BREAKING NEWS

১৩ চৈত্র  ১৪২৯  মঙ্গলবার ২৮ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মুখ খুললেন নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন

Published by: Sandipta Bhanja |    Posted: January 14, 2020 8:58 am|    Updated: January 14, 2020 12:26 pm

Amartya Sen opens up on Citizenship Amendments' row

গৌতম ব্রহ্ম: “ভারতীয় পরম্পরায় বিরোধী স্বরের গুরুত্ব স্বীকৃত। তাকে নিছক হিংসাপূর্ণ কলহ হিসাবে দেখাটা ঠিক নয়। যেমন উচিত নয়, স্রেফ বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করা। বিরোধিতা করতে গেলে শুধু হৃদয় নয়, মস্তিষ্কের ব্যবহারও প্রয়োজন। তাতে যেন যুক্তি থাকে” বক্তা অমর্ত্য সেন। সোমবার রবীন্দ্রসদনে নবনীতা দেবসেন স্মারক বক্তৃতা মঞ্চে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মুখ খুললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য।

সাম্প্রতিক ভারতীয় রাজনীতিতে বিরোধিতার ক্ষেত্র কমে আসছে বলে অভিযোগ উঠছে। সেই অভিযোগ কতটা সঠিক? দেশের শাসকদলের বিরুদ্ধে দমন পীড়নের রাস্তায় বিরুদ্ধ স্বরকে দাবিয়ে রাখার অভিযোগ বারবার তুলছে বিরোধী শিবির। ওদিকে পালটা শাসক শিবিরের বক্তব্য, এদেশে এখন শুধু বিরোধিতা করার জন্যই বিরোধিতা করা হচ্ছে। দেশকে ছাপিয়ে যাচ্ছে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ। অভিযোগ এবং পালটা অভিযোগের এই গোলাগুলির মাঝে দাঁড়িয়ে মেধা, যুক্তি ও ভারতীয় দার্শনিক পরম্পরার পতাকা তুলে ধরলেন অমর্ত্য সেন।

অমর্ত্যর পর্যবেক্ষণ, “ভারতীয় সংস্কৃতির গুরুত্ব বুঝতে গেলে বিরোধী যুক্তির উপস্থিতি সম্যকরূপে বোঝা প্রয়োজন। বিরোধী যুক্তিকে হিংসাপূর্ণ কলহ হিসাবে দেখলে ভুল হবে। রক্ষণশীলতা ও বিরোধী যুক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই পুরো ছবিটা পাওয়া যায়। নানা দিক থেকেই বিরোধী যুক্তি নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব।” বিরোধী যুক্তির সৃষ্টিময় সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে নোবেলজয়ী আরও বলেন, “বিশ্বে বিরোধী যুক্তির যে অসম্ভব মূল্য আছে তা অস্বীকার করা যায় না।”

[আরও পড়ুন: কুমারগঞ্জে ধর্ষণের প্রতিবাদে কলকাতায় লকেটের নেতৃত্বে মশাল মিছিল, আটকে দিল পুলিশ ]

প্রসঙ্গত, কথা ছিল এদিন স্মারক বক্তৃতা বিষয় হবে ‘স্বদেশ-বিদেশ’। কিন্তু শেষ মুহূর্তে  বিষয় বদলে দেন অধ্যাপক সেন। আয়োজকদের জানিয়ে দেন, তিনি বক্তব্য রাখবেন ‘বিরোধী যুক্তি’ নিয়ে। এদিন স্মারক বক্তৃতার শেষে শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। সেখানে জনৈক সুমন্ত স্যান্যাল প্রশ্ন করেন, “বিরোধী যুক্তির প্রকাশ ঘটলে তার অবদমন ঘটে কেন?” উত্তরে, অধ্যাপক সেন বলেন, “বড় রকমের ভুল যদি হচ্ছে দেখা যায়, তাহলে প্রতিবাদ অবশ্যই করতে হবে। কিন্তু তার আগে ভালভাবে বিচার করতে হবে, কী বিষয়ে প্রতিবাদ করছি। কথা বলার স্বাধীনতা কমছে কী? অন্য কিছু জানার স্বাধীনতা কমছে কী? বিরোধিতার বিষয় নিয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকলে বিরোধিতা অনেক পরিশীলিত হয়, ধারালো হয়।”

সোমবার রবীন্দ্রসদনে নবনীতা দেবসেন স্মারক বক্তৃতা মঞ্চে অমর্ত্য সেনের সঙ্গে শঙ্খ ঘোষ

সিএএ ইস্যুতে বারবার বিরোধী ঐক্য ধাক্কা খাচ্ছে। এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “বিরোধীদের মধ্যে ঐক্য থাকলে বিরোধিতা অনেক জোরালো হয়। কিন্তু তা না হলেও হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্ন নেই।” উদাহরণ হিসাবে বলেন, “ধরুন আপনাকে কেউ আক্রমণ করতে এল, আপনার হাতে বন্দুক থাকলে আপনি সহজে এর মোকাবিলা করতে পারবেন। কিন্তু যদি বন্দুক না থাকে? লড়াই কিন্তু করে যেতে হবে। কিন্তু বিরোধিতার যুক্তিটা পরিষ্কার থাকতে হবে।  বিরোধী যুক্তি নিয়ে বলতে গিয়ে এদিন অমর্ত্য সেন বারবার রবীন্দ্রনাথ ও নবনীতাদেবীর প্রসঙ্গ টেনে আনেন। জানান, নবনীতা প্রথম দিকে বাল্মীকি রামায়ণের বিরোধিতা করেননি। পরে জেনে-বুঝে করেছিলেন। সীতার দৃষ্টি দিয়ে ‘সীতায়ন’ নির্মাণের চেষ্টা করেছেন। দে’জ পাবলিশিং আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছিলেন চিন্ময় গুহ, শ্রীজাত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দে’জ-এর কর্ণধার সুধাংশু দে ও শুভঙ্কর দে।

[আরও পড়ুন: ‘আপনার নাম নিতে লজ্জা লাগে’, দিলীপের গুলি করার নিদানের পালটা দিলেন মমতা ]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে