রাহুল চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ: রাহুলের মঞ্চে অভিষেক হল মিছিলের। রাজনীতির ময়দানে এখানে পা রাখেননি। লন্ডনে পড়াশোনা করেন। বেশিরভাগ সময় থাকেন দেশের বাইরে। তবে, আপাতত পড়াশোনায় বিরাম। মায়ের সমর্থনে রায়গঞ্জে এসেছেন ভোট চাইতে। পারিবারিক সূত্রে রাজনীতির সঙ্গে টুকটাক পরিচয়। এর আগে মায়ের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে দেখা গিয়েছে প্রিয়দীপ দাশমুন্সিকে। এবার পুরোদস্তুর নেতার মতো বক্তব্য রাখলেন মিছিল।
[আরও পড়ুন: ক্ষমতায় এলে রাফালে দুর্নীতির তদন্ত হবে, করণদিঘির সভায় ঘোষণা রাহুল গান্ধীর]
জীবনের প্রথম রাজনৈতিক বক্তব্য। তাও, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধীর সভামঞ্চে। তাই, কিছুটা অতিরিক্ত চাপ থাকাটাই হয়তো স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু প্রিয়দীপ সেই চাপ সামলালেন পুরোদস্তুর রাজনীতিকের মতোই। তাঁর শরীরি ভাষা, চোস্ত বাচনভঙ্গি আর কথার প্যাঁচ যেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস সমর্থকদের বুঝিয়ে দিল আগামী দিনে তাদের নেতা হয়ে ওঠার সমস্ত রসদ রয়েছে মিছিলের মধ্যে।
বক্তব্য ছিল ৭ মিনিটের। কিন্তু এই সাত মিনিটের বক্তব্য পুরোপুরি রাজনৈতিক নয়, তবুও প্রতিটি কথাই যেন ইঙ্গিতবাহী। প্রথমে বক্তব্য শুরু করলেন হিন্দিতে। কেননা, নরেন্দ্র মোদিকে তিনি বুঝিয়ে দিতে চান, তাঁকে ভোট না দেওয়ার কারণ। বললেন, “নরেন্দ্র মোদি আমার মতো যুবকদের জন্য কিছু করেননি। আমরা কেউ ১৫ লক্ষ টাকা পাইনি। সেই পনেরো লক্ষ টাকা অনিল আম্বানিদের পকেটে ঢুকিয়েছেন। ওদের পকেটে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঢুকিয়েছেন মোদি”। এভাবে শুরুটা করে একে একে নোটবন্দি, জিএসটি, কৃষক সমস্যা সবকটি ইস্যুতেই মোদিকে বিঁধলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ছেলে।
[আরও পড়ুন: ‘ভোটে জেতার জন্য আরএসএসের সাহায্য নিচ্ছে কংগ্রেস’, তোপ মমতার]
মমতাকে কেন ভোট দেবেন না সেটাও বললেন মিছিল। বললেন, ” আমার বাবা যখন অসুস্থ হন, তখন আমার বয়স মাত্র ৯ বছর। সেসময় আমার মা’কে দুদিক সামলাতে হত। একদিকে, আমার পড়াশোনা অন্যদিকে বাবার চিকিৎসা। এর মধ্যেই ২০১৪ সালে ওরা আমাদের পরিবারে ভাঙন ধরিয়েছে। আমার কাকাকে মায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছে। এই তৃণমূলই রায়গঞ্জে আমার বাবার স্বপ্নের এইমস তৈরি করতে দেননি।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসলে প্রিয়-পুত্র সুকৌশলে বাবা প্রিয়রঞ্জনের আবেগটা একটু উসকে দেওয়ার চেষ্টা করলেন। এবারই ভোটার তালিকায় নাম উঠেছে মিছিলের। প্রথমবার ভোটটি মাকেই দেবেন, সেকথা জনসভায় জানালেন প্রিয়দীপ। সেই সঙ্গে রায়গঞ্জবাসীকে তাঁর অনুরোধ, “আমার বাবাকে সমর্থন করুন, আর আমার বাবাকে সমর্থন করার জন্য আপনাদের ভোটটা আমার মাকে দিন।”