Advertisement
Advertisement

Breaking News

করোনা ভাইরাস

ভাগ্য ফেরাতে দিল্লি গিয়ে লকডাউনে বন্দি, অনাহারে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন উস্তির দিনমজুর

লকডাউনের পর কাজ হারিয়ে অনাহারে দিন কাটছিল বলে দাবি পরিবারের।

Youth from S24 Parganas died in Delhi after having no food due to lockdown

ছবি : প্রতীকী

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 4, 2020 7:45 pm
  • Updated:April 4, 2020 9:16 pm

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ। বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। যানবাহন বন্ধ, তাই ফেরার পথও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। শেষপর্যন্ত দিল্লিতে পড়ে থেকে, অনাহারে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তির এক যুবকের। পরিবারের অভিযোগ অন্তত এমনই। ছেলের মৃত্যু সংবাদ পৌঁছতেই কান্নার রোল পরিবারে। প্রিয়জনকে শেষ দেখাটুকুও দেখতে পেলেন না, এই আক্ষেপ শোকের আবহকে আরও ভারী করে তুলেছে যেন।

s24 dead family

Advertisement

উস্তি থানার হটুগঞ্জের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা বছর সাতাশের মনিরুল পাইক। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং ছোট্ট মেয়েকে নিয়েই থাকতেন তিনি। পরিবারে আর্থিক অনটন মেটাতে মাস দেড়েক আগে দিল্লিতে দিনমজুরের কাজে যান মনিরুল। কাজও ভালই চলছিল। দিনমজুরির টাকার একটা অংশ তিনি পাঠাতেন তাঁর উস্তির বাড়িতে। আর সেই পাঠানো সামান্য টাকাতেই মোটামুটি চলছিল সংসার। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করেই পাইক পরিবারে ফের প্রকট হতে থাকে অভাব। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মনিরুল টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেন। দিল্লি থেকে ফোনে বাড়িতে তিনি জানান, করোনা সংক্রমণের কারণে তাঁর কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে যে ফিরবেন, তারও উপায় নেই। কারণ – লকডাউন। গাড়িঘোড়া সবই বন্ধ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ছেলের জন্মদিনের জন্য সঞ্চিত অর্থ ত্রাণ তহবিলে দান, নজির শিলিগুড়ির দম্পতির]

মনিরুলের বাবা মহ: নজরুল পাইক জানান, দিন দু’য়েক আগে দিল্লি থেকে তাঁরা ফোনে জানতে পারেন তাঁদের ছেলে প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ভরতি করা হয়েছে দিল্লির গ্রিন পার্কের কাছে একটি হাসপাতালে। মনিরুলের সঙ্গে থাকা এক শ্রমিকই ফোনে সে খবর তাঁদের জানান। ওই শ্রমিক আরও বলেন যে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের জেরে তাঁরা সকলে কাজ হারিয়েছেন। ফলে কখনও না খেয়ে, আবার কখনও আধপেটা খেয়েই থাকতে হচ্ছে। এতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মনিরুল। এই খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মনিরুলের বৃদ্ধ বাবা। পরে শুক্রবার রাতে তাঁরা ফোনে জানতে পারেন, হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে মনিরুলের।

[আরও পড়ুন: হোম কোয়ারেন্টাইনের নোটিস লাগাতে বাধা! বিতর্কের মুখে মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরি]

অথচ এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না। কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী, লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের দায়িত্ব তো সেই রাজ্যের প্রশাসনেরই। দিল্লিতে থাকা বাংলার শ্রমিকদের যাতে থাকা-খাওয়ার
সমস্যা না হয়, তা দেখার দায়িত্ব ছিল কেজরি প্রশাসনের উপর। তাহলে কেনই বা সেই সুবিধা পেলেন না উস্তির মনিরুল বা তাঁর সহকর্মীরা? প্রশ্ন উঠছেই। মনিরুলের বৃদ্ধ বাবার আরজি, বাইরের রাজ্যে
কাজে গিয়ে যে সমস্ত শ্রমিকরা লকডাউনের জেরে আটকে পড়েছেন, তাঁদের সামান্য দেখভাল যেন করে সেই রাজ্যের সরকার। তাহলে হয়ত তাঁর ছেলের মতো পরিণতি আর কারও হবে না।
মনিরুলের মৃতদেহ যাতে তাঁর উস্তির বাড়িতে আনা যায়, তার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ