ছবি: ফাইল
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়ম কেন্দ্রের। কিন্তু রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা না করেই বিদ্যুৎ আইনে বদল আনার জন্য কেন্দ্রের বিরোধিতা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শুক্রবার এই মর্মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) চিঠি লিখেছেন মমতা। সংশোধিত বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী। তিনি চিঠিতে জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ বিলটি জনবিরোধী, কৃষক বিরোধী এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের স্বার্থ বিরোধী। মফস্বল ও গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী উপভোক্তাদের জন্যও তা অমানবিক। তাই অবিলম্বে বিলটি প্রত্যাহারের আরজি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
চিঠিতে মমতা উল্লেখ করেছেন, আইন অনুযায়ী প্রথমে উপভোক্তাদের মোটা টাকা বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে। পরে ভরতুকির টাকা উপভোক্তারা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে (ডিটিবি) পেয়ে যাবেন। ফলে যে সমস্ত উপভোক্তা সময়ে বিল মেটাতে পারবেন না, তাঁদের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হতে পারে। উল্লেখ্য, এই বিলের বিরোধিতা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। প্রসঙ্গত, এই আইন সংশোধনের বিরোধিতা করে জুনের শুরুতে দেশজুড়ে কালা দিবস পালন করেছে বিদ্যুৎকর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের ১৪টি সংগঠনের যৌথ কমিটি। মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, দেশের যে সমস্ত মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই তাঁদের সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো আদৌ সফল হবে কি না।
প্রস্তাবিত বিলে শুল্ক নির্ধারণের জন্য কেন্দ্রের গঠিত সংস্থাকে ক্ষমতা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সব ক্ষমতা রাজ্যের থেকে কেন্দ্রের হাতে চলে যাবে। বিদ্যুতের মাশুল কেন্দ্র একতরফা ভাবে ঠিক করবে তা মানতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী। সেকথাই তিনি চিঠিতে লিখেছেন। বিদ্যুৎ পরিবহণ ও সংবহন এবং বণ্টন সংক্রান্ত আইনি বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য ইলেকট্রিসিটি কনট্র্যাক্ট এনফোর্সমেন্ট অথরিটি (ECEA) নামে একটি সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। মমতা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে চিঠিতে লিখেছেন, বিবাদ মেটাতে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন নামে দু’টি সংস্থা রয়েছে। আরও একটি সংস্থা গঠনের প্রয়োজন নেই।
তাছাড়া, কেন্দ্রের প্রস্তাবিত নতুন সংস্থায় রাজ্যগুলির কোনও প্রতিনিধিত্ব থাকবে না। যা খুবই আশ্চর্যের মনে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি লিখেছেন, ECEA গঠনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সমস্ত ক্ষমতা খর্ব করতে চায়। একে কেন্দ্রের অসাধু উদ্দেশ্যের ইঙ্গিত বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমন ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী মনে করছেন মমতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.