দীপাঞ্জন মণ্ডল, নয়াদিল্লি: রাজনীতির কারবারীরা তাঁদের নিয়ে বিস্তর ঘুঁটি সাজিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা নিজেরা রাজনীতি থেকে শতহস্ত দূরেই থাকছেন, অন্তত থাকতে চাইছেন। দিল্লি বিধানসভার ভোটের ফলাফলের দিন তাই প্রতিবাদের জ্বলন্ত ক্ষেত্র শাহিনবাগ একেবারে নিশ্চুপ। কে জিতলেন, কে-ই বা হারলেন, সেসব নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ আন্দোলনকারীরা। আজ সেখানে নীরব প্রতিবাদ। তাই মুখে কালো কাপড় বেঁধে, হাতে পোস্টার নিয়ে মঞ্চে হাজির তাঁরা। আজ তুলনায় শাহিনবাগে ভিড়ও কম।
ওখলা বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এই শাহিনবাগ। CAA-NRC’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমে দেশের মানচিত্রে নিজের নাম তুলে ধরেছে রাজধানীর এই স্থানটি। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহারের জোরদার দাবিতে গত দেড় মাস ধরে চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। যা নিয়ে রাজনীতিও হয়েছে বিস্তর। শাহিনবাগে সশরীরে হাজির হয়ে কেউ আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তো কেউ আবার তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ করেছে প্রতিবাদের এই ধরনকে। দিল্লি বিধানসভার ভোটে অন্যতম ফ্যাক্টর ছিল, শাহিনবাগের CAA বিরোধী আন্দোলন। ভোটে আন্দোলনের কেমন প্রভাব পড়ে, সেদিকে নজর ছিল রাজনীতিক থেকে আমজনতা – সকলেরই।
[আরও পড়ুন: দেশজুড়ে বোরখা নিষিদ্ধ করার দাবিতে সরব উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী, বিতর্ক তুঙ্গে]
প্রভাব অবশ্যই পড়ল। কিন্তু তা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাইলেন না কোনও আন্দোলনকারী। সকলেই এই নীতিতে একমত যে বিধানসভা ভোটে ফলাফলের অঙ্ক নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা নেই। তাঁদের আন্দোলনের মূল কেন্দ্রে শুধু সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। দাবি একটাই, সেই আইনটি প্রত্যাহার। আজকের দিনেও তাঁরা অন্য কোনও কিছুর দিকে তাকাবেন না, অন্য কিছু নিয়ে ভাববেন না। বরং মুখ খুলতে যাতে না হয়, তার জন্য আন্দোলনকারীরা ঘোষণা করে দিয়েছেন ‘নীরব প্রতিবাদ’। মুখে কালো কাপড়, হাতের পোস্টারে লেখা – সাইলেন্ট প্রোটেস্ট। তুলনায় আজকের দিনে শাহিনবাগ চত্বরে ভিড়ও অনেক কম। যেখানে এতগুলো দিন ধরে আন্দোলনের চাপে রাস্তা বন্ধ, যাতায়াতে সমস্যা, প্রবেশ বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার অভিযোগ উঠছিল বারবার, আজ সেখানে বেশ ফাঁকা। অনায়াসেই ঢুকে যাওয়া যাচ্ছে আন্দোলনস্থলে।
[আরও পড়ুন: ফের কাশ্মীরে বিদেশি প্রতিনিধি দল, থাকবেন EU কূটনীতিকরাও]
আন্দোলনকারীরা না চাইলেও ভোটের ফলাফলের একটা অদৃশ্য প্রভাব পড়েছেই শাহিনবাগে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, CAA বিরোধী আন্দোলনের অর্থ কার্যত বিজেপি বিরোধিতা। গণনার সময় একাধিকবার ওখলার বিজেপি প্রার্থী ব্রহ্ম সিং এগিয়ে গেলেও শেষ হাসি হেসেছেন আপের আমানতুল্লাহ খান। অর্থাৎ বিজেপিকে সবরকমভাবে প্রত্যাখ্যান করছে শাহিনবাগ।
দেখুন ভিডিও: