কেমন আছেন? জিগ্যেস করতেই ঝরঝর করে হাসেন অপরাজিতা আঢ্য।
যার পরে আদতে কোনও উত্তরের দরকার হয় না। ‘বিন্দাস আছি। সামনে নতুন ছবি রিলিজ।’ তিনি যোগ করলেন। সম্প্রতি মুম্বই গিয়েছিলেন। দিনকয়েকের জন্য। সে প্রসঙ্গে জিগে্যস করতেই জানা গেল, প্রদীপ সরকারের একটা বিজ্ঞাপনের কাজ ছিল। সেটা করে ফিরলেন। তো ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’-এ আবার প্রসেনজিতের পাশে ‘মলি’র ফিরে আসা। বাক্য শেষ হতে না হতেই অপরাজিতা বললেন, “প্রসেনজিতের পাশে তো বটেই, তবে এবারে ‘রীতা’ হয়ে, মলি নয়।”
[ তনুশ্রীর মতো অভিজ্ঞতা হয়েছিল স্বপ্নারও! কোন ঘটনার কথা বললেন অভিনেত্রী? ]
মানে প্রাক্তন আবার বর্তমানে ফেরত এলেন। সবমিলিয়ে অভিনেত্রী প্রচণ্ড এক্সাইটেড এই ছবিটা নিয়ে। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনেকদিন পরে, মানে ‘ল্যাপটপ’-এর পরে অপরাজিতার এই ফিল্মের কাজটা। এবং বুম্বাদার ওয়াইফ হিসেবে এটা তাঁর সেকেন্ড ফিল্ম। তিনি মারাত্মক খুশি। তার ওপর পুজোর সময় রিলিজ। ‘ওহ্, আমাকে ডানা দিলে আমি উড়ে যাব।’ স্বভাবোচিত ভঙ্গিতে বলে উঠলেন ইন্ডাস্ট্রির ‘অপাদি’। ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’-এর ট্রেলারটা তাঁর সংলাপ দিয়েই শুরু। বলছেন- ‘শিল্পী হতে গেলে ট্যালেন্ট লাগে, আর শিল্পীর বউ হতে গেলে সাহস লাগে।’ তো সেই অভিজ্ঞতাটা কেমন ছিল ছবি করতে গিয়ে? উত্তরে অপরাজিতা বলছেন- ‘সেটা মারাত্মক অভিজ্ঞতা ছিল। কারণ সত্যি শিল্পীর বউ হতে গেলে সাহস লাগে। শিল্পীর পাশে দাঁড়াতেও সাহস লাগে। কারণ সত্যি শিল্পীর জীবন কখনও সিকিওর্ড নয়। ভীষণ ওঠানামা হয়। মারাত্মক স্যাক্রিফাইস রয়েছে। ছবিটা দেখলে বুঝবেন। ভীষণ কাছের, রক্তমাংসের চরিত্রের সঙ্গে মিল আছে।’ কণ্ঠীশিল্পীর জীবন নিয়ে এই ছবি। মাচার অভিজ্ঞতা তো অপরাজিতার-ও আছে। ‘হ্যাঁ, তবে কম আছে। এই যে মূল চরিত্রটি, সে মাচা করে। সচ্ছল, কিন্তু জীবনে যন্ত্রণা আছে। সেই কষ্টের ভাগীদার তার বউ। বউয়ের কিন্তু আফসোস নেই যে স্বামী মাচা-শিল্পী। কিন্তু শিল্পীর কষ্ট আছে। তারই এফেক্ট পড়ে সংসারের ওপরে। সেই ওঠা-পড়া, তার সঙ্গে গান, জীবনের বিভিন্ন মোড়, বিভিন্ন ঘটনা, কিছু ক্ষেত্রে ভয়াবহ তো বটেই, সব মিলিয়ে ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’। জানালেন অভিনেত্রী। এই ছবির সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি প্রসঙ্গে অপরাজিতা অকপটে বললেন, ‘আমি কৌশিক গাঙ্গুলির ছবি করতে পেরেছি, এইটা খুব বড় প্রাপ্তি, আর বুম্বাদার এগেনস্ট-এ মেজর রোল। এবং আমার মনে হয়েছে এই ছবিটা একদম অন্যরকম হবে, বাংলা ছবির ইতিহাসে থাকবে। যার একটা পার্ট হয়ে আমি রইলাম।’ ছবির একটা বড় অংশের আউটডোর শুটিং ছিল জয়সলমেঢ়ে। ওখানে তিনি প্রায় ১২ দিন ছিলেন। একটা দুর্গের মধ্যে শুটিং করছেন চারপাশে শুধু বালি। তারপর মরুভূমিতেও শুটিং ছিল। সেইসঙ্গে প্রচণ্ড গরম। মোবাইলের স্ক্রিন ফেটে যাওয়ার উপক্রম। জানা গেল উঠের পিঠে ওঠার ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বললেন, ‘আমার মনে হয়েছিল, আমার জীবনটা উটেতেই শেষ হয়ে যাবে। উট থেকে আর কোনওদিন নামতে পারব না। আমি তখন লালমোহনবাবুকে হাড়ে হাড়ে রিয়ালাইজ করেছি। শাড়ি পরে উটের পিঠে ওঠা কী জঘন্য অভিজ্ঞতা কী বলব! আর আমি যখন পিঠের ওপর, একটা বাচ্চা উট আমার ঝুলন্ত পা খেতে আসছিল।’
[ মিউজিক লঞ্চে ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’-র অদ্ভুতূড়ে অভিজ্ঞতা পরিচালকের মুখে ]
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল? একটু সিরিয়াস ভঙ্গিতে তাঁর জবাব- ‘আমার কেরিয়ারে অভিনয় আমি কৌশিকদার থেকেই শিখেছি। কৌশিকদা যখন চুটিয়ে টেলিভিশন করত, আমি অনেক কাজ করেছি। ছবি অবশ্য ‘ল্যাপটপ’-ই করেছি। অসাধারণ অভিজ্ঞতা ওটা।’
এরপর কোন ছবিতে দেখা যাবে তাঁকে? “পুজোর ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’-এর পরেই মৈনাকের ছবিটা ‘জেনারেশন আমি’ রিলিজ করবে। ওটাও অসাধারণ ছবি হয়েছে। তারপর পাভেলের ‘রসগোল্লা’ রিলিজ আছে। কৌশিকদার পরের ছবিটাও করছি। আরও দুটো ছবি আছে, করার কথা হয়েছে।” একধাক্কায় বললেন তিনি।
এবার পুজোয় অপরাজিতার আরও একটা রিলিজ আছে। ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’। অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায়। সেখানে তিনি বাইজির চরিত্রে। শুধু একটা নাচের সিকোয়েন্সে আছেন তিনি। গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স। ট্রেলারের রেসপন্স খুবই ভাল পেয়েছেন এ পর্যন্ত, জানালেন তিনি।