ছবি: প্রতীকী
ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জরানোর শাস্তিস্বরূপ মধ্যযুগীয় বর্বরতায় ছবি দেখল নানুর। বিবস্ত্র করে গোটা গ্রাম ঘোরানো হল এক বধূকে। সেই সঙ্গে বেধড়ক মারধরও করা হয়েছে তাঁকে। আতঙ্ক ঘরছাড়া তিনি। বর্তমানে থানায় ঠাঁই হয়েছে নিগৃহীতার।
ঘটনার সূত্রপাত বেশ কয়েকবছর আগে। স্বামী, সন্তানদের নিয়ে নানুর থানা এলাকায় থাকতেন ওই মহিলা। জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই বধূ। এরপর স্বামী ও দুই সন্তানকে রেখে প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি ছাড়েন তিনি। বছর খানেক সেই যুবকের সঙ্গেই ছিলেন তিনি। এরপর ফের গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। নতুন করে শুরু হয় সংসার। সেই থেকে স্বাভাবিক ছন্দেই চলছিল সবকিছু। সমস্যা শুরু হয় কিছুদিন আগে। পুনরায় এলাকার এক যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে শুরু করে ওই মহিলার। সেই সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই কানাঘুষো শুরু হয় গ্রামে। এরপরই আয়োজন করা হয় সালিশি সভার। অভিযোগ, সেই সালিশি সভায় বধূকে বিবস্ত্র করে মারধরের নিদান দেওয়া হয়।
নিদান মেনে মহিলাকে মারধর শুরু করেন গ্রামের বাসিন্দারা। কার্যত বিবস্ত্র করে তাঁকে ঘোরানো হয় গোটা গ্রাম। কোনওক্রমে পালিয়ে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন ওই বধূ। এরপর খবর পেয়ে নানুর থানার পুলিশ গিয়ে নির্যাতিতাতে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বর্তমানে খুঁজুটিপাড়া পুলিশ ক্যাম্পে রাখা হয়েছে ওই মহিলাকে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত হলেও ঘরে ফিরলে ফের আক্রমণের আশঙ্কা করেছন বধূ। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এই ধরণের বর্বরতার ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শিউড়ে উঠছেন সকলে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা বিষয়টি তাঁরা জানতে পেরেছেন। দ্রুতই ঘটনার তদন্ত শুরু হবে। অভিযু্ক্তরা শাস্তি পাবে। তবে নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যানি। মহিলার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.