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই মহিলাকে ধরনা থেকে উঠে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনা করে এবং আইনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.