সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরুষ বলে রুপোলি দুনিয়ার শোষণ থেকে পার পাননি নায়করা। যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন। সুযোগ হারানোর ভয়ে চুপ করেও থেকেছেন। নায়িকাদের মতোই। আর পুরুষ বলেই লজ্জায় আজও মুখ ফুটে বলতে পারেননি হেনস্তার কথা। গোপন বিড়ম্বনার গ্লানি উগড়ে দিতে পারেননি উপহাসের ভয়ে। এই প্রথম তাঁদের সেই শোষণের জ্বালা সামনে এল। তবে এক নায়িকার সৌজন্যে। মারাঠি ছবি, বলিউড এমনকী টলিউডেও পরিচিত মুখ নায়িকা রাধিকা আপ্তে সরব হলেন তাঁর বন্ধু এবং সহকর্মী অভিনেতাদের জন্য। বললেন, শুধু নায়িকারাই নন, যৌন হেনস্তা আর শোষণের শিকার হতে হয় অনেক পুরুষ অভিনেতাকেও। তাঁদের হয়রানির সুরাহাও হওয়া উচিত।
এতদিন নিজেদের অসহায়তা নিয়েই গলা ফাটিয়েছেন নায়িকারা। হলিউড তো বটেই, বলিউডেও। কাস্টিং কাউচের সামনে তাদের কী কী আপস করতে হয়েছে, কতটা বিলিয়ে দিতে হয়েছে, তা শুধু জানানইনি, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনাও দিয়েছেন। বলতে গেলে ওয়েইনস্টেইন বিতর্ক সামনে আসার পর অনেকটাই সাহসী হয়েছেন রুপোলি দুনিয়ার অভিনেত্রীরা। নিজেদের তিক্ত অভিজ্ঞতা দুনিয়ার সামনে আনার সাহস দেখিয়েছেন। তবে এই প্রথম, শুধু নিজের নয়, সহকর্মী নায়কদের শোষণ নিয়েও মুখ খুললেন কোনও নায়িকা। জানালেন, কাস্টিং কাউচের মুখে পড়তে দেখেছেন অভিনেতাকেও। দেখেছেন শোষিত হতে। নায়িকাদের চেয়ে তাঁদের অস্বস্তি কিংবা হেনস্তা কম ছিল না কখনও।
এর আগে এবিষয়ে মুখ খুলেছিলেন ইরফান খান। নিজের স্ট্রাগলিং পিরিয়ডে তাঁকে কীভাবে শোষিত হতে হয়েছিল, সেকথা এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন ইরফান খান। তবে রাধিকা মনে করেন, শুধু মুখ খুলে কোনও লাভ হবে না, অভিযোগগুলোকে খতিয়ে দেখে, সুবিচার দেওয়াটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। যদি পরিবর্তন আনতে হয়, তবে এতেই আসবে। রাধিকার কথায়, যৌন হয়রানি এবং কম্প্রোমাইজ না করলে কাজ খোয়ানোর ভয়ে বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী চুপ করে থাকেন। এই মানসিকতাতেই বদল আসা দরকার। আর সেটা তখনই হবে, যখন তাঁদের মন থেকে ভয় দূর হবে। আর এজন্য দরকার এমন কোনও প্ল্যাটফর্ম, যেখানে শিল্পী নিশ্চিন্তে নিজের সমস্যার কথা বলতে পারবেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাঁরা দুর্বলকে শোষণ করেন, তাঁদের মুখোশ খুলতে দরকার এমনই একটা ব্যবস্থা।
হলিউডে হার্ভে ওয়েনস্টেইন এবং তাঁর যৌন লালসার শিকার হওয়া একাধিক অভিনেত্রী এবং সহযোগী মুখ খোলার পর থেকেই বিনোদন দুনিয়ায় যৌন হেনস্তার বিষয়টি চর্চার শিরোনামে। স্বাভাবিক ভাবেই সেই ঢেউ আছড়ে পড়েছে আরব সাগরের পারে টিনসেল টাউনের অলিগলিতেও। স্বরা ভাস্করের মতো নবাগতা থেকে বিদ্যা বালন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো সিনিয়র অভিনেত্রীরাও ইন্ডাস্ট্রিতে কাস্টিং কাউচের অস্তিত্ব নিয়ে মুখ খোলেন। এদিকে হার্ভে ওয়েনস্টেইনের পর অন্য দুনিয়ার প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বরাও এসে পড়েছেন স্পটলাইটের তলায়, তাঁদের বিভিন্ন সহকর্মী ও সহযোগীদের যৌন হেনস্তা করার জন্যে। সেই তালিকায় নাম শোনা গিয়েছে কেভিন স্পেসি, জেমন টোব্যাক, ব্রেট র্যাটনারের মতো একাধিক মানুষের।রাধিকা আপ্তের কথায়, তিনি সামনে থেকে বহু সহঅভিনেতাকে কাজের জন্যে কম্প্রোমাইজ করতে দেখেছেন। তাঁর মতে সামনা-সামনি প্রতিবাদই পারে এই পরিস্থিতির বদল ঘটাতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.