সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: নাবালিকার সঙ্গে যুবকের প্রেম মানতে পারেনি পরিবার। বাড়ির মেয়েকে ওই যুবকের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে দেখেই যুবকটিকে বেধড়ক মারধর করে কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা। সেই অপমান না মানতে পেরে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন ওই যুবক। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থানার খেলারামপুর এলাকার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে উস্তির খেলারামপুরে নতুন বাড়ি তৈরি করেন পিন্টু পুরকাইত। সেই সুবাদে প্রতিবেশী শৈলেন মণ্ডলের পরিবারের সঙ্গে পিন্টুবাবুর পরিবারের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। জানা গিয়েছে, দুই পরিবারের সদস্যদের একে অপরের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াতও ছিল। সেই সুত্রেই পিন্টুবাবুর ১৪ বছরের মেয়ের সঙ্গে শৈলেনবাবুর ছেলে সুজন মণ্ডলের (১৯) প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। দিন কয়েক আগে সুজন তার প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। গ্রামে সে খবর জানাজানি হয়ে যায়। লোক মারফত পিন্টুবাবুর কানেও সে খবর পৌঁছয়।
[আরও পড়ুন : বাগবাজার ঘাট থেকে তরুণীর বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার, ট্যাটুর সূত্র ধরে তদন্তে পুলিশ]
খবর পেয়ে রেগে আগুন হয়ে যান পিন্টু্বাবু। এরপরই গত ৩০ নভেম্বর লোকজন দিয়ে তিনি সুজনকে বেধড়ক মারধর করান বলে অভিযোগ। এরপরই অপমানে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে সুজন। সেই রাতেই তাকে উদ্ধার করে ডায়মন্ডহারবার জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর আত্মীয়রা। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা।
[আরও পড়ুন : এনআরসি আতঙ্কে ফের আত্মহত্যা, উদ্ধার লোকসংগীত শিল্পীর ঝুলন্ত দেহ]
এদিকে সুজনের শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর শোনামাত্রই বাড়ি ছেড়ে পালান কিশোরীর পরিবারের লোকজন। টানা পাঁচদিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর বৃহস্পতিবার হাসপাতালেই সুজনের মৃত্যু হয়। সুজনের মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। সুজনের মৃত্যুর ঘটনায় অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির দাবি তোলেন তাঁরা। পিন্টুবাবুর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে উস্তি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সুজনের মৃত্যুতে তাঁর পরিবার ও এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।